২৭ নভেম্বর, ২০২৪ | ১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

ঘুমধুমে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের জমি দখল নিয়ে উত্তেজনা


উখিয়ার পাশ্ববর্তী ঘুমধুম ইউনিয়নের ২৬৮নং রেজু মৌজার গর্জনবনিয়ার পূর্বে পাশের কাঠাল বনিয়ায় এলাকায় উখিয়ার উপজেলার রতœাপালং ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল কবির চৌধুরীর দীর্ঘদিনের নিজ খরিদা স্বত্ব দখলীয় জোত জমি জবর দখল করে নিয়েছে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ। বর্তমানে জবর দখলকারীরা চেয়ারম্যানের নিকট থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করছে বলে তিনি অভিযোগ। যাহা নিয়ে বর্তমানে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পাশাপাশি এঘটনার জের ধরে দীর্ঘদিনের বাঙ্গালী ও উপজাতীদের ঐতিহ্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হওয়ার আশংখা করছেন স্থানীয় বাঙ্গালী ও উপজাতীয় লোকজনেরা।
সরেজমিন গতকাল রোববার ঘটনাস্থল ঘুরে বিভিন্ন লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আজ থেকে প্রায় এক যুগ পুর্বে বিভিন্ন লোকজনের নিকট থেকে উপযুক্ত মূল্যে পাহাড়ী জমি গুলো ক্রয় করেন নুরুল কবির চৌধুরী। তাঁর নামে ২২একর রেকর্ডভুক্ত করলেও তৎসংলগ্ন বাকী আরো ২৮একর জমি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। উক্ত প্রায় ৫০ একর জমিতে ক্রয় সুত্রে মালিক নুরুল কবির চৌধুরী লেবু বাগান সৃজন করেছেন। সেখানে নিমাইচরণ চাকমা (৭০) প্রকাশ কালু নামের একজন উপজাতীয় লোক পাহারাদার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। কিন্তু বর্তমানে ওই পাহারাদার এবং জমির মালিককে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নুরুল কবির চৌধুরী।
স্বত্ব দখলীয় মালিক নুরুল কবির চৌধুরী বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের রেজু গর্জন বনিয়া এলাকার কিছু সন্ত্রাসী লোকজন আমার দখলীয় জায়গা জববদখল করার চেষ্টা করছে। এসব সন্ত্রাসীরা আমার জায়গায় না যাওয়ার জন্য আমার পাহারাদার এবং আমাকে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঠিয়ে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তাঁরা সশস্ত্র হওয়া সহজে কিছু করা যাচ্ছেনা। এদের মধ্যে অনেকে অস্ত্র মামলার সহ বিভিন্ন মামলার আসামী রয়েছে। বিশেষ করে গর্জন এলাকার মৃত কানু চাকমার ছেলে মংথি চাকমা(৩৪) নাচিং চাকমার ছেলে অংক্যচিং চাকমা(৩৮), অংক্যচিং চাকমার ছেলে পিয়ু চাকমা (৩২), মৃত-পেইগ্যা চকমার ছেলে মংক্য চাকমা (৪৫) পুলাঅংয়ের ছেলে বেইগ্যা চাকমা (২৮), অংধু অংয়ের ছেলে ছৈইপুচা(৪০), বান্ডু ছেলে কালাইয়া(২৩), বিলকধনের ছেলে কালাইয়া (২৮), চিংলাউয়ের ছেলে অংচি মং (২৬), নিলা অংয়ের ছেলে লেড়াইয়া (৩৪)সহ প্রায় ২০/২৫জন সন্ত্রাসীরা আমার জমিটি দখলের পায়তারা করছে।
পাহারাদার নিমাই চরণ চাকমা বলেন, জায়গাটি নুরুল কবির চৌধুরীর। তিনি সেখানে লেবু বাগান করেছে যাহা আমি নিজে পাহারা দিই। আমি ওখানে নিজে তাঁর জায়গায় কলা বাগান করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। যারা বর্তমানে মালিক বলে দাবী করছেন, প্রকৃত পক্ষে এদের কোন স্বত্ব নেই। স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় কারবারী উপেন্দ্র লাল কারবারী বলেন, জায়গাটি নুরুল কবির চৌধুরীর। বর্তমানে যারা জবর দখল করার চেষ্টা করছে তাদের কোন মালিকানা সেখানে নেই। আমি নিজেও এই জমি ক্রয়ের সময় স্বাক্ষী ছিলাম। এক কথায় বলতে গেলে এরা চাঁদা আদায় করার জন্য এগুলো করছে। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মংবা অং চাকমা (৬০), যুবলীগের সভাপতি ডাঃ মোকতার আহমদ (৩৮), আওয়ামীলীগ নেতা লাল মোহাম্মদ(৪৫), সাবেক ইউপি সদস্য ফরিদুল আলম বলেন, জায়গাটি নুরুল কবির চৌধুরী ক্রয় করেছে দীর্ঘদিন পুর্বে, কিন্তু বর্তমানে জায়গা-জমির দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছু অসাধু চক্রের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ওই জায়গার উপর, যার ফলে অন্যায় ভাবে দখল করার চেষ্টা চালাচ্ছে তাঁরা। আমরা বলতে চাই এই ঘটনার জের ধরে পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট হতে পারে। যেহেতু এসব পাহাড়ী লোকজন জমির মালিক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল কবির চৌধুরীর বাড়ীর সামনে দিয়ে প্রতিনিয়ত যাওয়া-আশা করে থাকে। এতে করে চেয়ারম্যানের আত্মীয়স্বজন ও অনুসারিরা বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘঠাইতে পারে। সচিন্দ্র লাল কারবারী বলেন, আমি নিজেই জমিটি নুরুল কবির চৌধুরীকে ক্রয় করে দিয়েছি। এবং বর্তমানে ২২একর জমি তাঁর নামে রেকর্ড হয়েছে। উশৃংখল কিছু উপজাতীয় লোকজন অন্যায় ভাবে জায়গাটি দখল করে চাঁদা আদায় করার চেষ্টা করছে।
৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কেমরাউ চাকমা বলেন, যে সমস্ত লোকজন নুরুল কবির চৌধুরী জায়গাটি দখলের চেষ্টা করছে, তারা কোন মতেই ওই জায়গা দখল করে রাখতে পারবেনা, কারণ তাদের কোন স্বত্ব নেই ওই পাহাড়ি জমিতে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একে জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, আমি জমির মালিক নুরুল কবির চৌধুরীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসব বিবাদীদের আমার কার্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার নোটিশ প্রদান করেছিলাম কিন্তু আসেনি। উল্টো আমার চৌকিদারকে হুমকি দিয়েছে তাঁরা।
২৬৮নং রেজু মৌজার হেডম্যান চাটাঅং চাকমা জানান, রেকর্ড-পত্রে জায়গাটির মালিক নুরুল কবির চৌধুরী। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আমার কার্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু আসেনি। তাই আমি বাদী নুরুল কবির চৌধুরীকে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য শালিসনামা দিয়ে দিয়েছি।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।