২৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি   ●  মেরিন ড্রাইভে ইয়াবাসহ নারী আটক   ●  সড়ক দখল করে নৈরাজ্য সৃষ্টি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে কক্সবাজারে আ.লীগের ৯১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

ঘুমধুম রেজু গর্জনবনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেহাল অবস্থা

SAMSUNG CAMERA PICTURES

উখিয়ার পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন ঘুমধুমের নৃ-তাত্ত্বিক হতদরিদ্র জনগোষ্ঠি অধ্যুষিত রেজু গর্জনবনিয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অনিয়ন, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার রোষানলে পড়ে এ শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গোয়ালঘরে পরিণত হয়েছে। ১৯৯২ সালে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলেও সু-নজর পড়েনি জনপ্রতিনিধি অথবা সরকারী-বেসরকারী কোন কর্তাব্যক্তির। ২০১৩ সালের সরকার সারাদেশের ন্যায় এ বিদ্যালয়টি দ্বিতীয় ধাপে জাতীয়করণ ঘোষনা করলেও শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত না করায় তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না। এনিয়ে স্থানীয় অভিভাবক মহলের মাঝে বিরাজ করছে প্রচন্ড ক্ষোভ ও চাপা উত্তেজনা। তাদের দাবী শিক্ষকেরা বেতন ভাতা না পেলে মানসম্মত পাঠদানে তারা নিরুৎসাহ হয়ে পড়বে।
সুত্রে জানা গেছে, বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দীর্ঘ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকার ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারী ঢাকায় অনুষ্ঠিত্বব্য শিক্ষক সমাবেশ থেকে দেশে ২৯ হাজার বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে তিন ধাপে জাতীয়করণের ঘোষনা দেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে প্রথম ধাপের প্রায় ২৬ হাজার ৯শত বেসরকারী রেজিষ্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। বাদবাকী স্কুল গুলোর মধ্যে দ্বিতীয় ধাপে মানসম্মত ক্যাটাগরি অনুসারে ২০১৩ সালের জুলাইতে এবং তৃতীয় ধাপে ২০১৪ সালে জানুয়ারী থেকে সমস্ত বেসরকারী, এনজিও পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয় করণের আওতায় আনা হয়। সরকারী বিধি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপে উক্ত বিদ্যালয়টি উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটি সব কিছু যাচাই-বাছাই করে কর্মরত ৪জন শিক্ষক যথাক্রমে প্রধান শিক্ষক ছৈয়দ হামজা, সহকারী শিক্ষক শফিউল ইসলাম, সিরাজুল হক, বুলবুল আকতারের নাম প্রস্তাব আকারে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির নিকট প্রেরণ করিলে জেলা টাস্কফোর্স কমিটি ওই প্রস্তাবটি গ্রহন করে রেজুলেশন আকারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন।
রেজু গর্জনবনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিউল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ ঘোষণার পর থেকে সভাপতি উপেন্দ্র লাল তংচংগ্যা তার একান্ত আপনজন প্রধান শিক্ষক ছৈয়দ হামজা ব্যতিত ৩জন সহকারী শিক্ষকদের নিকট থেকে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। দরিদ্র শিক্ষকেরা ওই টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ষড়যন্ত্রের শুরু হয়। এ সময় থেকে দীর্ঘ ৯/১০ বছর ধরে কর্মরত ৩জন নিয়মিত শিক্ষককে বাদ দেওয়ার জন্য সভাপতি উঠেপড়ে লেগে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নামে-বেনামে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে আসছে। তার এ মিথ্যা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়টিতে এশাধিকবার সরেজমিন তদন্ত করে জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। এসব তদন্ত প্রতিবেদনে সভাপতি উপেন্দ্র লাল তংচংগ্যার অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা উঠে আসে। এছাড়াও উক্ত সভাপতি তার ভাতিজা উকচাইন চাকমাকে উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য ও সাবেক  ইউপি মেম্বার ফরিদুল আলম বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তার কারণে এ শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অঢ়লাবস্থার কারণ হয়ে স্থানীয় প্রশাসনের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তিনি সহ ম্যানেজিং কমিটির অপরাপর সদস্যরা তার এ অপকর্মের প্রতি ধিক্কার জানান।
গত ২৮ ফেব্র“য়ারী পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করে। এসময় তিনি স্কুলের দ্রুত উন্নয়নের জন্য পার্বত্য বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন। চেয়ারম্যান ক্য শ্লৈলা তাৎক্ষণিক ভাবে  স্কুল পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান তোফাইল আহমদ এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু আহমদ। এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সভাপতি অভিযুক্ত উপেন্দ্র লাল তংচংগ্যা তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন।  বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছৈয়দ হামজা বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ির শিক্ষা কর্মকর্তার তদন্তে যে চার জন শিক্ষকের নাম মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছে আমি ওই সব শিক্ষকদের যথাযথ নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার দাবী জানাচ্ছি। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু আহমেদ জানান, যারা মূলত বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ কর্মরত রয়েছে উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটি তাদের নাম পাঠিয়েছে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।