কক্সবাজারের চকরিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে পৌরশহরের বাণিজ্যিক জনপদ চিরিঙ্গা-সোসাইটি এলাকার ফুটপাত থেকে শতাধিক অবৈধ ভাসমান দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কতৃপক্ষ যৌথভাবে এ উচ্ছেদ অভিযানে নামে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম। এসময় চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহিরুল ইসলাম খান ও পৌরসভার সচিব মাসউদ মোরশেদ, পৌরসভার প্যানেল মেয়র বশিরুল আইয়ুব, কাউন্সিলর মকছুদুল হক মধু ও মুজিবুল হক মুজিব ও পৌরসভার বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, চকরিয়া পৌরশহরের বাণিজ্যিক বিপনী বিতান সমুহের বেচাকেনাকে ঘিরে দীর্ঘ বছর ধরে শহরের ফুটপাত দখলে করে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয় ভাসমান দোকান। ক্ষেত্র-বিশেষে বিপনী বিতান মালিকরা মাসিকহারে টাকা নিয়ে এসব দোকান বসাতে সুযোগ দেয়। এ অবস্থার কারনে ১৯৯৪ সালে চকরিয়া পৌরসভা প্রতিষ্টার পর থেকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশের ফুটপাত দখল করে প্রতিযোগিতা মুলকভাবে চলছে ফুটপাত বাণিজ্য। বর্তমানে শহরের ফুটপাতে দুই থেকে তিনশতাধিক ভাসমান দোকান চালু রয়েছে। পাশাপাশি এখনো অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে অন্তত ১০-১২টি ছোট-বড় পরিবহন কাউন্টার। ফলে ভাসমান দোকান ও অবৈধ পরিবহন কাউন্টারের কারনে শহরের বাণিজ্যক জনপদ বর্তমানে ভয়াবহ যানজটের নগরীতে পরিণত হয়েছে।
চকরিয়া ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তারা অভিযোগ তুলেছেন, মার্কেটের সামনে ফুটপাত দখল করে ভাসমান দোকান ও অবৈধ পরিবহন কাউন্টার গুলো বসানোর কারনে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে ক্রেতা সাধারণ। এমনকি দুর্ভোগের কবল থেকে নিস্তার পাচ্ছেনা পথচারী, ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজ ও মাদরাসাগামী শিক্ষার্থীসহ সর্বস্থরের জনগন।
জানতে চাইলে চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, পৌরশহরের যানজট নিরশন করতে ইতোমধ্যে অনেকবার অভিযান পরিচালনা করেছে প্রশাসন। ভাসমান দোকান ও পরিবহন কাউন্টার গুলোকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে তাদেরকে বারবার তাগাদা দেয়া হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা তা আমলে না নেয়ায় সর্বশেষ গতমাসে উপজেলা পরিষদের আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। তিনি বলেন, সভার সিদ্বান্ত মোতাবেক ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নিজেদের উদ্যোগে শহর থেকে সব ধরণের ভাসমান দোকান ও কাউন্টার গুলো সরিয়ে নিয়ে পৌর বাস টার্মিনাল এবং জমজম হাসপাতালের পাশে ময়লার ডিপো এলাকায় চলে যাওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা প্রশাসনের ওই আদেশ পালনে ব্যর্থ হওয়ায় গতকাল বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত শহরে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে।
পৌরসভার সচিব মাস-উদ মোর্শেদ বলেন, বুধবার ইউএনও’র নেতৃত্বে অভিযানে শহর থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে শতাধিক ভাসমান দোকান। তবে অভিযানের সময় অনেকে নিজেদের উদ্যোগে তাঁদের আসবাবপত্র ও মালামাল সরিয়ে নিয়েছেন। বেলা ১১টার মধ্যে শহরে যানজট বলতে কিছুই ছিলনা, পরিস্কার হয়ে যায় ফুটপাত। তিনি বলেন, জনসাধারণের চলাচল নির্বিঘœ করতে শহরের ছোট টমটম ইবাইক গাড়ি গুলোকে শৃঙ্খলার মধ্যে নেয়া হয়েছে।
অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বলেন, উপজেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভার সিদ্বান্ত মোতাবেক শহরের ফুটপাত দখলমুক্ত করার জন্য প্রথমে পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি ও শহরের গুরুত্ব পয়েন্টে মাইকিং করা হয়। তিনি বলেন, এরপর কিছু কিছু ভাসমান দোকান ফুটপাত নিজেরা সরিয়ে নিলেও বেশিরভাগ দোকান বহাল তবিয়তে থাকায় বুধবার অভিযান চালিয়ে এসব ভাসমান দোকান উচ্ছেদ করা হয়। #
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।