চকরিয়া উপজেলা ভূমি অফিসে আগত সেবা গ্রহিতা লোকজনকে হয়রাণি থেকে রক্ষা করতে অবশেষে দালালমুক্ত করার জন্যই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন নবাগত উপজেলা সহকারি কমিশনার মো.দিদারুল আলম। ফেব্রুয়ারী মাসের শুরুতে তিনি উপজেলা ভুমি অফিসে সংযুক্ত হয়েছেন। তারপর পরই তিনি উপজেলা ভুমি অফিস এবং তার অধীন ইউনিয়ন ভূমি অফিস সমূহকে দালালমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন।
ঘোষনা অনুযারী নবাগত সহকারি কমিশনার ইতোমধ্যে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে পরিচয়পত্র বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছেন। পাশাপাশি অফিসে আগত সেবা গ্রহিতা লোকজনকে সরকারি পরিসেবা নিতে করণীয় সর্ম্পকে অবগত করতে অফিসের দেয়ালে ভূমি সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরে দেয়ালিকা লিখে দিয়েছেন। সেখানে তিনি লেখেন
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো.দিদারুল আলম বলেন, ফেব্রুয়ারী মাসে তিনি চকরিয়া অফিসে যোগদানের পর ভূমি অফিসের গেইটের ভেতর অফিস চলাকালীন সময়ে অবস্থান করা দালালদের বের করে দিয়ে প্রথম কাজটি করেন। তারপর অফিসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে হুশিয়ার করে দেন যাতে উপজেলা ও ইউনিয়ন ভুমি অফিস গুলোতে এখন থেকে কোন দালাল ঢুকতে পারবেনা। তিনি বলেন, এজন্য ইতোমধ্যে উপজেলা ভুমি অফিসে দালালমুক্ত করতে অফিসের দেয়ালে লিখে দেয়া হয়েছে ‘দালাল থেকে দুরে থাকুন, নিজের কাজ নিজে করুন’। আবার সেবা গ্রহিতাদের জন্য সচেতনতামূলক দেয়ালিকা লেখা হয়েছে ‘আপনার ভূমি উন্নয়ন কর নিয়মিত পরিশোধ করুন’ ‘জমি কেনার পর মিউটেশন, জটিলতা হবে নিরসন’ ইত্যাদি। যাতে অফিসে আগত সেবা প্রত্যাশীরা এসে দালালের খপ্পরে না পড়ে।
অপরদিকে সেবা প্রাপ্তি ক্ষেত্রে ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সনাক্ত করতে সেজন্য ঘোষণা মোতাবেক সোমবার সকালে উপজেলা ভূমি অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস গুলোর সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিচয়পত্র তাদের হাতে তুলে দেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) মো.দিদারুল আলম।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিআইবি’র এরিয়া ম্যানেজার মো. জসিম উদ্দিন, ভূমি অফিসের কানুনগো শান্তি জীবন চাকমা, নাজির তপন কান্তি পাল, চিরিংগা ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদ, পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন, কাকারা ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মো.ইছমত আলী, হারবাং ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা নুর ছোবহান ও অফিসের অপরাপর কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
পরিচয়পত্র বিতরণ অনুষ্টানে সহকারি কমিশনার মো. দিদারুল আলম বলেন, ভূমি অফিসে সেবা গ্রহীতারা দালালের খপ্পরে পড়ে মোটা অংকের টাকায় ভূমি বিষয়ক সেবা নিয়ে থাকে, যে কারণে মানুষের মনে ভূমি অফিস সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই আমি প্রথমেই আমার অফিসকে দালালমুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এজন্য সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাঝে পরিচয় পত্র দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সেবা প্রত্যাশীরা যাতে সেবা নিতে এসে হয়রানী ও দুর্নীতির শিকার না হয় সেজন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এজন্য টিআইবি ভূমি অফিসকে বিভিন্ন সহযোগিতা প্রদানে সম্মত হয়েছে। সাধারণ মানুষ সেবা নিতে এসে সরাসরি সহকারি কমিশনারের সাথে যাতে দেখা করতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে উপজেলা সনাক সভাপতি ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এখন থেকে টিআইবি’র সহায়তায় সনাক চকরিয়া ভূমি খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। ইতোমধ্যে সহকারি কমিশনার তার অফিসকে দালালমুক্ত করতে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে, যা সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে। ভূমি অফিসের হয়রানীর কথা বহুদিনের। নবাগত সহকারি কমিশনারের নেতৃত্ব ভূমি খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে এটা আমাদের প্রত্যাশা।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।