১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ২ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৩ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬


চকরিয়া হাসপাতাল সড়কে চিকিৎসার নামে প্রতারণার ফাঁদ

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হাসপাতাল সড়কে ডাক্তার দেখানো নিয়ে রোগীরা ভোগান্তিতে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। প্রতিনিয়ত প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে অনেক রোগী। হাতুড়ে ডাক্তার ও নিন্ম দক্ষতা সম্পন্ন ডাক্তার কর্তৃক এসব কর্মকান্ড চলে আসছে।
গ্রামের পল্লী চিকিৎসক থেকে ব্যার্থ হওয়া অধিকাংশ রোগী উন্নত চিকিৎসা নিতে আসেন চিরিংগা পৌরশহরে। জটিল রোগের চিকিৎসা পেতে আসা এই রোগীরা পড়ছে দালালের খপ্পরে। চিকিৎসা নিতে আসা অনেক রোগীরা জানেনা তার রোগের চিকিৎসায় কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যেতে হবে বা ওই রোগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কোনটি! এই অজ্ঞতার সুযোগ গুলো কাজে লাগিয়ে শারিরীক ও আর্থিক প্রতিনিয়ত নিঃস্ব করে দেওয়া হচ্ছে তাদের।
সরেজমিনে জানা যায় চকরিয়া হাসপাতাল সড়কে বিকেলে কয়েকজন এমবিএস ডাক্তার প্রাইভেট মিনি ক্লিনিক ও ল্যাব হাউজে রোগী দেখেন। তবে সন্দেহ জনক কিছু নামধারী ডাক্তার আয়ের ফাঁদ পেতে বসেছে বিভিন্ন ফার্মেসির পার্শ্ববর্তী কক্ষে। ওই ডাক্তারদের মধ্যে অনেকে সারাদিন, অনেকে আবার খন্ডকালীন রোগী দেখেন। এছাড়াও প্রতি জন ডাক্তারের পেছনে রয়েছে একাধিক দালাল। বহিরাগত কোন রোগি হাসপাতাল কিংবা দক্ষতা সম্পন্ন ডাক্তারের কাছে আসলে দালালের কাছ থেকে রেহাই পেতে মুশকিল হয়ে যায়।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে কয়েকজন ডাক্তারের নাম ভেসে আসলেও ঘটনার অস্বীকার করেন তারা। বিকেল সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর পার্শ্ববর্তী প্রাইভেট চেম্বারেও একই চিত্র লক্ষ্য করা যায়। এভাবে নিন্ম যোগ্যতা ও হাতুড়ে ডাক্তারের লেলিয়ে দেওয়া দালাল কর্তৃক রোগী প্রতারিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
এ ব্যাপারে অবসর প্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডাঃ মাহাবুবুল আলম প্রিয় চট্টগ্রামকে জানান, একমাত্র আইন’ই পারে এসব সমস্যা সমাধান করতে। দীর্ঘ সময় ধরে অনিয়মগুলো চলে আসলেও আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে আসছে না। আপনারা যদি বিষয়গুলো প্রতিরোধে এগিয়ে আসেন বা প্রশাসন সূ-নজর দেয় তাহলেই গ্রাম থেকে আগত অহরহ রোগীরা প্রতারনার হাত থেকে বাঁচতে পারে বলেন। চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুস সালাম বলেন ‘তীব্র ও জটিল রোগ নিয়ে গ্রাম থেকে আসা রোগীরা ওসব ছলচাতুরির মাধ্যমে প্রতারনার স্বীকার হচ্ছে। ইতিপূর্বে এর বিরুদ্ধে আইন শৃংখলা বাহিনী কর্তৃক অভিযান পরিচালনা করলে তারা চেম্বারের পেছন দিকে বা ভিন্ন পথে পালিয়ে যায়। তাই প্রশাসন যদি চুতুর্দিক ঘেরাও করে অভিযান পরিচালনা করলেই হয়তো তাদের ধরা পড়বে।’
স্থানীয়রা জানান গ্রাম থেকে কতিপয় ডাক্তারদের ধরে এনে একটি চক্র তাদের ফার্মেসী পরিচালনা করে ফায়দা লুটছে। ডিগ্রী ভর্তি নজরকাড়া সাইনবোর্ড মনোমুগ্ধকর ভাষায় দুরদুরান্ত থেকে আগত রোগীরা প্রতারনার যাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে। মানুষের জীবন নিয়ে প্রতারনাকারী চকরিয়া হাসপাতালের নিকটবর্তী ওসব ফাঁদগুলো বন্ধ করতে প্রশাসনের জোরালো হস্তক্ষেপ কামনা করেন চকরিয়ার সচেতন মহল।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।