২৪ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি   ●  মেরিন ড্রাইভে ইয়াবাসহ নারী আটক   ●  সড়ক দখল করে নৈরাজ্য সৃষ্টি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে কক্সবাজারে আ.লীগের ৯১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

চকরিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা মিল্টনের প্রশ্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে কেন ১ ভোট পেলাম!

 


২৮ ডিসেম্বর অনুষ্টিত কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে চকরিয়া উপজেলার ৭নং ওয়ার্ডে জেলা আওয়ামীলীগের ঘোষিত সদস্য প্রার্থী আওয়ামীলীগ নেতা মো.ওয়ালিদ মিল্টন কেন একটি ভোট পেলেন তার বিশদ বর্ণনা জনমনে খোলাসা করেছেন। নির্বাচনে তিনি সরকারী দলের প্রার্থী হওয়ার পরও কেন একটি ভোট পেয়েছেন তা নিয়ে নিজের মাঝেও কৌতুলের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌরসভার নামার চিরিঙ্গাস্থ নিজ বাসভবনে অনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন লাভ, সদস্য প্রার্থী হওয়া, নির্বাচনী প্রচারনায় দলের নেতাকর্মীদের অসহযোগিতা ও সর্বপুরি কি কারনে তার পরাজয় এ নিয়ে বিস্তারিত বলেছেন।
চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি মো.ওয়ালিদ মিল্টন বলেন, সপ্তম শ্রেনীতে লেখাপড়া করার শুরুতেই আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করি। সেই থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আর্দশে দেশরত্ম শেখ হাসিরার নেতৃত্বে প্রতি আস্থা ও বিশ^াস রেখে আওয়ামী রাজনীতির সাথে আছি। চট্টগ্রাম মহানগর ও কলেজ ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আওয়ামী রাজনীতিতে আমি জীবনের ২৯টি বছর সময় দিয়েছি। ৯০ সালের গণ আন্দোলনসহ প্রতিহিংসার রাজনীতির কারনে একাধিক মিথ্যা মামলার হুলিয়া নিয়ে আমি ১১বছর ফেরার জীবন কাটিয়েছি। আমি সেই সময় থেকে ছিলাম চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী। এখনো তার নেতৃত্বে অবিচল আছি।
তিনি বলেন, রাজনীীত ও জীবিকার প্রয়োজনে আমি ও আমার বড়ভাই বর্তমান জেলা আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক খালেদ মোহাম্মদ মিথুন চট্টগ্রামে ছিলাম। আমার মতো খালেদ মিথুনও ছাত্রবস্থা থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল ছাত্রলীগের আহবায়ক ছিলেন। পরে তিনি ব্যবসার পাশাপাশি সব সময় দলের জন্য কাজ করেছেন। দলের নানা কর্মসুচীতে তিনি সাধ্য মতো সহযোগিতা করেছেন। বিশেষ করে তিনি ২০০০ সালে চকরিয়া উপজেলা ও কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। এরপর থেকে এখনো তিনি আওয়ামীলীগের পতাকা তলে আবদ্ধ রয়েছেন।
ওয়ালিদ মিল্টন বলেন, ২০১২ সালের শেষ দিকে চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্টিত হয়। এরপর কিছুদিন আগে পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধনের টানে আমি চট্টগ্রাম থেকে গ্রামের বাড়ি চকরিয়ায় চলে আসি। পরে পৌরসভা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের পর আমি নেতাকর্মীদের অকুন্ঠ সমর্থনে সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হই। সেই থেকে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এরই মধ্যে ২০১৬ সালে পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা হলে আমি দলের অন্য ত্যাগী এবং পরীক্ষিত নেতাদের সাথে মেয়র পদে দলের মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করি। গণভবনে নাম পাঠালেও দলের সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে মনোনয়ন দেন আলমগীর চৌধুরীকে। সভানেত্রীর এই সিদ্বান্ততে স্বাগত জানিয়ে আমি মেয়র প্রার্থী আলমগীর চৌধুরীর পক্ষে মাঠে কাজ করেছি। নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্র পাহারা দিয়েছি। কিন্তু আমি যখন জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হলাম, দলের মনোনয়ন পেলাম তখন তো কেউ আমার পাশে ছিলনা, খবরও নেয়নি।
তিনি বলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সম্মানিত নেতৃবৃন্দ চকরিয়া উপজেলার ৭নম্বর ওয়ার্ডে আমাকে সদস্য প্রার্থী ঘোষনা করেছেন। কিন্তু দলের সিদ্বান্ত অমান্য করে যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে নিবারনে কোন ধরণের চেষ্টা করেনি। আমি ওইসময় জেলা আওয়ামীলীগের সম্মানিত নেতৃবৃন্দকে বারবার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করেছি। এমনকি দলের প্রার্থী হিসেবে আমার জন্য একটি দিন গনসংযোগ করতেও আসেনি জেলা আওয়ামীলীগের কোন সদস্য। ওয়ালিদ মিল্টন বলেন, জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ নিশ্চয় চকরিয়ার ৭নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী ঘরনার সকল জনপ্রতিনিধি ( ভোটার) ও নেতাকর্মীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন আমার পক্ষে কাজ করার জন্য। তাঁরা কাজ করলে আমার বিজয় অবশ্যই সুনিশ্চিত ছিল। তবে ধারনা করা হচ্ছে, এখানেও জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ সেই ধরণের কোন নির্দেশনা দেয়নি তাদেরকে। দলীয়ভাবে সেই ধরণের নির্দেশনা দেয়া হলে আমি অবশ্যই অন্তত ১৯জন দলের পদপদবী ধারী জনপ্রতিনিধির ভোট পেতাম। কিন্তু তাঁরা তো আমাকে ভোট দেয়নি। তাঁরা আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে অসহযোগিতা করেছেন।
ওয়ালিদ মিল্টন বলেন, আমাকে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে ভোট দেয়নি ১৯জন পদপদবী ধারী ভোটারের মধ্যে রয়েছে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ জাফর আলম, নারী ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়া বেগম শম্পা, পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম, চিরিঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি আলহাজ জসীম উদ্দিন, কাকারা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত ওসমান, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও ২নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেজাউল করিম, পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও পৌর ৩নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি বশিরুল আইয়ুব, পৌরসভার ৪৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী রাজিয়া সুলতানা খুকুমনি, পৌরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন, পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম, চিরিঙ্গা ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ও উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সালাহ উদ্দিন, একই ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, কাকারা ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ও উপজেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিকলীগের যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক এনাম, একই ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার যুবলীগ নেতা আবদুল মান্নান, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম খোকন, সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম কাজল, যুবলীগ নেতা ওই ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জাহেদ সিকদার।
আক্ষেপের সুরে ওয়ালিদ মিল্টন বলেন, আমি প্রতীক বরাদ্ধের পর থেকে নির্বাচনী মাঠে ছিলাম। দলের কোন নেতাকর্মী আমার সাথে ছিলনা। বেশির ভাগ নেতাকর্মী ছিল বিত্তশালী ও প্রতাপশালী প্রার্থীদের নিয়ে। আমি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের সালাম নিয়ে ভোটারদের কাছে গিয়েছিলাম বারবার। ওইসময় আমার সাথে সার্বক্ষনিক দলের প্রার্থী হিসেবে সহযোগিতা করেছে শুধুমাত্র দুইজন। তাঁরা হলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফ চৌধুরী ও যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ উদ্দিন। আমি বিত্তশালী প্রার্থীদের মতো অটেল টাকা দিতে পারেনি, কিন্তু নির্বাচনের দিন আমি লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি কবির হোসেন মেম্বারের বাড়িতে দলের নেতাকর্মীর জন্য খাবারের আয়োজন করি। কিন্তু আমার ব্যর্থতার জন্য আমি সবার আগে দলের বিশ^াসভঙ্গকারীদেরকে দায়ী করবো। এই বিচার আমি জেলা আওয়ামীলীগের কাছে , দলের সকলস্থরের নেতাকর্মীদের কাছে ও সর্বস্থরের জনগনের কাছে দিলাম। আমি অতীতেও দলের সাথে, জনগনের কল্যানে ছিলাম, এখনো আছি, ইনশাল্লাহ আগামীতে সকলের পাশে থাকবো। দেশরত্ম শেখ হাসিনার রূপগল্প বাস্তবায়নে মুজিব আর্দশের সৈনিক হিসেবে কাজ করে যাব।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।