মামলার অপরাপর আসামীরা হলেন, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র ও জেলা বিএনপির সদস্য আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম হায়দার, ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী খোকন মিয়া, পৌর বিএনপির অর্থ সম্পাদক ও বাশ সমিতির সভাপতি মো: সেলিম উদ্দিন (বর্তমানে আটক), উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা যুবদলের আহবায়ক এম মোবারক আলী, চকরিয়া পৌরসভা জামায়াতের সেক্রেটারী মো: আরিফুল কবির, মাতামুহুরী উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সোয়াইবুল ইসলাম সবুজ, চকরিয়া পৌরবিএনপির সদস্য সচিব এসএম আবুল হাসেম, ৯নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বাবুল চৌধুরী, উপজেলা যুবদলের সহসভাপতি ইব্রাহিম খলিল কাকন, চকরিয়া অঞ্চল শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সভাপতি শওকত আলম, উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি জয়নাল আবদীন, উপজেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি জুবাইর আহমদ, ৮নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বেলাল উদ্দিন, ফাঁসিয়াখালীর ঘুনিয়ার আহমদ হোসেনের পুত্র শওকত, পৌর ২নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও পৌর বিএনপির অর্থ সম্পাদক নুরুল আমিন, ফাঁসিয়াখালীর ঘুনিয়ার আলী আকবরের পুত্র এহছান ও হারুন, কাকারা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম ছাবু, জেলা যুবদলের সাবেক সমাজ কল্যাণ সম্পাদক এম আলী আকবর, জেলা শ্রমিকদলের নেতা এমরান সালেহ প্রিন্স, পৌরসভা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মনোয়ার আলম মনু, পৌরসভার বাটাখালী গ্রামের আবদুছোবহানের পুত্র মনছুর আলম, কাকারা ৬নম্বর ওয়ার্ডের ইলিয়াছের পুত্র মিজানুর রহমান, উপজেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক মুসলিম উদ্দিন মোস্তাক, পৌরসভার কাজিরপাড়া গ্রামের কলিম উল্লাহর পুত্র মো: মিজান, পৌরসভা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাজ্জাদুল ইসলাম সুমন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি এম নুরুদ্দোজা জনি, সাহারবিল পূর্বপাড়া গ্রামের মো: রিদুয়ানের পুত্র মো: ইখতিয়ার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল ইসলাম দিদার, কাজিরপাড়া গ্রামের কলিম উল্লাহর পুত্র মিনহাজ উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি নুরুল আবছার রিয়াদ, পৌরসভা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল করিম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাহাব উদ্দিন লাল্টু, পৌরসভা তরুণ প্রজন্মলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক কাইছার হামিদ, পৌরসভা যুবদল নেতা কাহারিয়াঘোনার বেলাল উদ্দিন, পৌরসভা শ্রমিকদলের যুগ্ম সম্পাদক মনজুর মোর্শেদ, পৌরসভা যুবদলের সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম, পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মনির, চকরিয়া পৌরসভা ছাত্রদলের আহবায়ক মোহাম্মদ আলী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সিনিয়র সহসভাপতি নাজেম উদ্দিন আলম সহ আরো ২০/২৫জন অজ্ঞাত আসামী রয়েছে।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘লাগাতার অবরোধ ও হরতাল চলাকালে চকরিয়ায় মহাসড়ক ছাড়াও বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ সড়কে ইতিমধ্যে একাধিক যানবাহনে ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। গোয়েন্দা তথ্যানুযায়ী বিএনপি ও জামায়াতের এসব নেতাকর্মী বড় ধরণের নাশকতার পরিকল্পনা করছে। তাই তাদের চিহ্নিত করে মামলাটি রুজু করা হয়েছে। এই মামলায় এজাহারনামীয় আসামীর সংখ্যা ৪২ জন এবং অন্যরা অজ্ঞাত। ইতিমধ্যে এই মামলার এজাহারনামীয় তিনজন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, ‘আন্দোলনের নামে চকরিয়ায় কোন অবস্থাতেই কাউকে নাশকতা চালাতে দেয়া হবেনা। যারাই আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি বিঘœ ঘটনার চেষ্টা করবে তাদেরকে কঠোরভাবে দমন করা হবে।
এদিকে চকরিয়া উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দরা এক জানিয়েছেন, ৫জানুয়ারী থেকে শুরু হওয়া অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণভাবেই পরিচালনা করে আসছেন। পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক রাখতে এখনো দলীয় কর্মসূচী পালন ছাড়া কোন ধরণের নাশকতা মূলক কর্মকান্ড পরিচালিত হয়নি। এখন অন্যায়ভাবে একটি পরিকল্পিত মামলায় নেতাকর্মীদের আসামী করায় তারা শক্তহাতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেবেন। অন্যথায় মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে সকল নেতৃবৃন্দের অব্যাহতি দেয়ার দাবী জানিয়েছেন। অপরদিকে একই দাবী করেছেন চকরিয়ার জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দরা। তারা বলেন, অবৈধ সরকারের করুণ পরিণতি আসার আগেই যেন পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানিয়েছেন, মামলার প্রধান আসামী বরইতলী ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ড সিকদারপাড়া গ্রামের মো: আলীর পুত্র তারেকুল ইসলাম (১২) স্থানীয়ভাবে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ও স্থানীয় দা বাহিনীর সদস্য। ২নম্বর আসামী বরইতলী ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ড বাংলা পাড়া এলাকার শাহাদাত হোসেনের পুত্র মো: মুজিব কোন রাজনীতি করেনা। তারা দুই জন ঘটনারদিন ৭মার্চ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চকরিয়া কলেজে আসার লক্ষ্যে বরইতলী মাদরাসা রাস্তার মাথায় গাড়ীর জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগাড়ী সোদিয়া পরিবহনের একটি বাস (নং চট্টমেট্টো- ১০-০১৩৮) গাড়ীকে সিগন্যাল দিলে গাড়িটি নাদাড়িয়ে চলে আসার চেষ্টা করে। এসময় ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়ী লক্ষ্য করে তারেক একটি পাথরের টুকরো নিক্ষোভ নিক্ষেপ করে। কিন্তু গাড়ীর কিছুদুর পেছনে থাকা সড়কে টহলরত বিজিবির একটি দল পাথর নিক্ষেপের বিষয়টি দেখে ওই দুইজন কলেজ ছাত্রকে কিছু বুঝে উঠার আগেই ধরে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ্দ করে। এদিকে সৌদিয়া পরিবহনের ওই বাসটির উল্লেখযোগ্য কোন ক্ষয়ক্ষতি না ঘটলেও রহস্যজনক কারণে থানা পুলিশ বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখ করে ৬২জনের বিরুদ্ধে এই মামলাটি রুজু করেন।
চকরিয়া পৌরসভা বিএনপির নেতৃবৃন্দরা দাবী করেছেন, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম হায়দারের নেতৃত্বে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। রাস্তা, ড্রেইন, কালভার্ট, ব্রীজ, মসজিদ, মক্তব, শ্বসান, স্কুল মাদরাসা থেকে শুরু করে সর্বত্রে তার উন্নয়নের ছোয়া লেগেছে। বর্তমানে ওয়াল্ড ব্যাংকে (বিএমডিএফ) এর অধীনে আরো ৫কোটি ৭৫লক্ষ টাকার উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। এ উন্নয়নে প্রতিপক্ষের মাথা ব্যাথা হয়ে উঠেছে, তাই মেয়র হায়দারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বর্হি:প্রকাশ স্বরূপ উক্ত মিথ্যা মামলায় তাকে সহ দলীয় নেতাকর্মীদের আসামী করা হয়েছে। তারা আরো জানান, ঘটনারদিন ২জন আসামী গ্রেফতার সংক্রান্ত বিষয়ে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় দেয়া সংবাদের সাথে সম্পূর্ণ বিপরিত হয়েছে। ঘটনারদিন অজ্ঞাত কোন আসামী পালিয়ে গেছে এধরণের কথা পযর্ন্ত বলা হয়নি। নেতাকর্মীরা কোন ধরণের ঘটনা বিহীন উক্ত মামলা প্রত্যাহারের দাবী করেন। নেতৃবৃন্দরা দাবী করেছেন, মামলার প্রধান আসামী তারেকুল ইসলাম (১২) স্থানীয়ভাবে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ও স্থানীয় দা বাহিনীর সদস্য। সে বিএনপি, ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নয় বলে দাবী করেন।
অপরদিকে চকরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজিদ হোসেন সাকিব জানান, ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়দানকারী তারেক আসলে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। সম্পৃক্ত কিংবা ছাত্রলীগের কর্মী হয়ে থাকলে তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার করা হবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।