চকরিয়ায় ভূল চিকিৎসার অভিযোগে প্রাইভেট জমজম হাসপাতালের দুইজন ডাক্তার ও চেয়ারম্যানসহ তিন পরিচালকের বিরুদ্ধে আদালতে নালিশী মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগী। রোববার উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেছেন চকরিয়া পৌরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডের পালাকাটা গ্রামের মৃত ফজল করিমের ছেলে কৃষক ওবাইদুল হাকিম।
এতে আসামি করা হয়েছে হাসপাতালের চেয়ারম্যন ও নব নিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা: শওকত ওসমান, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কবির, পরিচালক (প্রশাসন) রিয়াজ মোহাম্মদ রফিক ছিদ্দিকী এবং হাসপাতালের আরএমও ডা: ফয়েজুর রহমান ও গাইনী সার্জন ডা: নাসিমা আক্তার। আদালত এব্যাপারে তদন্ত পুর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য উপজেলা সরকারি হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আর্জিতে বাদি দাবি করেন, ২০১৬ সালের ১১ অক্টোবর দুপুর আনুমানিক দুইটার দিকে বাদি তার অসুস্থ স্ত্রী মঞ্জু আরা বেগমকে চিকিৎসার জন্য জমজম হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন। । ওইদিন কর্তব্যরত চিকিৎসক শাররীক নানা পরীক্ষার অজুহাতে তার স্ত্রীকে রাত সাড়ে সাতটা পর্যন্ত কোন চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতালে বসিয়ে রাখে। এক পর্যায়ে অনেক চাপাচাপির পর চিকিৎসা না দিয়ে উল্টো রাত আটটার দিকে জরায়ুর রক্তক্ষরন বন্ধ করার নামে অপারেশন করেন। এর কয়েকদিন পর কোন ধরণের ছাড়পত্র ছাড়াই হাসপাতাল থেকে তার স্ত্রীকে সুস্থ হয়েছে বের করে দেন।
বাদি মামলার আর্জিতে আরো বলেন, পরবর্তীতে বাড়ি নেয়ার পর তার স্ত্রীর শাররীক অবস্থা অবনতি হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে বর্তমানে তার স্ত্রী প্রায় সুস্থ হয়েছে। এ ঘটনার জেরে বাদির প্রায় ১লাখ ৫৫ হাজার টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধন হয়েছে। তারমধ্যে জমজম হাসপাতালে ৩৫ হাজার টাকা ও চমেক হাসপাতালে ১লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে বাদির।
বাদি ওবাইদুল হাকিম অভিযোগ করেছেন, সাধ্যের মধ্যে উন্নত চিকিৎসা বলে জমজম হাসপাতালের সংশ্লিষ্টরা নানাভাবে প্রচার-প্রচারণা চালালেও চিকিৎসা নিতে গিয়ে অনুভব করেছি এটি তাদের প্রতারণার একটি কৌশল মাত্র। তাঁরা মুলত চিকিৎসার নামে প্রতারণার ফাঁদ তৈরী করে সাধারণ জনগনের কাছ থেকে নানা কায়দায় অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, দুই পক্ষের হামলা ও পাল্টা হামলার পর গত আগষ্ট মাসে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে দায়িত্ব নেন প্রখ্যাত চিকিৎসক এসএস শওকত ওসমান। মুলত তিনি চট্টগ্রামে বসে জমজম হাসপাতালটি পরিচালনা করার কারনে বর্তমানে হাসপাতালের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে চিকিৎসকরাও নিজেদের ইচ্ছেমত চিকিৎসা কার্যক্রম করতে গিয়ে বড় ধরণের ক্ষতির শিকার হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা। এ অবস্থার উত্তরণে সচেতন মহল প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।