চলতি জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে অব্যাহত ভারী বর্ষণ ও মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার এলাকার প্রায় ৩লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তবে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় টানা চারদিন পর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জনসাধারণ পানিবন্দি থেকে মুক্ত হলেও দুর্ভোগ থেকে এখনো মুক্ত হতে পারেনি। অপরদিকে নদীতে ঢলের পানি প্রবাহ কমে যাওয়ার সাথে সাথে শুরু হয় মাতামুহুরী নদীতে ভাঙ্গনের মহোৎসব। প্রায় ২৮টি বসতঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীতে হেলে পড়েছে পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের গনী সিকদারপাড়া গ্রামের বিদ্যুত লাইনের ৬টি খুটি। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড ইতোমধ্যে পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ড ও ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের মধ্যবর্তী ওই এলাকায় নদীতে জরুরী প্রকল্পের আওতায় ভাঙ্গন টেকাতে স্পার নির্মাণ কাজ শুরু করেছে।
অপরদিকে চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ ইলিয়াছের তাৎক্ষনিক হস্তক্ষেপে মাতামুহুরী নদীতে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ইতোমধ্যে নদীতে বিলীন হওয়া চকরিয়া উপজেলার বন্যাদুর্গত কয়েকটি ইউনিয়নে জরুরী প্রকল্পের আওতায় শুরু হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ নদীর তীর সংরক্ষন ও বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ। সোমবার সকালে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সবিবুর রহমান ও স্থানীয় চেয়ারম্যানদের উপস্থিতিতে উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের কুরুইল্যারকুম এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজের উদ্ভোধন করেন। মঙ্গলবার বিকালে সংসদ সদস্য হাজি ইলিয়াছ উপস্থিত থেকে উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের পহঁরচাদা ও গোবিন্দপুর এলাকায় বেড়িবাঁধের সংস্কার কাজ শুরু করেছেন।
সংস্কার কাজের উদ্ভোধনকালে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সবিবুর রহমান, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আসমাউল হুসনা, জেলা পরিষদের নারী সদস্য রেহেনা খানম রাহু, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম, কোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার, বিএমচর ইউপি চেয়ারম্যান এসএম জাহাংগীর আলম, বরইতলী ইউপি চেয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদার, উপজেলা জাতীয় পাটির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মেম্বার, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, এমপির ব্যক্তিগত সহকারি মো.নাজিম উদ্দিন, জাপা নেতা বদিউল আলম, বিএমচর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
হাজি মোহাম্মদ ইলিয়াছ এমপি বলেন, মাতামুহুরী নদীর উপত্তিস্থল উজানে পার্বত্য বান্দরবানের লামা ও আলীকদম উপজেলা থেকে প্রবাহিত নদী হয়ে প্রতিবছর বর্ষাকালে পাহাড় থেকে ঢল নামে। প্রতিবছর নদীর তান্ডবের কারনে তীর এলাকার জনগনের বসতঘর ও আবাদি জমি নদীতে বিলীন হচ্ছে। অনেক পরিবার ভিটেবাড়ি হারিয়ে পথে বসেছে। তিনি বলেন, বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে জানার পর সরেজমিন এলাকা পরির্দশন করে মাতামুহুরী নদীর তান্ডব থেকে দুর্গত জনপদকে রক্ষা করতে ইতোমধ্যে জরুরী প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ শুরু করা হয়েছে। তিনি বলেন, আগামীতে যাতে মাতামুহুরী নদীর ভাঙ্গন টেকাতে টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যায় সেই ব্যাপারে পাউবো’র উধর্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।