২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি

চকরিয়ায় স্কুল শিক্ষার্থী ভাই-বোনকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্ঠা, দুইজন গ্রেপ্তার

 

চকরিয়ায় উক্তত্ত্য করায় প্রতিবাদের জেরে আদালতে মামলা দেয়ায় ক্ষিপ্ত বখাটে সন্ত্রাসীরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে গতিরোধ করে স্কুল ছাত্রী ও তার ভাইকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্ঠা করেছে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারী সকালে উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের রসিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের নিকটস্থ এলাকায় ঘটেছে এ হামলার ঘটনা। আহত সহোদর শিক্ষার্থী পাপিয়া সুলতানা প্রিয়া (১৪) ও রাকিবুল ইসলাম হৃদয়কে (১২) গুরুতর অবস্থায় উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শাররীক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদেরকে জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। আহত পাপিয়া ও হৃদয় স্থানীয় রসিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেনীর শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের মাতা চকরিয়া পৌরসভার নিজপানখালী গ্রামের মো: শাহ আলমের স্ত্রী আমেনা বেগম বাদী হয়ে ৮জনকে অভিযুক্ত করে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন।
এতে আসামী করা হয়েছে পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের নিজপানখালী গ্রামের মো. হানিফের ছেলে বখাটে মোহাম্মদ ইসলাম, ইব্রাহিম, মোহাম্মদ আলীর ছেলে এরফান, বোরহান, আরমান উদ্দিন, মৃত আবদু ছালামের ছেলে মোহাম্মদ আলী ও আবুল হোসেন, মো: হানিফের স্ত্রী জন্নাত আরা বেগমকে।
বাদির অভিযোগ আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক অভিযুক্ত ৮ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানি জারি করেন। পরে আদালতের নির্দেশে থানা পুলিশের এসআই মোস্তাক আহমদ অভিযান চালিয়ে আসামি জন্নাত আরা বেগম ও আরমান উদ্দিনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
মামলার বাদি আমেনা বেগম জানান, তার মেয়ে পাপিয়া স্থানীয় রসিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। গত একবছর ধরে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পথে প্রতিবেশি হানিফের বখাটে ছেলে ইসলাম ও তার সহযোগি মোহাম্মদ আলী ছেলে এরফান রাস্তায় গতিরোধ করে তার মেয়ে পাপিয়াকে নানাভাবে উক্তত্ত্য করে আসছিলো। সর্বশেষ গত ২১ ফেব্রুয়ারী সকালে স্কুলের ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে অভিযুক্ত বখাটেরা জড়ো করে রাস্তায় তাঁর মেয়ে পাপিয়ার গতিরোধ করে তাকে নানা ধরণের কুপ্রস্তাব দেয়। এসময় পাপিয়া ও একই শ্রেনীতে পড়–য়া ছোটভাই হৃদয় প্রতিবাদ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা দুই ভাই-বোনকে পিটিয়ে ও এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে জখম করে।
আমেনা বেগম জানান, এ ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারী চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বখাটে ইসলাম, তার সহযোগি এরফানসহ ৫জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত শুনানী শেষে অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু করতে চকরিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
আমেনা বেগমের অভিযোগ, আদালতে মামলা দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা ফের ২৬ ফেব্রুয়ারী সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে স্কুল যাওয়ার পথে তার মেয়ে পাপিয়া ও ছেলে হৃদয়কে রাস্তায় গতিরোধ করে তাদের ওপর হামলা শুরু করে। এসময় অভিযুক্ত আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো দা, কিরিচ ও চুরি দিয়ে প্রকাশ্যে রাস্তার উপর সহোদর ভাই-বোনকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে জখম করে।
ঘটনাটি দেখে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারী সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে পরিবার সদস্য ও আশাপাশের লোকজনের সহযোগিতায় আহত দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে তাদের শাররীক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাৎক্ষনিক কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করেন।
আহত শিক্ষার্থীদের মা আমেনা বেগম জানান, তার ছেলে-মেয়েকে দ্বিতীয় দফা হামলা চালিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্ঠার ঘটনায় ২৬ ফেব্রুয়ারী তিনি বাদি হয়ে চকরিয়া উপজেলা আদালতে ৮জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক বাদির অভিযোগটি আমলে নিয়ে তাৎক্ষনিক অভিযুক্ত ৮ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন। এরপর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার দুই আসামিকে গ্রেফতার করে ইতোমধ্যে জেলহাজতে প্রেরন করলেও অন্য আসামিরা এলাকায় বহাল তবিয়তে রয়েছে বলে দাবি করেন বাদি আমেনা বেগম।
মামলার বাদি আমেনা বেগম অভিযোগ করেছেন, বর্তমানে অভিযুক্ত অপরাপর আসামিরা মামলা তুলে নিতে তাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। সন্তানদের মতো তাকেও হত্যার হুমকি দিচ্ছে এলাকায় বহাল তবিয়তে থাকা অভিযুক্ত আসামিরা। তাদেরকে পেছন থেকে ইন্ধন দিচ্ছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। কথা মতো মামলা প্রত্যাহার করতে রাজি না হওয়ায় বর্তমানে এসব প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তার পরিবারকে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদে হুমকি দিচ্ছে। পাশাপাশি মামলার স্বাক্ষীদেরকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে যাতে আমাদের পক্ষে স্বাক্ষী না দেয়। অপরদিকে চিকিৎসা শেষ না হলেও অভিযুক্ত প্রভাবশালীরা শাসকদলের কতিপয় নেতাদের মাধ্যমে প্রভাব দেখিয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল কেবিন থেকে আহত শিক্ষার্থীদেরকে বের করে দিয়েছে। এ অবস্থায় তিনি পরিবার নিয়ে বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে দাবি করেছেন বাদি আমেনা বেগম।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকরিয়া থানার এসআই মাহাবুবর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে অভিযুক্ত দুই আসামিকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।