সাকিব-মুশফিকদের বিদায়ের পর সবাই তাকিয়ে ছিল মাহমুদউল্লাহর ব্যাটের দিকে। দর্শকদের অস্থার প্রতিদানও দিচ্ছিলেন এই ব্যাটসম্যান। তবে লাঞ্চ থেকে ফিরে খুব বেশি সময় উইকেটে থাকতে পারলেন না রিয়াদ। ইশান্ত শর্মার বলে ভুবনেশ্বরকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে গেলেন টাইগার এই ব্যাটসম্যান। আর মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে চাপে পড়েছে বাংলাদেশ। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৬৪ রান। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেট হারিয়ে ২২৫ রান।
এর আগে পঞ্চম দিনে তিন সেশনে ৯০ ওভার উইকেটে কাটাতে হবে। হাতে উইকেট সাতটি। এ সমীকরণ সামনে রেখে সকালে ১০/১২ মিনিটের মধ্যেই উইকেট হারিয়ে বসা। বাঁহাতি স্পিনার জাদেজার বলে আউট আশা ভরসার কেন্দ্রবিন্দু সাকিব। তার কিছুক্ষণ পর অফস্পিনারকে লংঅফের উপর দিয়ে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সীমানায় ক্যাচ আউট অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম।
প্রথম ইনিংসে সমস্ত দায় দায়ত্তি কাঁধে নিয়ে অসিম সাহস, অবিচল আস্থা –মনোযোগ মনঃসংযোগের মিশেলে সংগ্রামী শতক হাঁকানো মুশফিক মাত্র ২০ রানে আউট হওয়ার পর মনে হচ্ছিল প্রতিরোধের দেওয়াল বুঝ ভেঙ্গে পড়বে। তবে দলের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেন মাহমুদউল্লাহ। সাব্বিরকে সঙ্গে নিয়ে তুলে নেন নিজের ১৩তম অর্ধশত।
এরপর সাব্বির ২২ রান করে ইশান্ত শর্মার একটু নিচু ভেতরে ঢোকা বলে এলবিডব্লিউ হন। টাইগারদের মিডলঅর্ডার এই ব্যাটসম্যান বিদায় নিলে সবাই তাকিয়ে ছিল মাহমুদউল্লাহর ব্যাটের দিকে। তবে সবাইকে হতাশ করে ইশান্ত শর্মার বল পুল করতে গিয়ে ভুবনেশ্বরকে ক্যাচ দেন এই তারকা।
সাধারণত চতুর্থ দিনের শেষ দিকে ভারতীয় উইকেট ভেঙে যায়। প্রায় তাই হয়েছে আজ। আর এ কারণেই শেষ দিকে ব্যাটিং করার ঝুঁকি নেয়নি ভারত। ১৫৯ রানে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে কোহলিরা। আর এতে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৫৯। ওপেনিংয়ে নেমে তামিম টিকতে পেরেছিলেন মাত্র ১১ বল। অশ্বিনের বলে আম্পায়ার এলবিডব্লিউর আবেদনে সারা না দিলে ক্যাচের আবেদনে রিভিউ নেন ভারতীয় অধিনায়ক কোহলি। আর তাতে সফলও হন তিনি। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় প্যাডে লেগে কোহলির হাতে যাওয়ার আগে তামিমের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে যায়।
এরপর মুমিনুল হককে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন সৌম্য সরকার। ৬০ রানের জুটিও গড়েছিলেন। তবে জাদেজার বলে স্লিপে ধরা পড়েন তিনি। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ এক ক্যাচ ধরেন আজিঙ্কা রাহানে। আউট হওয়ার আগে ৪২ রান করেন সৌম্য সরকার। ৬৬ বল মোকাবেলা করে ৭টি চারের সাহায্যে এ ইনিংস খেলেন তিনি।
সৌম্যর বিদায়ের পর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি মুমিনুলও। সৌম্যর মতো প্রায় একই ঢংয়ে আউট হন তিনি। শুধু বদলেছে বোলার। জাদেজার বদলে অশ্বিন। রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে গেলে ব্যাটের কানা ছুঁয়ে চলে যায় রাহানের হাতে। ৬৩ বলে ৩টি চারের সাহায্যে ২৭ রান করেন মুমিনুল।
এরপর মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে বাংলাদেশ দলের হাল ধরেন সাকিব আল হাসান। দিনের শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে অপরাজিত আছেন এ দুই ব্যাটসম্যান। ইতোমধ্যে গড়েছেন ২৮ রানের জুটি। স্বভাবসুলভ ব্যাটিং করে ২১ রানে অপরাজিত আছেন সাকিব। তার সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত আছেন ৯ রানে।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ১৫৯ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। অনেকটা টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাটিং করে তারা। যদিও শুরুতেই দুটি উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তাসকিন। তবে চেতশ্বর পুজারার ৫৪ ও অধিনায়ক কোহলির ৩৮ রানে ভর করে অল্প সময়েই বড় সংগ্রহ করে তারা। এছাড়া পাঁচ নম্বরে নেমে ২৮ রান করেন রাহানে। বাংলাদেশের পক্ষে সাকিব ও তাসকিন ২টি করে উইকেট পান।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।