মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়েও মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ মঙ্গলবার সকালে এ রায় ঘোষণা করেন।
এই বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
তার বিরুদ্ধে আনা ৬ নং অভিযোগটি প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আদালতের দেওয়া সংক্ষিপ্ত রায়ে মুজাহিদের বিরুদ্ধে এ দণ্ড ঘোষণা করা হয়।
নিয়মানুযায়ী মুজাহিদের বিরুদ্ধে রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ হওয়ার পর তিনি এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করার সুযোগ পাবেন। রিভিউ নিষ্পত্তি হওয়ার পর সরকার যেকোন সময় রায় কার্যকর করতে পারবেন।
গত ২৭ মে উভয়পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষে আদালত আজ রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেছিলেন।
গত ২৭ মে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে আসামিপক্ষে এ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করেন।
এর আগে ২৬ মে মুজাহিদের পক্ষে এ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান ও খন্দকার মাহবুব হোসেন যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন।
গত ১৮ মে রাষ্ট্রপক্ষে আংশিক যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এরপর ২৫ মে আসামিপক্ষ তাদের যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন।
এর আগে গত ২৯ এপ্রিল এবং ৪, ৫, ৬ ,১৭ ও ১৮ মে আপিলে পেপারবুক পড়া শেষ করেন মুজাহিদের আইনজীবী।
২০১৩ সালের ১৭ জুলাই মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। পরে একই বছরের ১১ আগস্ট খালাস চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন মুজাহিদ।
ট্রাইব্যুনালের পুরো রায়ের বিরুদ্ধে ১১৫টি যুক্তি নিয়ে আপিল করেন মুজাহিদ। ট্রাইব্যুনাল যেসব কারণে সাজা দিয়েছেন তার আইনগত ও ঘটনাগত ভিত্তি নেই বলেও দাবি করেন তিনি। মূল আপিল ৯৫ পৃষ্ঠার, এর সঙ্গে ৩ হাজার ৮০০ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট দাখিল করা হয়েছে।
মুজাহিদের বিরুদ্ধে আনা ৭টি অভিযোগের মধ্যে ৫টি প্রমাণিত হয়েছে এবং ২টি প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেননি বলে ট্রাইব্যুনালের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১, ৩, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে এবং ২ ও ৪ নম্বর অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেননি। প্রমাণিত ১ নম্বর অভিযোগকে ৬ এর সঙ্গে সংযুক্ত করে এ দু’টি অভিযোগে সমন্বিতভাবে ও ৭ নম্বর অভিযোগে মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড, ৫ নম্বর অভিযোগে যাবজ্জীবন এবং ৩ নম্বর অভিযোগে ৫ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। প্রমাণিত না হওয়া ২ ও ৪ নম্বর অভিযোগে খালাস পেয়েছেন মুজাহিদ।
f
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।