সেন্ট মার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপ অংশে পর্যটকদের যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় সেন্ট মার্টিনে ছয় ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। নভেম্বর মাস থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকদের যাতায়াত বাড়বে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরিপত্রটি জারি করা হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কোস্টগার্ডকে।
পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, সেন্টমার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপ অংশে এখনো কিছু সামুদ্রিক প্রবাল জীবিত আছে। প্রবালগুলো সংরক্ষণের জন্য এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কোন কাজ পত্র পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ে পৌঁছেনি বলে জানিয়েছেন, কক্সবাজারের উপ-পরিচালক নাজমুল হুদা।
তিনি জানান, সেন্টমার্টিন রক্ষায় কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা শুনেছি। এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলা যাবে কাগজ পত্র পাওয়ার পর।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ কে এম রফিক আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা পর্যায়ক্রমে সেন্ট মার্টিন রক্ষায় সব ধরনের উদ্যোগ নেব। প্রাথমিকভাবে আমরা কোস্টগার্ডের মাধ্যমে সেখানে এসব কার্যক্রম বন্ধ করব। এ ছাড়া দ্বীপটির জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষায় আমরা যেসব কার্যক্রম চালাচ্ছি সেগুলো আরও জোরদার হবে।’
মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুয়ায়ী, এখন থেকে সেন্ট মার্টিনের সৈকতে কোনো ধরনের যান্ত্রিক যানবাহন যেমন মোটরসাইকেল ও ইঞ্জিনচালিত গাড়ি চালানো যাবে না। রাতে সেখানে আলো বা আগুন জ্বালানো যাবে না। রাতের বেলা কোলাহল সৃষ্টি বা উচ্চ স্বরে গানবাজনার আয়োজন করা যাবে না। টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াতকারী জাহাজে অনুমোদিত ধারণ সংখ্যার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। অননুমোদিত এবং অনুমোদনের অতিরিক্ত নির্মাণসামগ্রীর সেন্টমার্টিনে যাতায়াত বন্ধ করা হবে। পরিবেশদূষণকারী দ্রব্য যেমন পলিথিন ও প্লাস্টিকের বোতল ইত্যাদির ব্যবহার সীমিত করা হবে।
সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কোস্টগার্ডের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। পরিপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পরিবেশ ও প্রতিবেশ ধ্বংসকারী কার্যক্রমগুলো বন্ধে কোস্টগার্ডকে ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে।
পরিবেশবাদীরা বলছেন, দ্বীপটি পর্যটকদের অনিয়ন্ত্রিত কার্যক্রমের কারণে মারাত্মক ধ্বংসের মুখে রয়েছে। দেশের একমাত্র ওই প্রবাল দ্বীপের জীববৈচিত্র্য এবং বনভূমি মারাত্মক দূষণের শিকার হচ্ছে। ফলে শুধু ছেঁড়া দ্বীপ না, সেন্টমার্টিনেই পর্যটকদের যাতায়াত আপাতত নিষিদ্ধ করা উচিত।
পরিবেশ সংগঠক এনভায়রনমেন্ট পিপল এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ জানান, ছেঁড়া দ্বীপে পর্যটক নিষিদ্ধ অনেক আগেই কথার প্রয়োজন ছিল। দেরীতে হলেও তা হওয়ায় ছেঁদা দ্বীপের রক্ষায় ভূমিকা রাখবে।
ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির (ইয়েস) এর প্রধান নিবার্হী ইব্রাহিম খলিল মামুন জানান, দ্বীপ রক্ষায় কেবল ছেঁড়া দ্বীপ নয়, পুরো সেন্টমার্টিনে কিছুদিন পর্যটক নিষিদ্ধ করা জরুরি।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।