শফিক আজাদ,(চীপ রিপোর্টার): রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিও সংস্থা গুলোর বিরুদ্ধে জনবল নিয়োগে রোহিঙ্গাপ্রীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় বেকার ছেলে-মেয়েদের নিয়োগ না দিয়ে নতুন অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা যুবকদের নিয়োগ দেওয়ায় এমএসএফ এনজিও সংস্থার প্রতি স্থানীয়দের ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ নিয়োগ বাতিল না করলে স্থানীয় বেকার ছেলে/মেয়েরা উখিয়া-টেকনাফ বাচাঁও আন্দোলন কমিটির ব্যানারে বিভিন্ন কর্মসূচী ঘোষনা করবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
সম্প্রতি উখিয়া উপজেলা পরিষদ হল রুমে উখিয়ার ৮টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বর্তমানে কর্মরত এনজিওদের সাথে প্রশাসন, সুশীল সমাজ এবং সাংবাদিকদের নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছেনুয়ারা বেগম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী সহ বেশ সংখ্যক দলীয় নেতাকর্মী, প্রশাসনের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে এনজিওর কার্যক্রমের উপর বিষদ আলোচনা, নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয় বেকার ছেলে/মেয়েদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলাপ হয়।
বৈঠকে উপস্থিত নেতৃবৃন্দের একটি মাত্র দাবী ছিল স্থানীয় ছেলে/মেয়েদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এনজিওতে নিয়োগ দেওয়া। এসময় এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিরা বৈঠকে নেতৃবৃন্দদের আশ^স্থ করে বলেছিলেন আগামীতে যে সমস্ত জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে তাতে স্থানীয়দের ৮০% কোটা নির্ধারিত থাকবে। কিন্তু কথা আর কাজে মিল নেই এনজিওদের তা প্রমাণ করল এমএসএফ এনজিও সংস্থাটি। গত ২৫ অক্টোবর এনজিওটি ‘আউটরিচ ওয়ার্কার’ পদে ৫শতাধিক লোকবল নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির সুত্র ধরে প্রায় ৫হাজারের স্থানীয় শিক্ষিত বেকার ছেলে/মেয়েরা এতে আবেদন জমা দিলেও এসব আবেদন গুরুত্ব না দিয়ে পানের দোকানদারদের দিয়ে দেয় এনজিও এমএসএফ। মাত্র নাম সর্বস্ব স্থানীয় কয়েক’ জন যুবককে চাকুরীতে নিয়োগ দিয়ে সাড়ে ৩শতাধিক রোহিঙ্গা যুবকদের নিয়োগ দিয়েছে এনজিওটি। যাদের বেতন ১৫হাজারের উর্দ্ধে। এ নিয়ে উখিয়ার যুব সমাজের মাঝে সৃষ্টি হয়ে চরম ক্ষোভ।
স্থানীয় আজিজুর রহমান নামের এক যুবক জানিয়েছেন তিনি এমএসএফ’এর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পাওয়ার আবেদন করেছিলেন, কিন্তু তাকে নিয়োগ না দিয়ে রোহিঙ্গাদের ছেলেদের নিয়োগ দিয়েছে। প্রতিটি আউটরিচ ওয়ার্কারের বেতন-ভাতা ১৫হাজার টাকার বেশি। রোহিঙ্গারা এত উচ্চ বেতন চাকুরী পাওয়ায় স্থানীয়দের জন্য হুমকি হয়ে দাড়াচ্ছে বলে মনে করেছেন উখিয়া ডিগ্রী কলেজের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক তহিদুল আলম তহিদ।
এদিকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে চলে আসার সাথে সাথে এনজিওতে চাকুরী হওয়ার খবর মিয়ানমারে চলে যাওয়ায় সেদেশ থেকে দলে দলে রোহিঙ্গারা ফের পাড়ি জমাচ্ছে এদেশে। যার ফলে দিন দিন রোহিঙ্গার ভারে নুয়ে পড়ছে উখিয়া-টেকনাফ।
উখিয়া-টেকনাফ বাচাঁও আন্দোলন কমিটির আহবায়ক সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার জানান, স্থানীয় শিক্ষিক বেকার ছেলে/মেয়েদের চাকুরী না দিয়ে ‘এমএসএফ’এনজিও সংস্থাটি মারাত্মক ভূল করেছে। এই ভূলের খেসারত দিতে হবে। তিনি এসময় ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে এ নিয়োগ বাতিল না করলে উখিয়া-টেকনাফ বাচাঁও আন্দোলনের পক্ষ থেকে বেকার ছেলে/মেয়েদের নিয়ে বৃহত্তর কর্মসূচী ঘোষনা করা হবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।