বিশেষ প্রতিবেদক
জন্ম নিবন্ধনে অনিয়মে আইনী পদক্ষেপে জিরো টলারেন্সে সরকার এমনটি উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার বিভাগের রেজিষ্ট্রার জেনারেল ও অতিরিক্ত সচিব (জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ) জ্যোতির্ময় বর্মন বলেছেন, দেশে আশ্রয় পাওয়া মায়ানমার নাগরিকদের বাংলাদেশী পরিচয়ে কেউ যেন জন্ম নিবন্ধন করতে না পারে সেটা দেখার দায়িত্ব সবার। তবে এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের শতভাগ সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। পাশাপাশি নিশ্চিত করতে হবে জবাবদিহিতা। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল প্রভাব খাটাতে পারে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মায়ানমার নাগরিকদের বাংলাদেশী পরিচয়ে জন্ম নিবন্ধন প্রতিরোধ বিষয়ক কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, জনপ্রতিনিধিদের স্ব স্ব এলাকা নিজেদের পরিবারের মত। তাই নিজেদের পরিবার নিজেদেরকেই রক্ষা করতে হবে। সরকার জন্ম-মৃত্যু ও ওয়ারিশ সনদ দিতে শুধুমাত্র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতা দিয়েছে। তাই এসব কাজে সব জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। রোহিঙ্গারা যাতে বাংলাদেশী পরিচয়ে জন্মনিবন্ধন না করতে পারে সেদিকে সকলকে সজাগ থাকার অনুরোধ জানান তিনি। এসব বিষয়ে দায়িত্বহীনতার পরিচয় পাওয়া গেলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। এ ব্যাপারে সরকার সম্পূর্ণভাবে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছে।
বৃহস্পতিবার বিয়াম অডিটোরিয়ামে জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যবাসন কমিশনারের প্রতিনিধি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক, কুমিল্লা ( উপসচিব ) মো. গোলামুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান এবং সিভিল সার্জন ডা. আবদুস সালাম।
সভায় সিভিল সার্জন ডা. আবদুস সালাম বলেন, এ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের মধ্যে থেকে ২০ থেকে ২৫ হাজারের মত গর্ভবতী মায়ের সন্ধান পাওয়া গেছে। এটি অব্যহত রয়েছে। ইতিমধ্যে এদের মধ্যে ৬৭৫জন সন্তান জন্ম দিয়েছে। এসমস্ত নবজাতকদের জন্ম সনদে স্থায়ী ঠিকানার স্থলে পিতা-মাতার নামসহ মায়ানমারের গ্রাম, পাড়া ইত্যাদি উল্লেখ করা হয়েছে। পরবর্তীতে তারা যেন বাংলাদেশী হিসেবে পরিচিত হতে না পারে সেজন্যে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
পরে ডেপুটি রেজিষ্ট্রার জেনারেল মাহবুব আলমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মুক্ত আলোচনায় রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শাজাহান আলী,টেকনাফ পৌরসভার মেয়র হাজী মো: ইসলাম,রাজাপালং ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, গর্জনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ধলঘাটার ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান,জালালাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল রাশেদ, ডুলহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান মো: গিয়াস উদ্দিন, খুরুস্কুল, ভারুয়াখালী,ঈদগাঁহ ইউপি চেয়ারম্যানসহ ইউপি সচিবগণ জন্ম নিবন্ধন প্রক্রিয়া, ভুল সংশোধনীসহ এতদসংক্রান্ত বিষয়ে উদ্ভূত সমস্যাগুলো তুলে ধরেন। এ সময় রেজিষ্ট্রার জেনারেল এবং ডেপুটি রেজিষ্ট্রার জেনারেল উত্থাপিত সমস্যাগুলোর সমাধানে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপরিচালক ( উপসচিব) মো: আনোয়ারুল নাসের। তিনি পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে জন্মনিবন্ধন সংক্রান্ত আইন ও এ বিষয়ে জারীকৃত সরকারী প্রজ্ঞাপন বিস্তারিতভাবে উপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরেন।
জেলা কালচারাল অফিসার আয়াজ মাবুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন, মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম. উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান, টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন ছিদ্দিক, সহকারী কমিশনার ( ভূমি-চকরিয়া ) খোন্দকার মো. ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাত, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট এহসান মুরাদ ও মো. সাইফুল ইসলাম, সহকারী সিভিল সার্জন ডা. মহিউদ্দিন মো: আলমগীর, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানবৃন্দ, পৌরসভার মেয়রবৃন্দ, ৭১টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব ও সদস্যবৃন্দ,ইউনিয়ন ডিজিটাল ফোরাম, কক্সবাজারের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক কায়সারউদ্দিন, জেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রধান সহকারী দেলোয়ার হোসেন, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।