কক্সবাজারের ব্যস্ততম বাণিজ্যিক উপশহর ঈদগাঁও বাজারের প্রধান সড়ক ডিসি রোড়সহ আভ্যন্তরিন সড়ক -উপসড়কগুলি সামান্য বৃষ্টিতে জলকাদায় একাকার হয়ে জনদূর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। জেলার বৃহত্তম বাণিজ্যিক উপশহর হওয়া সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুনজর ও কার্যকর বাজার পরিচালনা কমিটি না থাকার কারনে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীদের । সরেজমিনে বাজারের বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলি ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও পানি নিষ্কাশনের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নেই,সড়কগুলি খানাখন্দকে ভরা,বৃষ্টি নিষ্কাশনের জন্য নামে মাত্র যে’কটি ড্রেন আছে সেগুলিও বাজারের বর্জ্য- আবর্জনায় ভরে গিয়ে পানি নিষ্কাশনের অযোগ্য হয়ে পড়েছে ।
ফলে সবমৌসুমেই দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে সাধারণ ব্যবসায়ী, পথচারী,ভোক্তাসাধারণ থেকে শুরু করে বাজার সংশ্লিষ্ট সব শ্রেণীপেশার মানুষ । জানা গেছে,বাজারের প্রধান সড়ক ডিসি রোড়,মাছবাজার,তরকারীবাজার,হাসপাতালরোড়,চাউলবাজার,কাপড়ের গলি,বাশঁঘাটারোড়, তেলীপাড়াসহ প্রতিটি জনগুরুত্বপুর্ণ এলাকার অলিগলিও চলাচলের পথ কাদাজলে টইটুম্বুর । দেখা গেছে,জলকাদার ভেতর দিয়ে পা ফেলে ফেলে পথচারী,স্কুল-কলেজ,মাদ্রাসাগামী ছাত্র-ছাত্রী, সাধারণ মানুেষর কষ্টের যাতায়াত। বিশেষ করে ঈদগাহ বাসস্টেশন থেকে ভুমি অফিস ও ঈদগাহ মেডিকেল সেন্টার রোড় পর্যন্ত সড়কের অবস্থা সবচেয়ে নাজুক। ঈদগাঁও বাজারের হাসান তারেক,আরিফ,শফিউল আলম,রাশেদুল ইসলামসহ কয়েক ব্যবসায়ী বাজারের দুর্দশা সম্পর্কে বলেন,বাজারের অবস্থা মগের মুল্লূকের চেয়েও ভয়ানক।
জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা অর্বাচীন বলে উন্নয়ন করার ক্ষমতা তাদের নেই। ঈদগাহ বাসস্টেশন থেকে বাজারের প্রতিটি অলিগলির সড়কের উভয় পাশে বেইজ লেভেল ২-৩ ফুঁট উঁচুতে অপরিকল্পিত ভবন ও দোকানপাট নির্মানের ফলে মুলসড়কটি সামান্য বৃষ্টি হলেই নালায় পরিণত হচ্ছে।
আর টেকসই ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষা মওসুমে জলকাদা,জলাবদ্ধতা,নালা-নর্দমার দুর্গন্ধ ঈদগাঁওবাজারবাসী’র যেন নিত্যসঙ্গী। জানা গেছে,বাজার ইজারাসহ অন্যান্যখাত থেকে সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করলেও উন্নয়নখাতে তার ছিঁটেফোঁটাও ব্যয় হয়না। দায়সারাগোচের কিছু ড্রেন নির্মিত হলেও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে তা পুরোপুরি অকার্যকর এবং ব্যর্থ। স্থানীয় কয়েক ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতা বলেন,
বাজারের অব্যবস্থাপনা ও জনদূর্ভোগের জন্য স্থানীয় প্রশাসন যেমন দায়িত্ব এড়াতে পারে না তেমনি বাজারের অতিলোভী ব্যবসায়ীরাও সমান দায়ী। কেননা ব্যবসায়ীদের অতিলোভীতার করাল গ্রাস থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা ড্রেন,নালা,ফুটপাত সহ সড়কের দূ,পাশ। ঈদগাহ প্রেসক্লাব ও ঈদগাঁহ মিডল কক্স ইউনাইটেড’র সভাপতি সাংবাদিক কাফি আনোয়ার জানান,বাজার নিয়ে সকলেই রাজনীতি করতে ব্যস্ত, প্রকৃত উন্নয়ন কিংবা জনদূর্ভোগ নিরসনের উদ্যোগ কারো নেই। তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন,কয়েকদিন আগে বাজারের কয়েক পরগাছা অতিলোভী চাউল ব্যবসায়ী মানবরুপী দানবের কুড়ালের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে নিশ্চিন্ন হয়ে হারিয়ে গেছে কালের সাক্ষী শতবর্ষী বটগাছ। এছাড়া ঈদগাঁও বাজারের ৬০ ভাগ ব্যবসায়ী বহিরাগত, যেনোতেনোভাবে টু’পাইস কামানোই তাদের মকসুদ। বাজার উন্নয়নের চেয়ে আত্বউন্নয়নই তাদের কাছে মূখ্য। মাছবাজারের বীভৎস অবস্থা সম্পর্কে স্কুল শিক্ষক মনছুর আলম বলেন,গলিতদুষিত, পঁচাময়লার ভাগাড় ও পুঁতিগন্ধময়,স্যাঁতসেঁতে মাছবাজারের কথা মনে পড়লে গা শিঁউরে উঠে। তাই আসন্ন বর্ষার পূর্বেই ঈদগাঁও বাজারের দূর্ভোগ লাঘবে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ঈদগাঁওবাসী।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।