কক্সবাজারসময় ডেস্কঃ আগামীকাল সোমবার ঈদুল আযহা। মুসলিম উম্মার দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব। এই দিনে যারা আল্লাহ সন্তুষ্টির জন্য পশু জবাইয়ের মাধ্যমে কোরবানির দিবে তাদের হাতে আজকের দিন ছাড়া সময় নেই। তাই শেষ মুহুর্তে কোরবানিরপশু বেচা-কেনা চলছে। জেলার ৫২টি কোরবানির পশুর হাটে চলছে জমজমাট ক্রয়-বিক্রয়। জেলার কিছু কিছু পশুর হাটে বৃষ্টির কাঁদা-পানি উপেক্ষা করেই পশুর হাটে ভিড় করছেন ক্রেতারা। অনেকে ইতোমধ্যেই কিনে নিয়ে গেছেন পছন্দের গরু-ছাগল।
হাতে আর কোন সময় না থাকায় বাজারে পশুর কোনো কমতি নেই। চাহিদা মোতাবেক পশু রয়েছে হাটে। তবে দাম এখনও চড়া বলে জানান ক্রেতারা। ৬০-৭০ হাজার টাকার কমে কোনো গরু পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে অনেকে অপেক্ষা না করে আছেন পছন্দের কোরবানির জন্য পশু কিনে নিয়ে যাচ্ছে। হাটে দেশে পালিত গরু-মহিষের পাশাপাশি বাজারে ঠাঁই হয়েছে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা অসংখ্য পশু।
কয়েকটি পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, কখনও ভারী আবার কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেও ক্রেতারা বাজারে ঘুরছেন। একটির পর একটি পছন্দের গরু দেখছেন। পছন্দ করছেন, কেউ কিনছেন আবার কেউ পছন্দের জন্য বাজারে ছুটাছুটি করছেন।
গত দু’দিনের তুলনায় হাটে ক্রেতাদের ভিড়ও কয়েকগুণ বেশি দেখা গেছে। বেচাকেনাও বেশ জমজমাট। তবে হাটগুলোতে চলছে ব্যাপারী ও ক্রেতার মধ্যে মধুর ‘দোষারোপ’। গরুর দাম নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ করছেন। ক্রেতাদের অভিযোগ- গরুর দাম তুলনামূলক বেশি চাওয়া হচ্ছে। হাটে সর্বনিম্ন ৮০ কেজি মাংস হবে এমন গরুর দামও ৬০ হাজার টাকা হাঁকা হচ্ছে। বেপারীদের দাবি, গো-খাদ্যের দাম বেশি। ফলে গরুর দামও বেশি। বর্তমানে প্রতি কেজি ভুসি ৩৭ টাকা। গমের আটার কেজি ২৫ টাকা। খুরুস্কুল রাস্তার মাথা সংলগ্ন হাটে গরু দেখতে এসছেন আওলাদ শেখ। সঙ্গে নিয়ে এসেছেন দুই ছেলে আরিফ হোসেন শেখ ও ফাহিম হোসেন শেখকে। গত দুইদিন ধরে বেশ কয়েকটি হাটে ঘুরছেন তিনি। তবে এখনও দামে-দরে মেলেনি তার। আওলাদ শেখ বলেন, বেশি চাওয়া হচ্ছে। গত কোরবানির চেয়ে গরুর দাম ৩০ শতাংশ বেশি চাওয়া হচ্ছে। দামে-দরে মিলছে না। আরও কিছু হাট দেখবো। আল্লাহ কপালে যা রাখছে, সেটাই কোরবানি দেবো। চকরিয়া ইলিশিয়া হাটেও দেশি গরুর দাম চড়া। দেড় থেকে দুই মণ মাংস পাওয়া যাবে এমন গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ হাজার টাকা। হাটে ৮০ থেকে এক লাখ টাকার গরুর চাহিদা বেশি।
জেলার সর্ববৃহৎ কোরবানির পশুর বাজার উখিয়ার মরিচ্যার হাটে এসেছেন শফিকুল ইসলাম। কোরবানির পশুর দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার বাজেট ৮০ হাজার টাকা। এই দামে পছন্দের গরু মিলছে না। গরুর দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান- বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ পশু উঠলেও এখনো বিক্রি তেমন হচ্ছে না। ক্রেতারা ঘুরে ঘুরে বাজার পরিস্থিতি দেখছেন। কেউ কেউ আবার দর-দামও কষাকষি করছেন।
জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় কোরবানি যোগ্য পশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ১ লাখ। ৫ হাজার খামারী বাজারে কোরবানি পশু তুলেছে। এবার পশু সংকট পড়ার কোন আশঙ্কা নেই। আরও জানা য়ায়, কক্সবাজার জেলার আট উপজেলায় স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে ৫২টি কোরবানির পশুর হাট নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, এবার বাজারে কোরবানীর পশুর হাটে ভাল রকমের পশু বেচা-কেনা চলছে। পশুর কোন সংকট নেই। তাদের মতে জেলার মানুষের চাহিদার চেয়ে এবারের হাটে পশুর সংখ্যা বেশী।
কক্সবাজার জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মোহাম্মদ ওয়াহিদুল আলম বলেন, বাজারে কোরবানি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য মেডিকেল টিম কাজ করেছে। এছাড়া কোরবানির বাজার গুলো পুলিশের পক্ষ থেকে জালনোট সনাক্ত করতে মেশিন বসানো হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন জানান, পশু বাজার গুলোতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতারা নিরাপদে পশু বেচা-কেনা করতে পারবেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।