২৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

জেলা ছাত্রদলের ‘বিবাহিত খুশি কমিটি’ নিয়ে তোলপাড়

Chattrodol
কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন পাওয়ার পর ছাত্র রাজনীতির চায়ের টেবিলে ঝড় উঠেছে। কোথাও কোথাও চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বাদ পড়েনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটারসহ ইন্টারনেট গণমাধ্যমেও। সমালোচনার কেন্দ্র বিন্দু সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক বিবাহিত। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রত্ব না থাকা এবং বিবাহিত হলে কোন ভাবেই ছাত্র রাজনীতি করা যাবে না। সেক্ষেত্রে জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত পুরো কমিটিই গঠনতন্ত্র বিরোধী এবং অনেকটা হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছে বলছেন রাজনৈতিক বোদ্ধারা। এদিকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে অছাত্রদের জয়জয়কার হওয়ায় তোপের মুখে পড়েছেন শীর্ষ নেতারা। অন্যদিকে ইয়াবা ব্যবসায়ে জড়িত আছেন এমন ছেলেও স্থান পাওয়ায় ভাঙনের সুর বইছে নতুন কমিটিতে। এছাড়া তৃণমূল কর্মীদের কাছ থেকে জেলার শীর্ষ নেতারা চাঁদা আদায়ের ধোঁয়া তুলে পদত্যাগ করেছে অনেকেই। অচেনা অছাত্ররা গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান পাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে কোন্দল। গঠনতন্ত্রের বাইরে গিয়ে ৪০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন নিয়েও বেকায়দায় পড়েছেন জেলা বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। সর্বপোরি নগদ ও বিকাশে অগনিত টাকা আদায়ের মাধ্যমে বিতর্কিত সৃষ্টিকারী জেলা ছাত্রদলের ‘বিবাহিত খুশি কমিটি’র অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। এমন জেলা ছাত্রদলের মন্তব্য করেছেন খোদ জেলা ছাত্রদলে স্থান পাওয়া অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের ৪০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন হয়েছে। ২৪ অক্টোবর কেন্দ্রীয় কমিটি এই অনুমোদন দেন। এই অনুমোদনের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার শহরে মোটর শোভাযাত্রায় সংবর্ধিত হন জেলা সভাপতি রাশেদুল হক রাসেল ও সাধারণ সম্পাদক মনির উদ্দিন মনির।

সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১ জুলাই জেলা ছাত্রদলের ৭ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটির অনুমোদন হয়। এই সাতজনের মধ্যে ৫ জনের ছাত্রত্ব নিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল নানান প্রশ্ন। এছাড়া আংশিক কমিটির ১ মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নিয়ম থাকলেও গঠিত হয়েছে প্রায় ২ বছর পর। প্রায় ২ বছর পর গঠিত এই কমিটি নিয়ে এখন জেলা জুড়ে চলছে তোড়পাড়।
খোদ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদুল হক রাসেলের নেই ছাত্রত্ব। নানা ঝঞ্জাল পেরিয়ে তিনি গত বছরের জুন-জুলাই মাসের দিকে বিয়েও করেছেন। এছাড়া বিবাহিত রয়েছে, সিনিয়র সহ-সভাপতি সরওয়ার রোমন, সহ-সভাপতি মো. ইলিয়াছ, সহ-সভাপতি হারুন অর রশিদ, সহ-সভাপতি রাশেদুল হক রাশেদ, যুগ্ম সম্পাদক হারুন অর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীনুল ইসলাম শাহীন, দপ্তর সম্পাদক ফয়সাল মোশারফ ফয়েজ ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক একরামুল হক। এছাড়া ২০১৫ সালের ২১ এপ্রিল ১৪শ’ ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে চট্টগ্রামে আটক হয়েছিল ছাত্রদলে স্থান পাওয়া সহ-সভাপতি আব্দুল রউফ। আটকের পর কয়েকমাস জেলও কেটেছে তিনি। মাঝে মাঝে তিনি পরিচয়ও দেন সাংবাদিক হিসেবে।

এদিকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনার পর পরেই অনেকেই পদত্যাগ করেছেন। তার মধ্যে সদ্য ঘোষিত কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আকিক মামুন, যুগ্ম সম্পাদক মো. এনাম ও রেজাউল করিম। তারা এক বিবৃতিতে জানান, জেলা ছাত্রদলের উচ্চ পদাধিকারী এক নেতা জেলা ছাত্রদলের কমিটির নামে চাঁদাবাজির মহা উৎসবে মেতে উঠেছেন। সাংগঠনিক নিয়ম ভেঙে নিজের পকেটকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। ফলে কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন টাকার অংক অনুযায়ী যা প্রিয় ছাত্রদলের ইমেজ আজ জেলা ব্যাপি সংকটে ফেলে দিয়েছেন। শুধু তাই নয় জননেতা সালাহউদ্দিন ভাইয়ের নিজ উপজেলায়ও তিনি চাঁদাবাজির লীলা খেলায় মেতে ওঠেছেন। যা ইতিমধ্যেই দলীয় সিনিয়র নেতাকর্মীরা সমালোচনা করেছেন। তারপরও ওই কথিত ছাত্রদল নেতা তার অবৈধ কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকেননি। খুব শিগগিরিই এই জেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে চাঁদাবাজ মুক্ত করার আহবান জানান তারা। এছাড়া পদত্যাগ করেন সহ-সভাপতি মো. ইলিয়াছও।

জেলা ছাত্রদলে স্থান পাওয়া এক ছাত্রনেতা বলেন, ৮১ বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু করা হয়েছে ৪০১ জন বিশিষ্ট। তাও আবার ২ বছর পর। এখন এই কমিটি নিয়ে জেলা জুড়ে হাসাহাসি চলছে। জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতা ও নীতিনির্ধারকরা পড়েছে বেকায়দায়। মানসম্মান নিয়ে টানাটানি চলছে সবর্ত্রে। সবাই বলে যাচ্ছে ‘বিবাহিত খুশি কমিটি’র অনুমোদন হয়েছে জেলা ছাত্রদলে।

এক ছাত্রনেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কাজল ভাই ( সাবেক সাংসদ লুৎফর রহমান কাজল) কোনো ছাত্রদলের নেতাকর্মীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা না জানানোর জন্য বলে দিয়েছে। তিনি খুবই অপমানিত হয়েছে ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে। সাব জানিয়ে দিয়েছে কেউ যাতে ফুল নিয়ে বিএনপি অফিস বা বাসায় না যেতে।
এ বিষয়ে জানতে জেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক মনির উদ্দিন মনিরের মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকায় কথা বলতে পারেন নি। পরে একসময় কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।