সীমান্তবর্তী উখিয়া-টেকনাফ উপজেলার উঠতি বয়সের তরুন যুবকরা রাতারাতি অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জনের প্রতিযোগীতায় নেমেছে। এ প্রতিযোগীতার মাধ্যমে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার নেশা ধরেছে এসব তরুন যুবকদের। আর হঠাৎ কোটিপতি হওয়ার সহজ মাধ্যম হিসেবে তারা বেচে নিয়েছে ইয়াবা ব্যবসাকে। আকারে ছোট,সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় ইয়াবা ব্যবসায় অত্যাধিক ঝুকে পড়েছে উখিয়া-টেকনাফের তরুনরা।
গত ৬মাসের ব্যাবধানে কক্সবাজার, ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে এ ধরণের ২ শত জনেরও বেশি টিনেজার আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে ইয়াবাসহ আটক হয়েছে। তবুও থেমে নেই ইয়াবা বানিজ্য। এ নিয়ে অসহায় অভিভাবকদের দুঃচিন্তার অন্ত নেই। কখন কার ছেলে এসব অবৈধ বানিজ্যে জড়িয়ে যাচ্ছে সে চিন্তায় দিশেহারা উখিয়া-টেকনাফের অভিভাবক মহল। ঈদকে সামনে রেখে উখিয়া-টেকনাফের ৫ শতাধিক যুবক ইয়াবা পাচারের মাধ্যমে কোটি টাকা আয় করার মিশনে নেমেেেছ বলে গোপন সূত্রে জানাগেছে। আর উখিয়া টেকনাফের এসব তরুনদের নিয়ন্ত্রন করছে ঢাকা, চট্টগ্রামের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনৈতেক নেতা ও ছাত্রনেতা।
সুত্র জানায়, শুধুমাত্র উখিয়া টেকনাফ কেন্দ্রিক চিহ্নিত কয়েকটি সিন্ডিকেট থানা পুলিশসহ আইনশৃংখা রক্ষাকারী বাহিনীকে ম্যানেজের মাধ্যমে বাঁধাহীন ভাবে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব সিন্ডিকেটের মধ্যে উখিয়ার হাজীরপাড়া এলাকার আতাউল্লা,মির আহামদ সিন্ডিকেট, জাদিমুরার হেলাল সিন্ডিকেট, হিজলিয়ার বাবুল সিন্ডিকেট,বালুখালীর এনাম,বখতিয়ার ও জাহাঙ্গীর সিন্ডিকেট, ঘিলাতলীর মুবিন সিন্ডিকেট, উখিয়ার খোকা সিন্ডিকেট প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ইয়াবা দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচারে ব্যাস্ত রয়েেেছ। এসব সিন্ডিকেট ইয়াবা পাচারে নিয়োজিত করেছে উখিয়ার উঠতি বয়সী তরুনদের। এদের মধ্যে অনেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে আটকও হয়েছে। আটককৃতদের সিংহ ভাগ বিভিন্ন কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্র এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে স¤পৃক্ত কর্মী। স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ভাবে গড়ে উঠা নানা অপরাধ চক্র মাদক ব্যবসা বিস্তারের জন্য অসহায় এসব যুবক কিশোরদের কাচা টাকার লোভ দেখিয়ে অনৈতিক ও ঝুঁকিপূর্ণ এ ধরণের মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে ফেলছে সিন্ডিকেট। এক প্রকার বেকার জীবন যাপন ও পারিবারিক অসচ্ছলতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উক্ত অপরাধী চক্র এসব যুবক কিশোরদের রাতারাতি বিশাল বিত্ত ভৈববের স্বপ্ন দেখিয়ে ইয়াবা সহ মাদক পাচারের ব্যবহার করছে বলে স্থানীয় অভিভাবকদের অভিযোগ।
উখিয়া উপজেলা সদরে প্রায় ৫০ জন, বালুখালী ঘুমধুমে ২০০ জন, থাইংখালীতে ২০ জন, হিজলিয়ায় ২০জনের মতো কোটবাজার, মরিচ্যা ও সোনার পাড়া, টেকনাফ উপজেলার জালিয়াপাড়া, হ্নীলা, রঙ্গিখালী, বটতলী, কাঞ্জরপাড়ার কয়েকশত যুবক কিশোর এ ধরণের মাদক ব্যবসায় জড়িত রয়েছে বলে সংশিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তে প্রতিটি ইয়াবা ট্যাবলেট ৪৫ থেকে ৮০ টাকায় ক্রয় করে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় পৌছে দিয়ে প্রতিটি ট্যাবলেট ২০০ থেকে ৩০০ টাকা এমনকি প্রতিপিস ৬শত টাকায়ও বিক্রি করে থাকে। মাদক ব্যবসায়ী গড় ফাদারদের ছত্র ছায়ায় স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসীগামী ও যুব শ্রেণীর জড়িয়ে পড়ায় অভিভাবকরা চরম ভাবে উদ্বিগ্ন ও আতংকিত। ইদানিং ঢাকা, চট্টগামের একশ্রেনীর রাজনৈতিক ও ছাত্রনেতা উখিয়া, টেকনাফের যুবকদের সাথে যৌথভাবে ইয়াবা পাচারে নেমেছে বলে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে। এক্ষেত্রে উক্ত প্রভাবশালীরা দামী প্রাইভেট গাড়ী ও স্মার্ট তরুনীদের মাধ্যমে ইয়াবা পাচার করছে বলে সুত্র জানায়। উখিয়া-টেকনাফের যুবকদের কাজ হলো ইয়াবার চালান ঢাকা, চট্টগ্রামের নির্ধারিত স্থানে পৌছে দেওয়া। বাকী কাজ ঢাকা, চট্টগ্রামের বড় ভাইয়েরা সামলায় বলে সুত্র জানায়।
এ ব্যাপারে উখিয়া-টেকনাফের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা বলেন, ইয়াবাসহ মাদক পাচারকারীর সংখ্যা দ্রুত আশংকা জনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে স্থানীয় লোকজন সচেতন হয়ে না উঠা পর্যন্ত তা নির্মূল করা কঠিন। মাদক পাচার এমন একটি জঘন্য অপরাধ জেনেও অনেক সময় হাতে নাতে না পাওয়ায় পুলিশ চিহ্নিত মাদক পাচারকারীদেরও আটক করতে পারেনা। তবে সামাজিক, রাজনৈতিক ও পারিবারিক ভাবে মাদক ব্যবসায় শিক্ষার্থীদের জড়িয়ে পড়া সম্পর্কে কঠোর হওয়ার আহবান জানান তিনি।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।