টেকনাফের হ্নীলায় একটি নির্মাণাধীন জামে মসজিদ নিয়ে প্রভাবশালী একটি মহল চক্রান্তের আশ্রয় নেওয়ায় নির্মাণ কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে। উক্ত মহল মসজিদের মতোয়াল্লীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করায় স্থানীয় জনমনে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,উপজেলার হ্নীলা আলী আকবর পাড়া বায়তুন নুর জামে মসজিদ নির্মাণের জন্য স্থানীয় মরহুমা লাল জানের পুত্র ছাবের আহমদ ও মৃত কাদির বকসুর মেয়ে ছেনুয়ারা আক্তার উভয়ে মিলে উক্ত মসজিদ নির্মাণের জন্য মধ্যম হ্নীলা মৌজার বিএস খতিয়ান নং-৫০৭এর বিএস দাগ ১১৮৩০,১১৮৩১ হতে ০.১৯৩৩একর জমি ৯৯৬নং দলিলমূলে মসজিদের নামে ওয়াকফ করেন এবং স্থানীয় মৃত হাজী দুদু মিয়ার পুত্র মতোয়াল্লী নুরুল আমিনকে বুঝিয়ে দেন। উক্ত মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরুর জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেন। এরই মধ্যে ছাবের আহমদের ওয়াকফকৃত জমিতে স্থানীয় প্রবাসী আব্দুল মোনাফের স্ত্রী খালেদা বেগম জবর দখলে নিতে বসত-বাড়ি নির্মাণের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। মসজিদের ঘেরা-বেড়া নির্মাণ ও স্থাপনা করতে গেলে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী মহলের ইন্দনে কতিপয় প্রশাসনিক ব্যক্তিদের ব্যবহার করে একটি মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা,পাহাড় কাটার মামলায় মসজিদ সংশ্লিষ্ট নুরুল আমিন,তার ভাগিনা সাইফুল ও মসজিদ কমিটির সদস্য ইব্রাহীমকে আসামী করে হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করে। এসব ষড়যন্ত্রকারী মহল উপরোক্ত মামলায় হয়রানি করতে ব্যর্থ হয়ে স্থানীয় মৃত রুস্তম আলীর স্ত্রী ছলেমা খাতুন ১১৪০৮বিএস খাস খতিয়ানে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে। উক্ত মহিলা বনবিভাগকে ম্যানেজ করে টিলাভূমি সমতল করছে। মসজিদ নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী মহল বনকর্মীদের সাথে যোগ-সাজশ করে উক্ত জমি মসজিদ সংশ্লিষ্টরা কাটছে মর্মে মিথ্যা তথ্য দিয়ে চলতি বছরের গত ৪ ফেব্রুয়ারী আদালতে একটি মিথ্যা বন মামলা দায়ের করে। যার নং-১১/১৭ইং। যা তদন্তাধীন রয়েছে। উপরোক্ত মামলায় মসজিদের মতোয়াল্লী নুরুল আমিনসহ ৩জনকে আসামী করে মামলা দায়েরের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় জনমনে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এই ব্যাপারে অভিযুক্ত খালেদা বেগম বলেন,ঐ মসজিদ নিয়ে আমার কোন বিরোধ নেই। উপরোক্ত দাগের জমি হতে মসজিদের দাতা ছাবের আহমদ আমাদের বিক্রি করার কথা ছিল। কিন্তু আমাদের না দিয়ে মসজিদে দান করায় আমি কোথাও যাওয়ার জায়গা না পেয়ে এখানে বসবাস করছি।
ছলেমা খাতুন বলেন,আমার ৫০বছর ধরে ভোগদখলীয় জমিতে সংস্কারের জন্য ফরেস্টারকে ম্যানেজ করে মাটি কাটছি। বনবিভাগ এখন আমার জমিতে অপর ৩জনকে মালিক সাজিয়ে মামলা করেছে। বিবাদীরা এই জমি দখলে নিলে আমার কি হবে বলে প্রশ্ন ছুড়েন?
ছাবের আহমদের বড় ভাই সাবেক চৌকিদার কবির আহমদ বলেন,আমার ভাই মসজিদ নির্মাণের জন্য ঐ জমিটি দান করেছে কিন্তু উক্ত জমিতে খালেদার কোন স্বত্ত না থাকা সত্বেও একটি কুচক্রী মহলের ইন্দনে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
মতোয়াল্লী নুরুল আমিন বলেন,আমি প্রবাস হতে দেশে আসার পর স্থানীয় জনসাধারণের নামাজ-কালাম আদায় ব্যাহত হওয়ায় ছাবের আহমদ ও ছেনুয়ারা আক্তার মসজিদ নির্মাণের জন্য উপরোক্ত জমি ওয়াকফ করেন। এলাকাবাসীর আহবানে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগের পর মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু করলে এলাকার একটি চিহ্নিত মামলাবাজ চক্র মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে মতোয়াল্লীসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে আসছে। এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছে ভূক্তভোগীরা।
স্থানীয় মেম্বার বশির আহমদ জানান,মসজিদ নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে মতোয়াল্লী নুরুল আমিন স্থানীয় চেয়ারম্যান বরাবরে নালিশ করেন। চেয়ারম্যান বিষয়টি আমাকে সমাধানের দায়িত্ব দেন কিন্তু বিবাদী খালেদা গং হাজির না হওয়ায় আমি মসজিদের মতোয়াল্লী নুরুল আমিনকে উচ্চ আদালতে আশ্রয় জন্য লিখিত কাগজ প্রদান করি।
তবে এলাকার বেশীর ভাগ জনসাধারণ এই মসজিদটি দ্রুত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উর্ধ্বতন মহলের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।