কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শীলখালী গ্রামে দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসী, ভূমিদূস্য ও মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করায় বাদী তাদের অব্যাহত হুমকীর মুখে ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগে জানা গেছে। শুধু তাই নয় সন্ত্রাসীরা তাকে ও তাঁর পরিবারকে ফাঁসাতে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছে এবং তাঁর ১৫শতক জমি দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে তিনি জানান।
অভিযোগে জানা গেছে, উক্ত এলাকার নিরীহ আবছার উদ্দীন গং ও এলাকার প্রভাবশালী ইউপি সদস্য শামসুদ্দীন গং এর মধ্যে বিগত ২বছর পূর্বে ২০শতক জমি নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে উক্ত বিরোধ সংঘর্ষে রূপ নেয়। শামসুদ্দীনের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের হাতে আবছার উদ্দীন গং এর লোকজন গুরুতর আহত হয়। এ ব্যাপারে জমি মালিক আবছারের ফুপা রাহেমা খাতু ৯জনকে আসামী করে টেকনাফ থানায় ৫৪৯নং/২০১৩মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের করার পর থেকে আবছার ও তার পরিবারের আত্মীয়স্বজনের বিরুদ্ধে লেগে থাকে শামশু ও তার লালিত সন্ত্রাসীরা। একের পর এক বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে আবছার ও তার পরিবারবর্গকে হয়রানি শুরু করে শামশু বাহিনী। এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস করছে না। আবছার ও শামশু পরস্পর চাচতো-জেটাতো ভাই।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আবছার, সাবেক মেম্বার শামশুল আলম ও তার ভাতিজা রেজাউল করিম মোটর সাইকেল যোগে সৌদি আরবে যাওয়ার উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের এক এজেন্সীতে সাড়ে ৩লাখ টাকা জমা দেওয়ার জন্য নিয়ে আসার পথিমধ্যে উখিয়ার উপকূলীয় এলাকা মনখালী বাঘঘোনা এলাকায় পৌঁছালে আগে থেকে উৎপেতে থাকা শামশুর নিকটআত্মীয় সমন্ধী রফিকের নেতৃত্বে একদল দূর্বৃর্ত্ত তাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় তারা সাড়ে ৩লাখ টাকা, আবছারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার সময় অন্যান্যরা পালাতে সক্ষম হলেও আবছার সন্ত্রাসীদের হাতে মারাত্মক জখম হয়। তার ডান হাতের কব্জী ও হাতের আঙ্গুল ভেঙ্গে যায়। সারা শরীরে রক্তাক্ত জখম হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উখিয়া হাসপাতাল ও পরে আশংকাজনক হওয়ায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় আবছার বাদী হয়ে শামশু ও তার অন্যতম সহযোগি রফিক মোজাম্মেল সহ ৭জনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় ৮৫নং/২০১৫ তারিখ ১৯/৩/১৫ দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে শুরু হয়েছে তার এবং পরিবারবর্গের উপর নানা হুমকী। এমনকি মামলা নিস্পত্তি না করলে তাকে জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
মামলার বাদী আবছার জানান, ইউপি সদস্য শামশু দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসী, ভূমিদূস্য ও মানবপাচারকারী। তার সহযোগি রফিক ও মোজাম্মেল সহ অন্যান্যরা একই অভিযোগে অভিয্ক্তু। সন্ত্রাসী রফিক ও মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় ডবল মার্ডার ১৮নং/২০০৩ অপহরণ মামলা নং-৬-১৮/১১/২০১২ সহ একাধিক মামলা রয়েছে। শামশুর বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় ভূমিদখল ও মারামারির ৫৪৯নং/২০১৩মামলা, টেকনাফ থানায় মানবপাচারের ২২নং-১০/১২/২০১১ এবং ৫৮নং-২৫/৪/২০১৩, টেকনাফ থানায় ডাকাতি ২৪নং-১৯/১০/২০১৩, কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের ৫৪নং-৪/৯/২০১৩ সহ নারী নির্যাতন, ডাকাতি, ভূমিদখল সহ একাধিক মামলা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের জানান, সন্ত্রাসী যত প্রভাবশালী ব্যক্তি হোক না কেন আইনের উর্ধ্বে নয়। অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সন্ত্রাসীদের অত্যাচার ও হুমকীতে আবছারের পরিবার এখন ঘরছাড়া প্রায়। এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।