প্রেস বিজ্ঞপ্তি :
কোস্ট ফাউন্ডেশন, সুইজারল্যন্ড ভিত্তিক সংস্থা ভাইটল ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায় কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার ১০০০ জেলে পরিবারকে সহায়তা করার লক্ষে ২ বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প বাস্থবায়নের কাজ শুরু করেছে।
তারই ধারাবাহিকতায় প্রকল্পের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বুধবার (২২ জানুযারি) টেকনাফ উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় সরকার ও প্রশাসনের সাথে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন, কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, কক্সবাজার জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক আলহাজ্ব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, টেকনাফ উপজেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ছিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, ইউএনএইচসিআর’র প্রোগ্রাম অফিসার মিজ মারজিনা খান ও কক্সবাজার জেলা প্রেসক্লাব’র সভাপতি তৌহিদ বেলাল।
কোস্ট ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, মৎস্য বিভাগের মাঠ কর্মকর্তা মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, ইউপি সদস্য মুহাম্মদ আলী ও নারী ইউপি সদস্য লায়লা বেগম, সাংবাদিক তাহের নঈম, উন্নয়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।
সভার শুরুতে নাফ নদীতে মাছ ধরা বন্ধের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ জেলেদের নিয়ে কোস্ট ফাউন্ডেশনের করা গবেষণার বিভিন্ন দিক এবং প্রকল্পের কার্ক্রক্রমের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। সভায় জানানো হয়, ২ বছর মেয়াদী এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১০০০ জেলে পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং বিকল্প আয়ের পথ তৈরিতে প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করা হবে।
সভায় হ্নীলা ইউনিয়নের জেলে প্রতিনিধি সমির দাস তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘নাফ নদীতে মাছ ধরা বন্ধের ফলে আমি বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। আমি ছেলে-মেয়েদের নিয়ে খুব কষ্টে দিন অতিবাহিত করছি। নাফ নদীতে মাছ ধরার অনুমতি দিলে আমরা আবারো ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।’
নারীনেত্রী কুলসুমা বেগম বলেন, ‘নাফ নদীতে মাছ ধরা বন্ধের পূর্বে আমাদের অবস্থা অনেক ভালো ছিল। এখন সবাই রোহিঙ্গাদের নিয়ে চিন্তা করে, কিন্তু তাদের চেয়েও এখানকার মানুষেরা খুব খারাপ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। এবিষয়ে সকলের দৃষ্টি দেওয়া উচিত।’
শহিদুল আলম বক্তব্যে বলেন, ‘কোস্ট ফাউন্ডেশন যে উদ্যোগ গ্রহন করেছে তা অত্যন্ত সময়োপযোগী। আমি তাদের এই মহতি কাজে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। আশা করবো, তারা আমাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ পরিচালনা করবে।’
তৌহিদ বেলাল তাঁর বক্তব্যে বলেন, কর্মহীন জেলেদের বোবা কান্না অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। কোস্ট ফাউন্ডেশনের গৃহীত প্রকল্পটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এই অঞ্চলের মানুষদের জন্য। অত্যন্ত সময়োপযোগী ও কল্যাণমুখি এই কার্যক্রম জেলেদের দারিদ্র্য বিমোচনে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।
মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘কোস্ট ফাউন্ডেশন উখিয়া-টেকনাফের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বিশাল ভূমিকা রাখছে। কর্মহীন জেলেদের জন্য তাদের প্রকল্প তাদের বেকারত্ব দূরীকরণে মাইলফলক হয়ে থাকবে।’
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘নাফ নদীতে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞার পর কোস্ট ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত গবেষনা পরবর্তীতে আমরা এই প্রকল্পটি পেয়েছি। আশা করছি, সঠিক উপায়ে আমরা প্রকল্পের ১০০০ উপকারভোগী নির্বাচন করতে সক্ষম হবো। এই নির্বাচন করতে গিয়ে একটি সার্ভে করা হবে। সার্ভে পরবর্তীতে তা ইউনিয়ন পর্যায়ে এবং উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হবে। আমরা আশা করবো, এই প্রক্রিয়ায় সকলেই সহযোগিতা করবেন।
শেখ এহসান উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘কোস্ট ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানাই, জেলেদের নিয়ে এমন একটি প্রকল্প শুরু করার জন্য। আমি আশা করবো- সঠিক উপায়ে প্রকৃত জেলেদের বাছাই করা হবে। এক্ষেত্রে আমার সহযোগিতা লাগলে তা করবো। তিনি বলেন, নাফ নদীতে মাছ ধরার অনুমতি ফিরিয়ে দিতে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলমান রয়েছে, আশা করছি ভালো কোন সংবাদ জেলেদের জন্য আসতে পারে।’
অনুষ্ঠানে উপজেলা পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, সমাজ ও জেলে প্রতিনিধি, নারীনেত্রী, ছাত্র প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।