নাফ নদী অতিক্রম করে অবৈধভাবে টেকনাফে প্রবেশকালে বিজিবি ও কোস্টগার্ড পৃথকভাবে ২০৩ জন মিয়ানমার নাগরিক রোহিঙ্গা মুসলমানকে আটক করে পুশব্যাক করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তম্মধ্যে ৬৭ জন শিশু, ৯১ জন নারী এবং ৪৫ জন পুরুষ। ৩৬ শিশুসহ ১২৫ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সদস্যরা। আর ৩১ জন শিশুসহ ৭৮ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে স্বদেশে ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ড বাহিনী টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মোহাম্মদ নাফিউর রহমান জানান মিয়ানমারের ফাদংচা হয়ে নাফ নদী সীমান্ত অতিক্রম করে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সাবরাং ইউনিয়নের নয়াপাড়ার সংলগ্ন ৫ নং সুইচ গেট এলাকায় নৌকা দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে ১২৫ মিয়ানমারের নাগরিককে আটক করা হয়। এদের মধ্যে ছিল ৩৬ জন শিশু, ৬১ জন নারী এবং ২৮ পুরুষ। আটক রোহিঙ্গাদের মানবিক সহযোগিতা দিয়ে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে। রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে রাত-দিন নাফনদীতে টহল দেয়া হচ্ছে।
এদিকে শুক্রবার ১৮ নভেম্বর ভোরে সীমান্তে দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে ৭৮ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে স্বদেশে ফেরত পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুজার আল জাহিদ। এর মধ্যে ছিল ৩১ জন শিশু, ৩০ জন নারী এবং ১৭ জন পুরুষ। তিনি জানান, বিজিবির সদস্যরা সীমান্তে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় রোহিঙ্গারা ঢুকতে পারছেনা। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবি সিমান্তে টহল জোরদার করেছে। এখন পর্যন্ত কোন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বিজিবির সচেতনতামূলক সভা করা হচ্ছে এবং স্থানীয় জেলেদের নাফ নদীর শূন্যরেখা অতিক্রম না করে দেশের অভ্যন্তরে মাছ ধরার পাশাপাশি রাতের বেলায় মাছ না ধরতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেকোন এলাকা দিয়ে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ চেষ্টা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে বিজিবিকে অবহিত করার জন্য বলা হচ্ছে। মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নে উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের প্রাণান্ত চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। গত তিনদিনে টেকনাফ উপজেলা বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশ চেষ্টাকালে শতাধিক রোহিঙ্গাকে বাধা প্রদান করে বিজিবি। এভাবে প্রতিদিন কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে রাতের আধাঁরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম জানান সীমান্ত এলাকার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডকে সতর্ক রাখা হয়েছে। অনুপ্রবেশের সময় প্রতিদিন রোহিঙ্গারা ধরাও পড়ছে। ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার জানিয়েছেন সিমান্তে বিজিবি সর্বোচ্চ টহল জোরদার করেছে। কোন রোহিঙ্গা যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে তার জন্য সিমান্তে কড়া নজরদারি রয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।