ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটার সাব্বির রহমান।
পাকিস্তানের দেওয়া ১৪২ রানের টার্গেটে ইনিংসের প্রথম বলেই ৬ মেরেছেন বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল। পরের ২ বলেই ফের বাউন্ডারি মেরেছেন তিনি। প্রথম ৩ বলেই ১৪ রান। পাকিস্তানকে জবাব দিতে নেমে তাই উড়ন্ত সূচনা হয়েছে বাংলাদেশের। তবে বেশি তাড়াহুড়া করতে গিযে সৌম্য সরকারকে রান আউট হয়ে ফিরতে হয়েছে প্রথম ওভারেই। ঠিক একই কারণে তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট হয়েছেন তামিম ইকবাল। সর্বশেষ আউট হয়েছেন মুশফিকুর রহিম ব্যক্তিগত ১৯ রানে। বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ছিল ৫.৪ ওভারে ৩৮ রান। তবে বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে টেনে নিচ্ছেন সাকিব আল হাসান ও সাব্বির রহমান। দু’জনের কৌশলী ব্যাটিংয়ে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি গতিতেই রান তুলছে বাংলাদেশ।
টস জিতে ব্যাটিং করা পাকিস্তান নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান সংগ্রহ করেছে। অতিথিদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেছেন ওপেনার মুক্তার আহমেদ। এ ছাড়া হারিস সোহাইল ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন। মোহাম্মদ হাফিজের ব্যাট থেকে এসেছে ২৬ রান।
বাংলাদেশের পক্ষে ২টি উইকেট নিয়েছেন এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটা পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। এ ছাড়া পেসার তাসকিন আহমেদ ও স্পিনার আরাফাত সানি একটি করে উইকেট নিয়েছেন। পাকিস্তান অপর উইকেটটি হারিয়েছে ইনিংসের শেষ বলে সোহেল তানভির রান আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে।
টস হারলেও ম্যাচের শুরুটা ভালই করেছে বাংলাদেশ। বোলিং আক্রমণে প্রথম ওভারটিই করেছেন অভিষিক্ত মুস্তাফিজুর রহমান। প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে নেমে দারুণ বল ছুঁড়েছেন তিনি। অপর প্রান্তে সাকিব আল হাসানও বল হাতে ভাল সূচনা করেছেন। চার-ছক্কার টোয়েন্টি২০ ম্যাচে প্রথম ৩ ওভারে সুবিধা করতে পারেনি পাকিস্তানীরা। ৩ ওভার শেষে পাকিস্তান বিনা উইকেটে তুলতে পেরেছিল মাত্র ৭ রান।
অভিষেক ম্যাচেই আলো ছড়িয়েছেন বাংলাদেশের পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ইনিংসের ১৭.৫ ওভারে মোহাম্মদ হাফিজকে আউট করে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় এবং বাংলাদেশের চতুর্থ সাফল্য বয়ে এনেছেন তিনি। এর আগে ১২.১ ওভারে পাকিস্তানের ওপেনার মুক্তার আহমেদকে আউট করে বাংলাদেশকে তৃতীয় সাফল্য এনে দিয়েছেন স্পিনার আরাফাত সানি। তারও আগে (১০.৪ ওভারে) শহিদ আফ্রিদিকে আউট করে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। আর ইনিংসের নবম ওভারের শেষ বলে আহমেদ সেহজাদকে আউট করে ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম সাফল্য এনে দিয়েছেন তাসকিন আহমেদ।
টোয়েন্টি২০ ম্যাচ মানেই সেখানে চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি। কিন্তু বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের বিপক্ষে বাউন্ডারির খোঁজে হাসফাঁস করতে হয়েছে পাকিস্তানিদের। ম্যাচে সর্বসাকুল্যে মাত্র ১১টি চার ও ৩টি ছক্কা মারতে মেরেছে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা। জবাবে নিজেদের ইনিংসে ২২টি বাউন্ডারি ও ২টি ছক্কা মেরে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যেন বুঝিয়ে দিয়েছেন এই্ মুহূর্তে বিশ্ব ক্রিকেটে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগুনোর ক্ষমতা রয়েছে তাদের।
এই ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক টোয়েন্টি২০ ম্যাচে অভিষেক হয়েছে বাংলাদেশের সৌম্য সরকার ও মুস্তাফিজুর রহমানের।
অতীতে দুই দলের টোয়েন্টি২০ লড়াইয়ে কখনোই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। মাশরাফিরা মিরপুরের মাঠে এবার সেই হতাশা কাটানোর দৃপ্ত শপথ নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন। আর শেষ অবদি পুরো বাংলাদেশকে উৎসবে ভাসিয়ে সাফল্য নিয়েই মাঠ ছেড়েছেন তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান : ১৪১/৫, ওভার ২০ (মুক্তার ৩৭, হারিস ৩০*, হাফিজ ২৬; মুস্তাফিজুর ২/২০, সানি ১/২৩, তাসকিন ১/২৯)
বাংলাদেশ : ১৪৩/৩, ওভার ১৬.২ (সাকিব ৫৭*, সাব্বির ৫১*, মুশফিক ১৯; গুল ১/২৩, ওয়াহাব ১/৩৯)
ফল : একমাত্র টোয়েন্টি২০ ম্যাচে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা : সাব্বির রহমান (বাংলাদেশ)
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।