২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি

ঠেকানো যাচ্ছে না রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ

images-5
রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্ত এলাকায় বিজিবি, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে। ধরতে পারলেই পুশব্যাক করছে বিজিবি। এরপরও অনুপ্রবেশ থামানো যাচ্ছে না। মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার এসব মানুষ সীমান্ত এলাকায় লুকিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। সুযোগ পেলেই ঢুকে পড়ছে। দালালের সহায়তা নিয়েও ঢুকছে ব্যাপক হারে।

বিজিবি সদর দফতর শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, চলতি বছরের ১১ মাসে মিয়ানমারের ৫ হাজার ৭১৬ নাগরিকের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঠেকিয়েছে তারা। এর মধ্যে বিদায়ী নভেম্বর মাসেই প্রতিহত করা হয়েছে ২৩২০ জনের অনুপ্রবেশ।

বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল আবুজার আল জাহিদ জানান, শুক্রবার ভোরেও টেকনাফে নাফ নদী সীমান্ত অতিক্রম করার সময় রোহিঙ্গাবোঝাই ৬টি নৌকা ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রতি নৌকায় ১৫-২০ জন নারী-পুরুষ ও শিশু ছিল। জলসীমায় জিরো পয়েন্টের ওপারে তাদের ঠেলে দেয়া হলেও পরে তারা কোথায় গেছে তা জানাতে পারেননি তিনি।

সীমান্তবর্তী বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এক পয়েন্ট থেকে বাধা পেলে অন্য পয়েন্ট দিয়ে তারা কোনো না কোনোভাবে বাংলাদেশে ঢুকছে। এ ক্ষেত্রে তারা সহায়তা নিচ্ছে ওঁৎ পেতে থাকা দালালদের। প্রত্যাবাসনবিরোধীদের নিয়োজিত চক্র বিভিন্ন পয়েন্ট ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে নিয়ে আসছে। নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিচ্ছে।

সূত্র জানায়, ব্যবসা করতে কয়েকটি চক্র বস্তিতে রোহিঙ্গা ঢোকাতে তোড়জোড় করছে। রোহিঙ্গারা বস্তিতে আসার আগেই নির্মাণ করা হচ্ছে ছোট ছোট ঘর। এসব ঘর ভাড়া দেয়া নিয়েও চলছে প্রতিযোগিতা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তিতে এক সপ্তাহে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা এসব ঘরে ও তাদের আত্মীয়দের কাছে আশ্রয় নিয়েছে। উখিয়া টিভি টাওয়ারসংলগ্ন রোড দিয়ে ভোরে ও রাতে এদের এখানে আনা হয়। দালাল চক্রের অদৃশ্য সহযোগী হিসেবে রয়েছে রাজনৈতিক ও স্থানীয় ক্ষমতাধর অনেকেই। বিজিবি ও আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে কিছু কিছু রোহিঙ্গা আটক হলেও বেশিরভাগ রোহিঙ্গাই পৌঁছে যাচ্ছে গন্তব্যে।

উখিয়া সীমান্তের রেজু আমতলী, ঘুমধুম, তুমব্রু, বালুখালী, পালংখালী, আঞ্জুমান পাড়া পয়েন্ট দিয়ে এক সপ্তাহে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কথা গ্রামবাসী জানিয়েছেন। তবে ৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার তা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এ সংখ্যা সঠিক নয়। সীমান্তের প্রতিটি পয়েন্টে বিজিবির সদস্যরা কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের আটক করে মানবিক সেবা দিয়ে প্রতিদিনই মিয়ানমারে পুশব্যাক করা হচ্ছে।

উখিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, মিয়ানমার সীমান্তে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শোনা যায় প্রতিনিয়ত। রোহিঙ্গারা ভেতরে ঢুকে গাড়িতে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে। তবে তার ইউনিয়নে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ তেমন হচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন।

উখিয়া থানার ওসি মো. আবুল খায়ের জানান, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ প্রতিরোধের পাশাপাশি এখানকার বৌদ্ধ মন্দির ও বৌদ্ধ পল্লীতে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

৫ হাজার অনুপ্রবেশ ঠেকিয়েছে বিজিবি : বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিজিবি নভেম্বরে মিয়ানমারের ২৩২০ নাগরিকের অনুপ্রবেশ প্রতিহত করেছে। পুরো বছরে এ সংখ্যা ৫ হাজার ৭১৬। অন্যদিকে বিদায়ী ১১ মাসে বিজিবি চোরাচালানে জড়িত থাকার দায়ে ১৬১০ জনকে, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ১৬০৬ বাংলাদেশী নাগরিককে আটক করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, চলতি বছরের ১১ মাসে ১২১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা মূল্যের চোরাচালান পণ্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। একই সময়ে ৭৬ লাখ ১৮ হাজার ১৯৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, প্রায় ২ লাখ ৩৭ হাজার বোতল ফেনসিডিল, সাড়ে ১৬০০ কেজি গাঁজা, দুই লাখ ৩৮ হাজার বোতল বিদেশী মদ, ৩২ কেজি হেরোইন, ৫৮ হাজার নেশাজাতীয় ইনজেকশন, প্রায় সোয়া ২ কোটি পিস বিভিন্ন ধরনের অবৈধ ট্যাবলেট জব্দ করেছে।

বিদায়ী নভেম্বরে বিজিবি জব্দ করেছে ১৩২ কোটি ৭৭ লাখ টাকার মাদকদ্রব্য ও চোরাচালান পণ্য। এর মধ্যে সর্বাধিক সাড়ে ১৮ লাখ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়। এ ছাড়া ২১ হাজার ৭৫৭ বোতল ফেনসিডিল ও ১৫ হাজার ৬৯৪ বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার করা হয়।

বিজিবি ১১ মাসে এক কোটি ৫৫ লাখ ৬৪৩ পিস শাড়ি, ৪৪ হাজার ৬৫৮টি থ্রি-পিস ও শার্ট পিস, ৯ লাখ ৩১ হাজার ৬১৭ মিটার থান কাপড়, ৭৪ হাজার সিএফটি কাঠ, প্রায় ২৬ কেজি সোনা ও ৫টি কষ্টিপাথরের মূর্তি উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া ৬২টি পিস্তল, ৪৪টি বিভিন্ন প্রকার বন্দুক, ২৪৬ রাউন্ড গুলি, ৬৫টি ম্যাগাজিন, ৫৫২ কেজি গানপাউডর উদ্ধার করেছে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।