বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর শারীরিক পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ। বনানী থানায় ধর্ষণের মামলায় ৭ মে তাঁদের শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পুলিশ পরিদর্শক ইসমত আরা হাসপাতাল থেকে ফরেনসিক রিপোর্ট নিয়ে যান। হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সোহেল মাহমুদ জানান, ধর্ষণের ঘটনায় যেসব আলামত থাকার কথা তার কোনোকিছুই মেলেনি। ফরেনসিক বিভাগের পাঁচ সদস্যের মধ্যে সোহেল মাহমুদ প্রধান হিসেবে ছিলেন। এ ছাড়া ছিলেন নিলুফার ইয়াসমিন, কবির সোহেল, মমতাজ আরা, কবিতা সাহা।
গত ২৮ মার্চ দ্য রেইনট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে ৬ মে বনানী থানায় মামলা হয়। ধর্ষণের শিকার এক ছাত্রী শাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষীকে আসামি করে মামলা করেন।
পরে আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ওই দুই ছাত্রী জানান, গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে তাঁদের নেওয়া হয়। শাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাঁদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডের দ্য রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যান। হোটেলে যাওয়ার আগে দুজনই জানতেন না সেখানে পার্টি হবে। এ সময় তাঁদের সঙ্গে শাহরিয়ার নামের এক বন্ধু ছিলেন। তাঁদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। হোটেলে যাওয়ার পর শাফাত ও নাঈমের সঙ্গে তাঁরা আরও দুই তরুণীকে দেখেন। পরিবেশ ভালো না লাগায় শাহরিয়ারসহ দুই তরুণী চলে আসতে চেয়েছিলেন। তখন আসামিরা শাহরিয়ারের কাছ থেকে গাড়ির চাবি নিয়ে নেন এবং তাঁকে মারধর করেন। এরপর দুই তরুণীকে অস্ত্রের মুখে একটি কক্ষে নিয়ে যান। ধর্ষণ করার সময় শাফাত গাড়িচালককে ভিডিও চিত্র ধারণ করতে বলেন। আর নাঈম তাঁদের মারধর করেন। তাঁরা এ ঘটনা জানিয়ে দেবেন বলে জানানোর পর শাফাত তাঁর দেহরক্ষীকে ওই দুই তরুণীর বাসায় তথ্য সংগ্রহের জন্য পাঠান। লোকলজ্জার ভয়ে এবং মানসিকভাবে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন আসামিরা। তাঁদের কথামতো না চললে বা এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়।
আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে শাফাত আহমেদ রাজধানীর বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি। আসামিরা সবাই গ্রেপ্তার আছেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।