স্তা ও ফেনী নদীর পানি বণ্টনে সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় এসে শনিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক শেষে দেওয়া ভাষণে এ আশ্বাস দেন তিনি।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী যে, ভারতের রাজ্য সরকারগুলোর সহযোগিতায় তিস্তা ও ফেনি নদীর পানি বণ্টনে সুষ্ঠু সমাধানে পৌঁছতে পারব। আমাদের নদীগুলো দূষণমুক্ত ও নাব্য বজায় রাখতে একসঙ্গে কাজ করব।’
তিনি বলেন, আমাদের নদীগুলো আমাদের সম্পর্ককে লালন করবে, বিভেদের উৎস হবে না। পানি বণ্টনের বিষয়টা মানবিক ইস্যু। সীমান্তের দুই পাড়ের মানুষের জীবন ও জীবিকাকে তা প্রভাবিত করে।
এর আগে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভারতের পশ্চিবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে বৈঠক করেন। ওই বৈঠক সম্পর্কে তারা কেউ কোনো মন্তব্য করেননি।
মোদি বলেন, ‘আমাদের নদীগুলো আমাদের মাঝে আরও দৃঢ় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করবে, অনৈক্য নয়। দুই দেশের সীমান্তের মানুষ এ পানির ওপর জীবন ধারণ করে থাকে। পানি একটি মানবিক ইস্যু, যা আমরা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেব।’
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে কথা দিয়েছিলেন। তিনি সেই কথা রেখেছেন। এবার তিনি তিস্তা ও ফেনি নদীর পানি বণ্টন নিয়ে কথা দিয়েছে। আশা করি এবারও তিনি তার কথা রাখবেন।’
একাধিক কূটনীতিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ-ভারত এর মধ্যে পানি সমস্যা সমাধানে তৎপর মোদি সরকার। বিশেষ করে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে জিইয়ে থাকা সমস্যার সমাধান করতে স্বয়ং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তত্ত্বাবধানে দেশটির উচ্চ পর্যায়ের একটি বিশেষ কমিটি কাজ করছে। ওই কমিটিতে ভারতের পররাষ্ট্র, পানি এবং আইন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিসহ একাধিক রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি রয়েছে।
তিস্তার উৎপত্তিস্থল থেকে প্রবাহিত পানি সিকিমের রাজ্য সরকার ড্যাম ও বাঁধ দিয়ে ধরে রেখে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। পাশাপাশি সিকিম থেকে তিস্তার পানির একটি অংশ অন্যদিকে প্রবাহিত (ডাইভার্ট) করে বিহার রাজ্যে দেওয়া হয়। যার কারণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও তিস্তার পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। আবার বাংলাদেশও তিস্তার ন্যায্য পানি পায় না।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার চাচ্ছে, সিকিম থেকে প্রবাহিত পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে পশ্চিমবঙ্গে দিতে যাতে সেখান থেকে বাংলাদেশের পানি পেতে সমস্যা না হয়। অন্যদিকে, সিকিম সরকারকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এ পানির বদলে নগদ আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। যা দিয়ে সিকিম সরকার তার চলমান প্রকল্পে পানির চাহিদা বাস্তবায়ন করবে। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহার রাজ্য সরকারকেও এ জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।