দেশকাঁপানো শিরোনাম মানবপাচার। হঠাৎ বিত্তবান হওয়ার মাধ্যম বটে! না হয়,ঝুঁকিপূর্ণ রেশ নিয়ে, জোঁনাকি রজনীতে চোরের ভূমিকায় মানবপাচার কেমনে অব্যাহত রাখে? কিনা হচ্ছে, এই শিরোনামটির জন্য! ইলেক্ট্রনিক্স, প্রিন্টিটিং, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমত খবর চলমান থাকলেও পুলিশের তালিকাভূক্ত দালালরা বরাবরই অব্যাহত রেখেছে। কোন মতেই থামানো যাচ্ছে না মানুষ নামের শ্রেষ্ট জীবদের বিক্রি করা থেকে। রামু, টেকনাফ, উখিয়া, মহেশখালী,কুতুবদিয়া সহ উপকূলের চিহিৃত স্থান গুলোতে ঘঠেছে অনেক ট্রাজেডী। যা বেশ পরিবারকে শোকে কাতরাচ্ছে। এভাবে যোগ হচ্ছে নিয়মিত শোকের মিছিল। না বুঝে বা বুঝে দালালদের খপ্পরে পড়ে বাংলাদেশ হয়ে মরণ পথে স্বপ্নের মালেশিয়াতে পাড়ি জমাচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে মানবপাচারের নতুন নতুন রুট ও কৌশল। মরণপণ পথে যাত্রাগামীদের বন্ধ করার পরিবর্তে সরকার কর্তৃক দেয়া নিরাপত্তা কর্মীদের ভূমিকা হয়ে যাচ্ছে রহস্যময়। পাবলিক সার্ভেন্ট পুুলিশ সদস্যদের সাথে পাচারকারীদের সমন্বয় সাধনে মানবপাচার অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে। রামু থানাধীন খুনিয়াপালংয়ের পেচারদ্বীপ এলাকার লাল ব্রীজের ঘাট হতে নিয়মিত মানবপাচার চালিয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান। সম্প্রতি লাল ব্রীজের ঘাট, হিমছড়ি পয়েন্ট হয়ে নিয়মিত মালেশিয়াগামী লোকজন যাচ্ছে বলে এলাকার সর্বসাধারণ থেকে জানা গেছে। তারা আরো বলেন, এ রোড দিয়ে প্রতিদিন ১শ, ২শ লোক পুলিশ ও বেশ কিছু চিহিৃত দালালদের তত্ত্বাবধানে মানবপাচার করে চলেছে। এ ঘাট হতে নিয়মিত ২টি, ৩টি করে মাছ ধরার ডিঙ্গি নৌকা করে রাত আনুমানিক ৮টার দিকে কূল ছেড়ে সমুদ্রে গভীর নোঙর করা জাহাজে লোকবল দিয়ে আসতেছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হিমছড়ি টহলরত পুলিশ ও সরকারদলীয় কতিপয় নেতা জড়িত বলে জানায়। অনেক লোক অকপটে বলে দিয়েছেন আব্দুল্লাহ বিদ্যুৎ মোটা অংকের টাকা নিয়ে প্রশাসনের সাথে লিয়াজো করে মানবপাচারের সহযোগিতা করছে। সে সরকারী প্রভাব কাটিয়ে পাচারচক্রকে টাকার বিনিময়ে উৎসাহ দিচ্ছে বলে জানান। এমন এক ঘটনার শিকার পেচারদ্বীপের মৃত মোছা আলীর ছেলে মুহিবুল্লাহ প্রকাশ মুহিব এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ১০/২০দিন আগে আমার বাড়ীর সামনে মালেশিয়ার লোকজন নিয়ে আসলে আমি বাধা প্রদান করি এর কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে আমাকে গ্রেপ্তার করে হিমছড়ি ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। পুলিশ বলছে তুই যদি আর কোন দিন বাধা দিস তুকে জেলে দিব। তিনি বলেন, আমি গ্রামে বিজিবির র্সোস হিসেবে কাজ করতেছি। তা স্বত্বেও আমাকে পাচারকারী বলে ফাঁসানোর চেষ্টা করতেছে। এ বিষয়ে হিমছড়িতে দায়িত্বরত পুলিশ আই,সি আব্দুল মান্নানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং বলেন, আমরা সজাগ হয়ে স্ব-স্ব দায়িত্বপালনে নিয়োজিত আছি। এছাড়াও পেচারদ্বীপের এ ঘাট সচল হওয়ার পর নতুন করে মালেশিয়াগামীদের ভাড়ায় চালানো নৌকা ব্যবহারে হিড়িক পড়েছে। এ পথে যুক্ত হচ্ছেন বেশ নতুন নাম, কামাল উদ্দিন, ছুরুত আলম সহ আরো অনেক। তারা ইতোমধ্যে এ ব্যবসার জন্য নতুন নৌকা তৈরিতে নেমেছে।
স্থানীয় নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, এ পথের সহযোগিরা মাথাপিচু ৫০০ থেকে ১০০০ হাজার টাকা করে পায়। স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, এ যাত্রা থামানোর চেষ্টা করবে কে? অসহনীয় মৃত্যুর মিছিলে মানব সম্পদ গুলো বিক্রি হচ্ছে দেদারচ্ছে। দালালরা সামন্য চিন্তাও করছে না। যাক চলাতে থাক। এভাবে পাচার অব্যাহত থাকলে সরকার বদনামের শিকার হতে পারে। এটি বাস্তব, এটি সত্য, নিয়মিত মানুষপাচার হচ্ছে। যা পশু বিক্রির অবিকল। পাচারকারীদের পাচারের স্লোগান, আমি দশ বস্তা বা দশ পিছ পাঠাইছি। যাতে লোকজন আঁচ করতে না পারে। মূলত কক্সবাজার পর্যটন নগরীর জনপদ। ভ্রমনে আসে দেশ-বিদেশের অগণিত ভ্রমণ পিঁপাসু। কার কি উদ্দেশ্য সেই ভাল জানে। তবে এখন বাড়ি-ঘরে আগের মত অতিথি আসতে ভয় পায়। কারন, কখন দাললেরা ধরে মালেশিয়ার নৌকার তুলে দেয়। দুর্ভাগা কোন পর্যটক যদি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা না বলে একুট সাধু ভাষা বলে। এরপর শুরু ভয়ানক চিন্তা। কখন কার থাবায় পড়ে। হয় পুলিশ, না হয় দালাল। কত প্রশ্নের উত্তর যেন শেষ করতে হয়। এমন এক বাস্তবতার কথা বললেন, সোনারপাড়া জামে মসজিদের এক ইমাম। তিনি বলেন, কিছুদিন পূর্বে, মালেশিয়ার দালালরা এক পাগলকে দশ হাজার টাকার বিনিময়ে দাঁড়ি চুল কাটিয়ে নৌকায় তুলে দেয়। ইমাম আরো বলেন, উখিয়া ও টেকনাফের কোন র্নিজন স্থানে পরিচিত লোকদের চলাফেরা এখন সাবধানতা অবলম্বন করে করতে হয়। কারন বলা যায় না, কখন নিজের মুখ বেধে চালান দিয়ে দেয়। উল্লেখিত বিষয়াদি নিয়ে সোনারপাড়া রেজু নদীর মোহনায় স্থাপিত বিজিবি ক্যাম্প পরিচালক সুবেদার নুরুল ইসলাম জানায়, আমার কাছে বেশ কিছু দালালদের তালিকা এসেছে যারা শুধু গোয়ালিয়াপালং, ধেছুয়াপালং হয়ে এসে পেচারদ্বীপ ও হিমছড়ি রোড দিয়ে মানবপাচার করে।
হামিদুল হক, পিতা- মৃত আব্দুল জলিল, ধোয়াপালং, আব্দুল করিম, মৃত হোছন আলী, ছুরুত আলম, পিতা- আলী আহমদ, পেচারদ্বীপ। আব্দুল গফুর,পিতা- পেঠান আলী, পেচারদ্বীপ, বেলাল উদ্দিন, পিতা- আব্দুর রহমান চৌকিদার, পেচারদ্বীপ, সুলতান আহমদ, পিতা- আব্দুর রহমান, ধোয়াপালং, আব্দুর রহমান কন্ট্রাক্টর, বদি আলম, পিতা- অলী আহমদ, পেচারদ্বীপ। মোঃ শরীফ, আব্দুল করিম, ধোয়াপালং, সুলতান আহমদ, পিতা- আব্দুর রহমান, মোজাফ্ফর আহমদ, ধোয়াপালং, মনসুর আলম, পিতা- সিরাজ মিয়া, নুরুল ইসলাম নুরু, পিতা- কাদির হোছন, মোঃ আব্দুল্লাহ, ধোয়াপালং, আবু তাহের, পিতা- গোলাম শরীফ, মোক্তার আহমদ, পিতা- ছৈয়দ আকবর, আব্দুর রহমান, আব্দুল আলম, হিমছড়ি, মোক্তার আহমদ, পিতা- আব্দুল করিম কালু, ধোয়াপালং, মোঃ সিরাজ, পিতা- জেবর মূল্লুক। তিনি আরো বলেন, তারা ফিসিং বোটের বাহনা দিয়ে এ ব্যবসা চলমান রাখছে। পুলিশের মানবপাচারের সম্পৃক্ততার বিষয়টি জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ওরা এক বাহিনী, আমরা আরেক বাহিনী লোকেমূখে বলে আমরা শুনতেছি। তবে কিছুদিন আগে আমাদের এক সোর্স মুহিবকে ধরে নিয়ে যায়। পরে মেম্বার নুরুল আলম ও চেয়ারম্যানের সহায়তায় ছাড়া পায়। তাও ১০০০ হাজার টাকা ফাঁড়ির পুলিশকে দিতে হয়েছে। তবে তিনি এই এলাকায় জন্য ব্যাড ক্রিমিনাল ও হুমকি স্বরূপ। সুবেদার আরো বলেন, আব্দুল্লাহ বিদ্যুৎ সরকারদলীয় প্রভাব কাটিয়ে পাচারচক্র থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এবং তিনি একশত ভাগ নিশ্চিত মানবপাচার কাছে জড়িত।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।