বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি বলেছেন- প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের কর্মকাণ্ড লিফলেট আকারে তুলে ধরতে হবে। সাধারণ মানুষ যাতে জানতে পারে বিগত সাড়ে ১৪ বছরে সারাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কী কী উন্নয়ন হয়েছে।
ড. গোলাপ বলেন- পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন, মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ, পাতাল রেল নির্মাণ, সারাদেশে শতাধিক অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন, কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ, পেকুয়ার মগনামায় বানৌজা শেখ হাসিনা সাবমেরিন ঘাাঁটি স্থাপন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপনসহ সরকারের মেগাপ্রকল্পগুলোর ফিরিস্তি জনগণের সামনে তুলে ধরলেই আগামী জাতীয় নির্বাচনেও বাংলাদেশের মানুষ নৌকাকে অবশ্যই ভোট দেবে।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি গত শনিবার দুপুরে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা, পেকুয়া ও মাতামুহুরী উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত দলের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায়।
পৌরশহরের থানা রাস্তার মাথার সিস্টেম চকরিয়া কমপ্লেক্স চত্বরে আয়োজিত এই সভায় জনসমুদ্রে রূপ নেয়। এ সময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে ধীরগতি দেখা যায়।
পৌরশহরের থানা রাস্তার মাথার সিস্টেম চকরিয়া কমপ্লেক্স চত্বরে আয়োজিত এই সভায় জনসমুদ্রে রূপ নেয়। এ সময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে ধীরগতি দেখা যায়।
ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি চকরিয়ার স্থানীয় রাজনীতির প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের দলের কাছে তথ্য রয়েছে এখানকার গুঁটিকয়েক নেতা দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করছেন। মূলত তারা বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। তাই দলের পক্ষ থেকে তাদের সতর্ক করে দিতে চাই, যারা স্থানীয় এমপি জাফর আলমের বিরুদ্ধে মাঠে বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছেন তারা প্রকারান্তরে দলের বিরুদ্ধে সরকারের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছেন। অতএব সময় থাকতে সাবধান হয়ে যান, সবাই এককাতারে চলে আসুন। এখন থেকে স্থানীয় এমপিকে নিয়ে আর কোন ধরণের নেতিবাচক বক্তব্য দিবেন না। কোন নেতা কী বলে বেড়াচ্ছেন সবকিছুর খোঁজ রাখা হচ্ছে। এর পরও যারা এমন কাণ্ডে লিপ্ত থাকবেন তারা মনে রাখবেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে না পারলে কচু কাটা হতে হবে সবাইকে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য জাফর আলমকে দলের প্রধান শেখ হাসিনার কাছে একজন বিশ্বস্ত কর্মী হিসেবে উল্লেখ করে আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, আগামীতেও চকরিয়া-পেকুয়ার জনগণের সেবা করার জন্য জাফর আলমকেই মূল্যায়ন করা হবে। কারণ জাফর আলমই এই আসনের জন্য যোগ্য। তাঁর নেতৃত্বে এখানে বিএনপি-জামায়াতের আগুন-সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রুখে দেওয়া হয়েছিল। সেই তথ্য আমরা সবাই জানি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের তিনি দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর, সরকারের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ, বিশ্ব দরবারে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের অভুতপূর্ব সাড়া পাওয়াসহ দলের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সবকিছুতে আওয়ামী লীগের অবদানের কথা তুলে ধরেন।
জিয়াউর রহমানই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মূলনায়ক উল্লেখ করে ড. আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, দীর্ঘ ছয়টি বছর শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরতে দেয়নি খুনি জিয়াউর রহমান। পরবর্তীতে চট্টগ্রামে জিয়াউর রহমানের কী পরিণতি হয়েছিল তা সবাই জানেন। একমাত্র শেখ হাসিনাই দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। বাবা-মা, ভাই-বোনসহ পরিবারের সকল সদস্যকে হারিয়ে অনেক চেষ্টার পর দেশে এসে বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য দলের তথা রাজনীতির হাল ধরে এখনো কাজ করছেন। এই সময়ের মধ্যে শেখ হাসিনাকে ২১ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। সর্বশেষ স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে হাওয়া ভবনের পরিকল্পনায় রাষ্ট্রীয় মদদে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট দিনদুপুরে শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় এবং নেতাকর্মীদের মানবঢালে সেদিনও প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে যান।
মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম। বক্তব্য দেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু মুছা, পেকুয়ার সভাপতি সাইফুদ্দিন খালেদ, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, চকরিয়া পৌরসভার সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু, সাধারণ সম্পাদক লায়ন আলমগীর চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।
জনসভা শেষে ড. আবদুস সোবহান গোলাপ প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের অ্যালামনাই অনুষ্ঠানে। সেখান থেকে পৌরশহরের জনতা টাওয়ারে নবনির্মিত চকরিয়া আওয়ামী লীগের কার্যালয় উদ্বোধন ও পরিদর্শন করেন। এর পর পরিদর্শন করেন এমপি জাফর আলম কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সিস্টেম কমপ্লেক্সের চতুর্থ তলার বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ কর্নার।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।