এম.এ আজিজ রাসেলঃ কড়া নাড়ছে সনাতনী সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় শারদীয় উৎসব। ২৬ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। বেশির ভাগ মন্দিরের প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ। এখন প্রতিমাগুলো রং করার কাজে ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরা। তুলির আঁচড়ে আঁচড়ে আরও সুন্দর করে তোলা হচ্ছে দুর্গা, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী, লক্ষ্মী ও মহিষাসুরের প্রতিমা। ১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার শুভ মহালয়া। মহালয়ার সাতদিন পর আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে পাঁচদিনব্যাপী দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটবে। তবে মূলত মঙ্গলবার থেকেই কানে অনুরণিত হবে দেবী দুর্গার আগমনধ্বনি। মহালয়া দুর্গোৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এদিন থেকে দেবীপক্ষের শুরু। দেবীর আরাধনা সূচিত হয় মহালয়া উদযাপনের মাধ্যমে। মূলত দুর্গাপূজার ক্ষণ গণনাও শুরু এদিন থেকেই। হিন্দু ধর্মমতে, মহালয়ায় দেব-দেবীকুল দুর্গাপূজার জন্য নিজেদের জাগ্রত করেন। এদিন অতি প্রত্যুষে মন্দিরে মন্দিরে চন্ডীপাঠের মধ্যদিয়ে দেবীকে আবাহন করা হয়। ভক্তরা গঙ্গাতীরে তাদের মৃত আত্মীয়-পরিজন ও পূর্বপুরুষদের আত্মার সদগতি প্রার্থনা করে তর্পণ করেন। সনাতন বিশ্বাস ও পঞ্জিকামতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার নৌকায় চড়ে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) আসবেন (আগমন)। যার ফল শস্যবৃদ্ধি। দেবী স্বর্গালোকে বিদায় নেবেন (গমন) ঘোটকে (ঘোড়া) চড়ে। যার ফল হচ্ছে শস্যহানি। কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট রণজিত দাশ ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা জানান, এবার জেলায় মোট ২৯৩টি মন্ডবে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। তার মধ্যে প্রতিমা পূজা ১৩৪টি ও ঘট পূজা হবে ১৫৯টি। এছাড়া কক্সবাজার পৌরসভায় ১১টি প্রতিমা পূজা ও ৬টি ঘট পূজা, সদর উপজেলায় প্রতিমা পূজা ৩২টি ও ঘট পূজা ৩২টি, রামু উপজেলায় ১৯টি প্রতিমা পূজা ও ১০টি ঘট পূজা, চকরিয়া উপজেলায় ৪৪টি প্রতিমা পূজা ৩৭টি ঘট পূজা, পেকুয়া উপজেলায় ৬টি প্রতিমা পূজা ও ঘট পূজা ৭টি, মহেশখালী উপজেলায় ১টি প্রতিমা পূজা ও ঘট পূজা ৩১টি, কুতুবদিয়া উপজেলায় ১২টি প্রতিমা পূজা ও ঘট পূজা ২৮টি, টেকনাফ উপজেলায় ৫টি প্রতিমা পূজা, ঘট পূজার মন্ডপ নেই ও উখিয়া উপজেলায় ৪টি প্রতিমা পূজা ও ৮টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে ঘট পূজা। সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক দাশ জানান, এবার পূজা মন্ডপের খরচ বেশি। তাই বরাদ্দ বাড়াতে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। আশা করছি এবার সরকারী বরাদ্দ বাড়বে। এদিকে সুষ্ঠুভাবে শারদীয় দূর্গোৎসব সম্পন্ন করতে কাল ২০ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রস্তুতি সভার আহবান করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা আরো জানান, এ বছরের দুর্গাপূজার নির্ঘন্ট অনুযায়ী ২৬ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীতে দশভুজা দেবী দুর্গার আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যদিয়ে শুরু হবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। অবশ্য আগের দিন ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে দেবীর আগমনধ্বনি অনুরণিত হতে শুরু করবে। ২৭ সেপ্টেম্বর মহাসপ্তমী, ২৮ সেপ্টেম্বর মহা অষ্টমী ও কুমারী পূজা এবং ২৯ সেপ্টেম্বর মহানবমী শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনের দুর্গোৎসব।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।