বাংলাদেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে সোমবার (২৫ মে) বাংলাদেশে পালিত হবে ঈদুল ফিতর। শনিবার (২৩ মে) দেশের আকাশে চাঁদ না ওঠার খবর জানিয়েছে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি। ১৪৪১ হিজরি সনের পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সন্ধ্যায় এ কমিটির সভা হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম সচিব নুরুল ইসলাম। সভা শেষে তিনি জানান, দেশের শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। সোমবার সারা দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হবে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মিজান-উল-আলম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপ-সচিব মো. শাফায়াত মাহবুব চৌধুরী, ওয়াকফ প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) এস. এম. হূমায়ুন কবির সরকার, ঢাকা জেলার এডিসি (সাধারণ) মো. শহিদুজ্জামান, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র উপ-প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া, শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ, বাংলাদেশ টেলিভিশনের পরিচালক মুহাম্মদ নেছার উদ্দিন জুয়েল, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের পিএসও আবু মোহাম্মদ, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবদুল মান্নান, সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার অধ্যক্ষ মো. আলমগীর রহমান, বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, চকবাজার শাহী জামে মসজিদের খতিব মাওলানা শেখ নাঈম রেজওয়ান ও লালবাগ শাহী জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুহাম্মদ নেয়ামতুল্লাহ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ইসলামি হিজরি সাল চান্দ্রবর্ষ অনুযায়ী গণনা হয়ে থাকে। সে হিসেবে রমজান মাস ২৯ নাকি ৩০ দিনে সম্পন্ন হবে তা নির্ভর করে চাঁদ দেখতে পাওয়ার ওপরে। চাঁদ দেখা গেলে শাওয়াল মাস গণনা শুরু হয়ে থাকে। আর শাওয়াল মাসের প্রথম দিনে ঈদ অনুষ্ঠিত হয়। এ কারণে ইসলামের বিধান অনুসারে, ২৯ রোজা শেষে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা বাধ্যতামূলক। চাঁদ দেখা না গেলে ৩০তম রোজা পালন শেষে ঈদ অনুষ্ঠিত হবে।
মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ইসলাম ধর্মীয় পরিভাষায় এর অর্থ হলো পুরস্কারের দিবস। রমজানের দীর্ঘ একমাস সংযমের পর মুসলমানরা এ দিনে আনন্দ করেন। হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী রমজান মাস শেষ হলেই শুরু হয় শাওয়াল মাস। উৎসব হিসেবে ঈদুল ফিতর পালন করা হয় এ মাসের প্রথম দিনে।
তবে করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়ছে ঈদে। এবার ঈদে দেশের কোথাও ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে না। জামাতের আয়োজন করতে হবে মসজিদে। নামাজ শেষে হাত মিলিয়ে মুসল্লিদের কোলাকুলিও হবে না এবার। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ মসজিদে আদায়ের নির্দেশনা দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ঈদের নামাজ জামাতে আদায়ের প্রসঙ্গে ১৪ মে বিভিন্ন নির্দেশনা জারি করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে মুসল্লিদের জীবন ঝুঁকি বিবেচনা করে এ বছর ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে ঈদের নামাজের জামাত নিকটস্থ মসজিদে আদায় করতে হবে। প্রয়োজনে একই মসজিদে একাধিক জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে। জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত না মেলানোর অনুরোধও করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
প্রতিবছর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হলেও করোনাভাইরাসের কারণে এবার তা হচ্ছে না। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায়, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায়, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় এবং পঞ্চম (সর্বশেষ) জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রসঙ্গত, সৌদি আরবসহ আশপাশের দেশগুলোতেও গতকাল শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে এসব দেশে আজ ৩০ রোজা সম্পন্ন শেষে আগামীকাল রবিবার (২৪ মে) ঈদ অনুষ্ঠিত হবে। তবে সময়ের ব্যবধান থাকা সত্ত্বেও কিছু ধর্মীয় নেতার অনুসারীরা চাঁদ না দেখেই সৌদি আরবের সঙ্গে সূচি মিলিয়ে আগামীকাল দেশের কিছু এলাকায় ঈদ পালন করবেন। মূল ধারার বাইরে গিয়ে ঈদ পালনকারী এসব এলাকার মানুষ বরাবরই থাকেন গণমাধ্যমের আলোচনায়।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।