দেশের কল্যাণে, মানুষের উন্নয়নে প্রয়োজন হলে বাবার মতো জীবন উৎসর্গ করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ‘জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করে দেব এটাই আমার প্রতিজ্ঞা।’
মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুর জেলা স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
১৭ বছর পর এ জেলা সফরে এসে তিনি এখানকার মানুষদের উদ্দেশে বলেন, ‘লক্ষ্মীপুরের উন্নয়নের জন্য আপনাদের দাবি-দাওয়া করতে হবে না, কিছু বলতে হবে না। বাংলাদেশকে আমি চিনি, আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি এ দেশকে চিনি, আমি এ দেশের মাঠ-ঘাট, নদী-নালা, খাল-বিল সবই আমার পরিচিত। বাংলার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করে দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব।’
জাতির ইতিহাসে মার্চ মাসের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘১ মার্চ বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন, ৭ মার্চ দিয়েছিলেন ঐতিহাসিক ভাষণ আর ২৬ মার্চে এসে দেন স্বাধীনতার ঘোষণা। এরই ধারাবাহিকতায় দেশ স্বাধীন হয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলতে থাকেন, মানুষ এর সুফল পেতে শুরু করে। কিন্তু ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেদিন আমার মা-বাবা, ভাইসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল।’
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এরপর বাংলাদেশ কী হয়েছে? শুরু হয়েছিল হত্যা ও ক্যু’র রাজনীতি। অবৈভাবে ক্ষমতা দখলের রাজনীতি। একের পর এক খুন হয়েছে। মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২১ বছর এদেশের মানুষ শোষিত, বঞ্চিত ছিল। আমরা ৯৬ সালে সরকার গঠন করে বাংলার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কাজ শুরু করি। আমরা দেশের মানুষের জন্য কাজ করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কৃষক ভাইয়েরা, বর্গাচাষীরা ঋণ পেত না; আওয়ামী লীগ সরকার তাদের ঋণের ব্যবস্থা করেছে। এ বাংলাদেশের মানুষ যারা গৃহহারা, নদী ভাঙ্গা তারা ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। প্রত্যেককে আমরা বিনামূল্যে বাসস্থান তৈরি করে দেব। একটি মানুষও যাতে কষ্ট না পায় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা করছি।’
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে মধ্যম আয়ের দেশ। আর ২০৪১ সালের মধ্যে হবে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।’
তিনি আরও জানান, ‘প্রতিটি উপজেলায় এবং জেলায় একটি করে মসজিদ এবং ইসলামিক কালচারাল সেন্টার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।’
জনসভায় আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ফের বিজয়ী করতে ভোট চান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নৌকা মার্কায় আপনাদের দোয়া চাই, ভালোবাসা চাই, আগামী প্রতিটি নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চাই।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী জনসভাস্থল থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় লক্ষ্মীপুরের ২৭টি উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এছাড়া এ জেলায় সরকারি-বেসরকারি যেভাবেই হোক একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।
লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের সঞ্চালনায় জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি হারুনুর রশিদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ, স্থানীয় এমপি একেএম শাহজাহান কামাল, আবদুল্লাহ আল মামুন, মোহাম্মদ নোমান ও এমএ আউয়াল, লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামছুল ইসলাম, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহের, আওয়ামী লীগ নেতা এমএ মমিন পাটোয়ারী প্রমুখ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।