কক্সবাজার সময় ডেস্কঃ আজ ১ জানুয়ারি, উৎসবের দিন। তাও যে সে উৎসব নয়, বই উৎসব। শীতের সকালে উৎসবের আমেজেই শিশুদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়েছে। নতুন বই পেয়ে আনন্দে আত্মহারা শিশুরা। বইয়ের গন্ধে মাতোয়ারা তারা। কেউ কেউ বই হাতে পেয়েই দৌড় দিয়েছে, আবার কেউ বা বই বুকে জড়িয়ে বাড়ির পথ ধরেছে। এ চিত্র শুধু রাজধানীর নয়, সারা দেশেরই। নতুন বছরের প্রথম দিনে সারাদেশের চার কোটি ৪২ লাখ চার হাজার ১৯৭ শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দেওয়ার এ আয়োজন করেছে সরকার।
উৎসব মুখর পররিবেশে রাজধানীর আজিমপুর গভর্নমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মুস্তাফিজুর রহমান ফিজার সোমবার সকালে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নতুন প্রজন্ম মেধার দিক দিয়ে দারিদ্র্য নয়, তারাই দেশের আগামীর কর্ণধার। আমরা দেশব্যাপী ৩৫ কোটির ওপরে বই দিচ্ছি। এবারের বই অনেক ভালো মানের কাগজে ছাপা হয়েছে। বইগুলো পড়ে শিশুরা অনেক মজা পাবে।’
এসময় কয়েক হাজার শিশু বই পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে। নতুন বই হাতে পেয়েই উঁচু করে ধরে উপস্থিত অতিথিদেরকে দেখায়। চুমকি উড়িয়ে আনন্দ করে। শিশুদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও খুশি। এক পর্যায়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিশুদের মাঝে গিয়ে আনন্দ করেন, ছবি তোলেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
বই উৎসবে আসা লিটল অ্যাঞ্জেল স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রাইসা আজিজ বলে, ‘নতুন বই পেয়েছি,খুব ভালো লাগছে। নতুন বই পাওয়ার মজাই আলাদা। মনে হচ্ছে আজই বাড়িতে গিয়ে সব বই পড়ে ফেলি।’
আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিদি মঈন বলে,’আমি বই পেয়েছি। নতুন বইয়ের গন্ধটাই আলাদা। যদিও আজ সব বই দেওয়া হয়নি। তবুও যা পেয়েছি সেগুলো নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।’
নাদিম পাটোয়ারী নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার দুই মেয়েই আজিমপুর গার্লস স্কুলে পড়ে। ওদেরকে নিয়ে এসেছি। নতুন বই পেয়ে ওরা অনেক খুশি। মন্ত্রীর সঙ্গে ওরা ছবি তুলেছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে বই উৎসবে অংশ নিয়ে নাজিরাবাজার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী নুপুর জানায়, বই পেয়ে খুব খুশি লাগছে। নতুন বছরে নতুন বই উপহারের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
একই স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাজমা জানান, নতুন বই পেয়ে বাচ্চারা অনেক খুশি হয়েছে। তাদের মধ্যে একটা ঈদ ঈদ আনন্দ চলছে।
সূত্রাপুর এলাকার ডালকা নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহসিন বলে, ‘বই পেয়ে অনেক আনন্দ লাগছে।’
আরেক অভিভাবক নাজমা জানান, তার ছেলে গতকাল (রবিবার) থেকেই অনেক উচ্ছ্বসিত। সকাল সকাল নিজেই রেডি হয়ে চলে আসছে বই নিতে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিশেষ অতিথি ছিলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মোতাহার হোসেন। অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আসিফ-উজ-জামান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আর আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বই উৎসবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তুক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহাসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।