নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ভাল্লুকখাইয়া মৌজায় বন বিভাগ-গ্রামবাসীর মধ্যকার বিরোধের জের ধরে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে উভয় পক্ষকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভূমিতে না যাওয়ার জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। রোববার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে বৈঠকে এ সীদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নিবার্হী অফিসার আবু শাফায়াত মুহাম্মদ শাহে দুল ইসলাম। তিনি জানান, উভয় পক্ষকে আগামী বিরোধীয় ভূমিতে না যাওয়ার জন্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মৌজা হেডম্যানকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও আনতে বলা হয়।
জানা গেছে, গত কয়েক মাস যাবত নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ২৭৫নং ভাল্লুকখাইয়া মৌজার ৭৫একর পাহাড়ী ভূমির মালিকানা নিয়ে বন বিভাগ ও মৌজা প্রধানের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এ ঘটনায় মৌজা হেডম্যান মংশৈ ফ্রু চৌধুরী বাদী হয়ে বন বিট কর্মকর্তাসহ ৭জনের বিরুদ্ধে গত ৪জুন নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে উভয় পক্ষকে নোটিশ জারী করেন শুক্রবার (১২জুন) থানায় তলব করেন। কিন্তু ঐদিন বন বিভাগের পক্ষে বিরোধীয় জায়গা কাজ করতে গেলে গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এদিকে ঘটনার সূত্রপাতে বন বিভাগের পক্ষে শনিবার রাতে থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
২৭৫নং ভাল্লুকখাইয়া মৌজা এলাকার বিরোধীয় ভূমির ভোগদখলীয় দাবীদার ব্যাক্তিরা জানান, বন বিভাগ বর্তমানে জোর পূর্বক যেখানে সামাজিক বনায়ন কার্যক্রম শুরু করেছে সেখানে তারা দীর্ঘকাল ভোগ দখলে ছিল। সম্প্রতি পুলিশ উভয় পক্ষকে নোটিশ দেওয়ার পরও বন বিভাগের ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে বিরোধীয় ভূমিতে কাজ করে আসছিল। স্থানীয়রা জানান, বর্তমান সরকার জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু জনগণকে উচ্ছেদ করে বন বিভাগের বনায়ন করার উদ্যেগ কে প্রশ্নবিদ্ধ মনে করছেন তারা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ২৯ জানুয়ারী ২০১৫ইং তারিখে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং- পবম/বন-২/বৃ:শূ: (সা:ব)/০১/২০০৯ (অংশ-১)/২০ ভিত্তিতে উপ-প্রধান বন সংরক্ষের কার্যালয় থেকে ২২.০১০০০০.০০৩.২৯.১৩৫.২০১৫.১১৩নং স্মারকের একটি পত্র তিন পার্বত্য জেলার বন বিভাগের কাছে প্রেরণ করা হয়। এতে তিন পার্বত্য জেলার প্রত্যেক মৌজায় সামাজিক বনায়ন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বন বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি ২৭৫নং ভাল্লুকখাইয়া মৌজা হেডম্যান মংশৈ ফ্রু চৌধুরী এ প্রতিবেদককে বলেন- পার্বত্য চট্টগ্রাম ম্যানুয়াল অনুযায়ী মৌজার দেখভাল করেন মৌজা হেডম্যান। যার কারনে সরকারী আদেশ নির্দেশ তিনি মানতে বাধ্য রয়েছে। তবে বন বিভাগের সামাজিক বনায়নের জন্য জমি প্রয়োজন হলে প্রশাসনিক ভাবে কার্যক্রম চালানো উচিত ছিল। এভাবে প্রভাবশালী ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে মৌজাবাসীর দীর্ঘকালের ভূমি দখল করা মোটেও উচিত। যার কারনে বন বিভাগ-গ্রামবাসীর মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এসময় তিনি বন কর্মকর্তা আবদুস সবুর ভূইয়া যোগদানের পর থেকে দূর্ণীতি, অনিয়মের মাধ্যমে এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করছে বলে তিনি দাবী করেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।