নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ভাল্লুকখাইয়া মৌজায় শতাধিক একর ভূমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে যেকোন সময় আইন শৃঙ্খলা অবনতিকর পরিস্থিতি তৈরীর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ২৭৫নং ভাল্লুকখাইয়া মৌজার দোছড়ি ইউনিয়নের বরইতলী ও জেলা পরিষদের জায়গার পশ্চিম দিকের এলাকায় অন্তত শতাধিক একর পাহাড়ী জায়গায় আগুন দিয়ে পূর্বেকার বনায়ন ধ্বংস করা হয়েছে। সোমবার সরেজমিনে গেলে ঐ এলাকায় আনুমানিক ১০-১৫ জন শ্রমিক গাছ কেটে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ের উচু জায়গায় স্তুপ করতে দেখা যায়। এসময় জনৈক কাঠ ব্যবসায়ী আবছার এসব মূল্যবান কাঠ তিনি কিনেছেন বলে এ প্রতিবেদকের নিকট স্বীকার করেন।
জায়গায় কর্মরত একজন শ্রমিকের সাথে কথা হলে সে নিজেকে বন বিভাগের সামাজিক বনায়নের উপকার ভোগী পরিচয় দিয়ে জানান, স্থানীয় জনৈক নুরু তাদের চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করতে বলেছেন। পরবর্তী এসব জায়গা থেকে তাদেরকে ১ একর করে জায়গাও দেওয়া হবে বলে বন বিভাগ তাদের আশ্বাস দেন। তবে মূল্যবান গাছ গুলো বন বিভাগ কোথায় নিচ্ছে এসব বিষয়ে তারা কিছুই জানাতে পারেনি।
জায়গায় কয়েক যুগ ধরে ভোগ দখলে থাকা বাসিন্দা নুরুল আমিন মেম্বার, আবুল কাসেম, সমি উদ্দিন, সৈয়দ কাশেম, আবুল হোসেন, আবুল কাসেমসহ অনেকে অভিযোগ করে জানান, গত কিছু দিন যাবত নাইক্ষ্যংছড়ি বন কর্মকর্তার নির্দেশে তুলাতলী বিট কর্মকর্তা বেলাল হোসেনের নেতৃত্বে ভূমিদস্যু শামসুল আলম, মাহাবুবুর রহমান, মোহাম্মদ হোছন লালু, ইসলামসহ সিন্ডিকেট ভিত্তিক একটি দল তাদের এলাকায় ইতিমধ্যে প্রায় ৫০ একর পাহাড়ী জায়গায় আগুন দিয়ে ধ্বংস করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সৃজিত মূল্যবান গাছ-গাছালি বন বিভাগ জোর করে স্থানীয় বিভিন্ন কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছে মোটা অংকের টাকায় বিক্রি করেছে বলে তারা দাবী করেন।
অপরদিকে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে নাইক্ষ্যংছড়ি বন রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুস সবুর ভুইয়া জানান, পুরাতন বাগান কেটে তারা ঐজায়গা সামাজিক বনায়ন করার উদ্দেশ্যে কাজ করছেন।
উল্লেখ্য এর আগে, গত কিছু দিন যাবত ঘুমধুম ইউনিয়নের রেজু বড়ইতলী এলাকায় সামাজিক বনায়ন করার উদ্দেশ্যে কার্যক্রম শুরু করলে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে নাইক্ষ্যংছড়ি বন বিভাগ। পরবর্তী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরেজমিনে তদন্ত করেন। বর্তমানে ২৭৫নং ভাল্লুকখাইয়া মৌজার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় জায়গা জবর দখল করে বন বিভাগ বানিজ্য শুরু করেছে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলকে বন বিভাগ হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো দাবী করেছেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।