২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি

নাশকতা ও হত্যা মামলায় কাঠগড়ায় খালেদা

P-M-thereport24

নাশকতা ও হত্যা মামলায় এই প্রথম বিচারের জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়াচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। যাত্রাবাড়ী থানার নাশকতা ও হত্যা মামলায় খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার অভিযোগপত্র দাখিল করে ডিবি পুলিশ। এতে খালেদা জিয়াসহ ৩১ জনকে পলাতক দেখিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

খালেদা জিয়া অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি হওয়ায় তাকে বিচারের জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে। জিয়া চ্যারিটেবল ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির দুই মামলায় তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়ালেও হত্যা ও নাশকতা মামলায় এই প্রথম তাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে।

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বৃহস্পতিবার এ প্রসঙ্গে দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘এই প্রথম নাশকতা ও হত্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিচারের জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে। খালেদা জিয়ার কাঠগড়ায় দাঁড়ানো এখন সময়ের ব্যাপার।’

আব্দুল্লাহ আবু আরও বলেন, বৃহস্পতিবার যাত্রাবাড়ী থানার নাশকতা মামলায় খালেদা জিয়াসহ ৩১ জনকে পলাতক দেখিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) বশির উদ্দিন। যেহেতু তিনি অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি, সেহেতু তার বিচারের কাঠগড়ায় না দাঁড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।

খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) নিম্ন অথবা উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেতে পারেন। তবে বিচারের জন্য তাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নাল আবেদীন মেজবাহ বলেন, খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য নাশকতা ও হত্যা মামলায় তার নাম চার্জশিটভুক্ত করা হয়েছে।

মেজবাহ বলেন, এই প্রথম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ‍হত্যা ও নাশকতার মামলায় চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেওয়া হয়েছে। চার্জশিটে যেহেতু নাম রয়েছে সেহেতু বিচারের জন্য তাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

এদিকে রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মুখপাত্র ও ডিবির যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের মধ্যে ৩১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। যাত্রাবাড়ীতে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপের ঘটনায় আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রে এ আবেদন করা হয়েছে।’

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আইনের ভিত্তিতে তদন্ত করি। কোনো অপরাধের ঘটনা ঘটলে সেখানে অভিযোগে যাদের নাম আসে, তারা সবাই আইনের চোখে সমান। সে হিসেবে কারও রাজনৈতিক, সামাজিক অথবা অন্য কোনো পরিচয় আইনানুযায়ী বিবেচনায় আনার সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘কারও রাজনৈতিক, সামাজিক অথবা অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে অভিযোগপত্র দেওয়া হয় না। তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা বিভিন্নভাবে প্রমাণিত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের মধ্যে ৩১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।’

অভিযোগপত্রে নাম আসা রুহুল কবির রিজভীসহ সাতজন বর্তমানে জেলহাজতে আছেন। এতে সাক্ষী করা হয়েছে ৮১ জনকে।

অভিযুক্তরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া, এম কে আনোয়ার, যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, আমানউল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ বুলু, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, শওকত মাহমুদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাবেক ছাত্রনেত্রা হাবিব-উন-নবী খান সোহেলসহ ৩৮ জন।

হত্যাসহ দণ্ডবিধির বেশ কয়েকটি ধারা এবং বিস্ফোরক আইনে দুই মামলার অভিযোগপত্র দিয়েছেন ডিবি কর্মকর্তা বশির।

অভিযোগপত্র পাওয়ার পর আদালত অভিযোগ গঠনের শুনানী করবে। শুনানীতে সন্তুষ্ট হলে বিচার শুরুর আদেশ দেবেন আদালত। যদি এ মামলার বিচারকাজ শুরু হয় তবে দুর্নীতি মামলার পাশাপাশি খালেদা জিয়াকে নাশকতার মামলায়ও বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।

২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাসে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ হন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। ১ ফেব্রুয়ারি সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নূর আলম (৬০) নামে এক যাত্রী।

ওই ঘটনায় ২৪ জানুয়ারি বিকেলে খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কে এম নুরুজ্জামান। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫/২৫(ঘ) ধারায় দায়ের করা মামলায় পেট্রোলবোমা নিক্ষেপের পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিএনপির ১৮ নেতার নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী হিসেবে যাত্রাবাড়ী বিএনপির ৫০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।

মামলায় সোহাগ ও লিটন নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা বর্তমানে কারাগারে আছেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন। জবানবন্দীতে কারা জড়িত, পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা সম্পর্কে তারা বিস্তারিত বর্ণনা দেন বলে পুলিশ জানায়।

 

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।