এ বিষয়ে গুলশান কার্যালয়ে অবস্থান করা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান শীর্ষ নিউজকে বলেন, রোববার হাজিরা দিতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আদালতে যেতে পারেন। তবে তা নির্ভর করবে সার্বিক পরিস্থিতির উপর।
আদালত থেকে পরবর্তীতে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা আমার জানা নেই।
বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, আদালতে গিয়ে জামিন পাওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসলে সে ক্ষেত্রে প্রথমে তিনি (খালেদা জিয়া) নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেতে পারেন। এতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হলে ফের গুলশান কার্যালয়েই ফিরবেন বিএনপি প্রধান। সেখানেও যদি প্রবেশে বাধা দেওয়া হয় তাহলে পরিস্থিতির উপরই নির্ভর করবে তিনি কোথায় যাবেন।
জানা যায়, সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের এ মুহূর্তের মনোভাবের কোনো পরিবর্তন হয় কিনা- তাও পর্যবেক্ষণ করতে চায় দলটি। প্রার্থীদের প্রচারণার সুযোগ সৃষ্টি করার পাশাপাশি খালেদা জিয়াকে অবাধ চলাফেরার সুযোগ না দিলে আন্দোলন ও নির্বাচন নিয়ে নতুন করে ভাবতে পারে বিএনপি।
এদিকে, গতকাল শুক্রবার দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পুলিশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত ২৪ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরা দিতে গেলে তার গাড়ি বহরে হামলা হয়। কিন্তু আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে এ ব্যাপারে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে ২০ দল ঘোষিত ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবসের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ৩ জানুয়ারি বিকাল থেকেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো হয় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনে।
প্রতিদিনের মতো সেদিনও সন্ধ্যার পর নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে যান তিনি। সেখানেও চোখে পড়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা। রাত ১০টার দিকে বেগম জিয়ার কাছে খবর আসে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থানরত দলের দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম- মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
খবর পেয়ে খালেদা জিয়া কার্যালয় থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বাইরে বের হতে চাইলে কার্যালয় ঘিরে তাৎক্ষণিকভাবে মোতায়েন করা হয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য। সেই সঙ্গে তার কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় দুইপাশে দেয়া হয় ব্যারিকেড। এক পর্যায়ে দুইপাশে আড়াআড়িভাবে ১১টি বালু, ইট ও মাটিভর্তি ট্রাক রেখে অবরুদ্ধ রাখা হয় কার্যালয়।
২০ দলের ঘোষিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে ৫ জানুয়ারি বিকেলে কার্যালয়ে থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন খালেদা জিয়া। কিন্তু ব্যারিকেডের পর তালা লাগিয়ে দেয়া হয় তার কার্যালয়ের মূল ফটকে। তিনি গাড়িতে ওঠে ফটকের কাছে এসে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেন। বের হতে না পেরে সেখানে কার্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ঘেষে ভেতরে দাঁড়িয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষনা করেন ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম জিয়া।
যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এরপর থেকে তিন মাস অতিবাহিত হলেও দাবি আদায়ে গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থান করছেন তিনি।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।