মিয়ানমার উপকূল থেকে উদ্ধারকৃত ২০৮ জন অভিবাসীর মধ্য থেকে দ্বিতীয় দফা আরও ৩৭ জন বাংলাদেশিকে ফেরত এনেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শুক্রবার সকাল ১০ টায় সীমান্তের ঘুমধুমের বিপরীতে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বেঠক শেষে মিয়ানমারের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনাল রেজিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট থেকে বিজিবির কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়। তবে এই পতাকা বৈঠকে বিজিবি সদস্য নায়েক রাজ্জাকের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলেও তাকে ফেরত দেয়া হয়নি। পরবর্তীতে আরো একটি পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে রাজ্জাককে ফেরত আনা হবে বলে জানা গেছে।
পতাকা বৈঠকে ১০ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিজিবি ১৭ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর ইমরান উল্লাহ সরকার। মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগের সহকারী পরিচালক চ নাইং।
দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর বিজিবির কক্সবাজার সেক্টরের কমান্ডার এমএম আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গত ৮ জুন প্রথম দফায় ১৫০ জন শনাক্তকৃত বাংলাদেশি অভিবাসন প্রত্যাশীকে বিজিবির মাধ্যমে মিয়ানমার থেকে ফেরত আনা হয়েছিল। যাচাই-বাছাই করে ১৫০ জনের মধ্যে এক দালালসহ দুজন রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। আজ আবারো ৩৭ জন বাংলাদেশিকে ফেরত আনা হয়।
বিজিবি কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, গত বুধবার নাফ নদীর জাদিমুরা পয়েন্ট সীমান্তে বিজিবি-বিজিপির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে গোলাগুলির ঘটনায় ধরে নিয়ে যাওয়া বিজিবি সদস্য নায়েক রাজ্জাকের বিষয়টি নিয়ে পতাকা বৈঠকে আলোচনা হয়।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ফেরত আনা ৩৭ জন বাংলাদেশির মধ্যে রয়েছে সিরাজগঞ্জের ৫, মাদারীপুর ১, সুনামগঞ্জ ৪, কিশোরগঞ্জ ৮, হবিগঞ্জ ১১, জামালপুর ১ ও বগুড়ার ৭ জন।
মিয়ানমার ইমিগ্রেশন বিভাগের সহকারী পরিচালক চ নাইং জানান, বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্তকারীদের ফেরত আনায় আমরা সন্তুষ্ট। এর মাধ্যমে দু-দেশের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে। এ সময় তিনি সবাইকে রমজানের শুভেচ্ছা জানান।
গত ২১ মে মিয়ানমার উপকূল থেকে ২০৮ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করেছিল। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এসব মালয়েশিয়াগামী অভিবাসীদের ২০৮ জনের মধ্যে ২০০ জনকে বাংলাদেশি নাগরিক দাবি করে আসছে। কিন্তু কূটনৈতিক পর্যায়ে বাংলাদেশে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরিত তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের মাধ্যমে প্রথম দফায় প্রেরিত ১৫০ জন অভিবাসীদের তালিকা যাচাই করে তা মিয়ানমারের নিকট প্রেরণ করা হয়। দ্বিতীয় দফায় প্রেরিত ৩৭ জনের তালিকা ও একই কায়দায় যাচাই করে তা মিয়ানমারের নিকট প্রেরণ করা হয়।
প্রসঙ্গত: প্রথম দফায় ফেরত আসা ১৫০ জনের মধ্যে উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের মানবপাচারের দালাল তালিকাভূক্ত শরণার্থী হামিদ হোসেন ও অনিবন্ধিত শরণার্থী ইউনুছকে কক্সবাজারে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে শনাক্ত পূর্বক তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মানবপাচার মামলা দায়ের করা হয়।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।