২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি   ●  মেরিন ড্রাইভে ইয়াবাসহ নারী আটক   ●  সড়ক দখল করে নৈরাজ্য সৃষ্টি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে কক্সবাজারে আ.লীগের ৯১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা   ●  রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক চোরা চালানের গডফাদার ফরিদ ফের সক্রিয়

রোহিঙ্গা সংকট :

পর্যটন ব্যবসায় স্থবিরতা : ভর মৌসুমেও বন্ধ সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল

এএইচ সেলিম উল্লাহঃ নিয়মানুসারে ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে পর্যটন মৌসুম। কিন্তু রোহিঙ্গা সংকটের কারণে ভর মৌসুমে সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে পর্যটকবাহি জাহাজ চলাচল এখনো শুরু হয়নি। বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকত নগরী কক্সবাজারেও চাঙ্গা হয়নি পর্যটন ব্যবসা। রোহিঙ্গা সংকট ধ্বস নামিয়েছে সবখানেই। স্থবিরতা এনেছে জেলা প্রশাসনসহ সব বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রমেও। এতে অর্থনৈতিক ও আর্তসামাজিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে পর্যটন জেলা কক্সবাজারে, এমনটি মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পর্যটন ব্যবসায়ীদের মতে, যারা ঢাকা-চট্টগ্রাম বা দেশের অন্য এলাকায় বাস করেন তারা বেড়ানোর জন্য ঈদের ছুটিকে কাজে লাগান। আর অপেক্ষা করেন রোদ-বৃষ্টি লুকচুরি খেলার পর্যটন মৌসুমের শুরুটার। তাই আগে থেকেই হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউজের কক্ষগুলো আগাম বুকিং দেন। কিন্তু চলতি কোরবানির ঈদে যে বুকিং হয়েছে তা যতসামান্যই বলা চলে। এটা বিগত এক দশকের চিত্রের সম্পূর্ণ বিপরীত। এতে পর্যটন ব্যবসায়ীরা চরম হতাশ।

হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম সিকদার বলেন, ঈদ থেকে শুরু করে এ সময়টা ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কক্ষ বুকিং থাকত। কিন্তু পর্যটন মৌসুম চললেও চলতি সময়টা খুবই বাজে যাচ্ছে সবার। হোটেল-মোটেলে যেসব কক্ষ বুকিং হচ্ছে তার দু’তৃতীয়াংশ রোহিঙ্গাদের সহায়তা দিতে আসা লোক আর ঢাকা-চট্টগ্রাম বা বিদেশ থেকে আসা সংবাদকর্মী। তুলনামূলক ভাবে পর্যটক নেই বললে চলে।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন’র সহ-সভাপতি এম নুরুল আবছার জানান, আমাদের হোটেল গুলোর ইনভেস্টমেন্টটা বেশি। ২০১২ সালে রামু ট্রাজেড়ির পর পর্যটন ব্যবসায় মন্দা চলে এসেছিল। লোনের কিস্তি পরিশোধেও বেগপেতে হয় আমাদের। কিন্তু পর্যটন বান্ধব প্রধানমন্ত্রী সে পরিস্থিতি কাটিয়ে তুলে রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল রাখায় গত কয়েক বছর ব্যবসাটা মোটামোটি ভালই যাচ্ছিল। কিন্তু এবারের পর্যটন মৌসুমটা গিলে খাচ্ছে রোহিঙ্গা সংকট। এখনো বেতন-ভাতা ও লোনের কিস্তি পরিশোধে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন আহবায়ক এম এ হাসিব বাদল’র মতে, কক্সবাজারের পর্যটনকে আর্থিক ভাবে সমৃদ্ধ করে সেন্টমার্টিন। দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপটি দেখতে ভ্রমণ পিপাসুদের একটি আগ্রহ থাকে। তাই কক্সবাজার আসা পর্যটকরা সেখানে একটা রাত কাটানো বা দিনে দিনে ঘুরে আসতে পরিকল্পনায় রাখেন। এবং পর্যটন মৌসুম শুরুর প্রথম দিন থেকেই এখানে যাতায়ত শুরু হয়। সেভাবেই নৌ-রুটে চলাচলকারি জাহাজের দুটি ঘাটে এসে নোঙ্গর করেছে অগাস্টের শেষ সপ্তায়। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুর কারণে প্রশাসন জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয়নি। ফলে স্থমিত হয়ে আসে পর্যটন ব্যবসা।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহেদ হোসেন ছিদ্দীকি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের কারণে অনেককিছুই পিছিয়ে গেছে। সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচলের ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্ত আসেনি।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী বলেন, বিগত বছরের তুলনায় চলতি পর্যটন মৌসুমে পর্যটক সমাগম কম। এরপরও সৈকতসহ পুরো পর্যটন এলাকায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা টেকনাফ, ইনানী, হিমছড়ি ও কক্সাবাজার সমুদ্র সৈকতে নানা ভাবে দায়িত্ব পালন করছে। রয়েছে স্পেশাল টিমও। এছাড়াও ওয়াচ টাওয়ার থেকে পর্যবেক্ষণসহ ২৪ ঘণ্টা চালু রয়েছে হটলাইন।
কক্সবাজারের জেলা প্রশসাক মো. আলী হোসেন বলেন, পর্যটক সেবায় আমরা সব সময় প্রস্তুত। কিন্তু চলতি রোহিঙ্গা সংকট পর্যটন ব্যবসায় একটু ধীর গতি এনেছে। আশা করছি এ সংকট দ্রুত দূরিভূত হবে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।