নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজারে মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। কখনও ভারী, আবার কখনও মাঝারি মানের বৃষ্টির কারণে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৫ টি স্থানে পাহাড় ধ্বসের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২ জন স্থানীয় বাসিন্দা ও অপর ৮ জন রোহিঙ্গা।
মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত উখিয়ার ১, ৮, ৯, ১০ ও ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধ্বসের এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান।
এর মধ্যে ১ নম্বর ক্যাম্পে ১ জন, ৮ নম্বর ক্যাম্পে ১ জন, ৯ নম্বর ক্যাম্পে ৩ জন, ১০ নম্বর ক্যাম্পে ৪ জন ও ১৪ নম্বর ক্যাম্পে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
১০ নম্বর ক্যাম্পে নিহতরা হলেন, ব্লক ১০ এর আবুল কালামের ছেলে আবু মেহের (২৫), লাল মিয়ার ছেলে আবুল কালাম (৫৭), মতিউর রহমানের মেয়ে সলিমা খাতুন (৪২), শরিফ হোসেনের মেয়ে জয়নব বিবি (১৯)।
৯ নম্বর ক্যাম্পে নিহতরা হলেন, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেরানীহাট এলাকার আলী জহুরের ছেলে মো. হোসেন আহমেদ (৫০), ওই ক্যাম্পের আই ৪ ব্লকের আলী জোহারের মেয়ে আনোয়ারা বেগম (১৮) ও আই ৯ ব্লকের মো. জামালের ছেলে মো. সালমান (৩)।
৮ নম্বর ক্যাম্পে নিহত হন, বি-৮২ ব্লকের মো. হারেজের ছেলে মো. হারেজ (৪)।
১৪ নম্বর ক্যাম্পে নিহত হন উখিয়ার থাইংখালী এলাকার শাহ আলমের ছেলে আব্দুল করিম (১২)। আবদুল করিম থাইংখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেণির ছাত্র। ১ নম্বর ক্যাম্পে নিহত হন, এফ/৫ ব্লকের সুলতান আহমদের মেয়ে পুতনী বেগম (৩৪)।
আরআরআরসি মো. মিজানুর রহমান তিনি জানান, বুধবার সকাল ৬ টায় ১০ নম্বর ক্যাম্পের বক্ল সি ৩ তে পাহাড় ধ্বসে মাটি চাপা পড়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়। ফায়ার সার্ভিসের ২ টা ইউনিট উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩ টায় ৯ নম্বর ক্যাম্পের আই ৪ এ পাহাড় ধ্বসের ঘটনা ঘটে। ওখানে উদ্ধার করা হয় ৩ জনের মরদেহ। ভোর ৪ টার দিকে ৮ ও ১৪ নম্বর ক্যাম্পে পাহাড় ধ্বসে মারা যায় আর ২ জন। ভোর ৪ টার দিকে ১ নম্বর ক্যাম্পে পাহাড় ধ্বসে মারা যান একজন। এ ঘটনায় কেউ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
আরআরআরসি জানান, নিহতদের ২ জন স্থানীয় বাসিন্দা। এর মধ্যে ৯ নম্বর ক্যাম্পে নিহত চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকার হোসেন আহমেদ নানা কারণে ক্যাম্পে অবস্থান করে মারা যান। আর ১৪ নম্বর ক্যাম্পে মারা যাওয়া আব্দুল করিম ১৪ নম্বর ক্যাম্পের পাশেই বাড়ি।
ইতিমদ্যে উদ্ধার তৎপরতা শেষ হয়েছে জানিয়ে মিজানুর রহমান জানান, ক্যাম্পে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারিদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আরও কেউ ঝুঁকিপূর্ণ আছে কিনা দেখা হচ্ছে। তাদেরও সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে।
এদিকে, কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের উপ-সহকারি পরিচালক তোফায়েল আহমদ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বেলা ১২ টা থেকে বুধবার বেলা ১২ টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় কক্সবাজারে ৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।
আর টেকনাফে শুধুমাত্র ৬ ঘন্টায় ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ডেরে তথ্য জানিয়েছেন টেকনাফ আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বরত ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, বুধবার সকাল ৬ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত এই ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।