পিএমখালী’র ইয়াবা ব্যবসায়ি সিন্ডিকেট বহাল

কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ঘাটকুলিয়াপাড়া ইয়াবা ব্যবসায়ি নুরুল হাকিম প্রকাশ পেঠানের বাড়ি হতে মঙ্গলবার রাতে অস্ত্রসহ আটক ডাকাত মুজিব জামিনে মুক্তি পেয়েছে। আটকের একদিনের মাথায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সে জামিনে বেরিয়ে আসার ঘটনা নিয়ে জনমনে আতংক সৃষ্টি হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক করা হলেও পুলিশ তাকে রহস্যজনক ভাবে ৫৪ ধারায় আদালতে সোর্পদ বলে অভিযোগ রয়েছে।
এমনকি পিএমখালী হতে আটক হলেও ২৭ মে দুপুরে শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়া হতে অস্ত্রসহ আটক করা হয় বলে সংবাদপত্রে প্রচার করে পুলিশ। অস্ত্র থানায় রেখে দিয়ে ৫৪ ধারায় আদালতে চালান ও তার বিরুদ্ধে আরো বিভিন্ন মামলা থাকার পরও গোপন করার হেতু কি। এসব প্রশ্ন এখন জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে। সিন্ডিকেট প্রধান ও ইয়াবা আটক মামলার আসামী হাকিমও বহাল তবিয়তে রয়েছে।
এলাকাবাসি সুত্রে জানাগেছে,কক্সবাজার শহরতলির আবদুর রহমানের ছেলে মো. আরিফ উল¬াহ জমি লাগিয়তির ৩০ হাজার টাকা দিতে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার বাংলাবাজার কাজি অফিসের সামনে ১০/১২ জনের একদল সশস্ত্র ডাকাত তাকে গতিরোধ করে। ডাকাত দল আরিফকে এলোপাতাড়ি মারধর করে টাকাগুলি লুটে নেয়। এসময় পার্শ্ববর্তী লোকজন এগিয়ে এসে ডাকাতদলকে ধাওয়া করে।
অন্যান্য ডাকাতেরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও ডাকাত মুজিবুর রহমান পিএমখালী ঘাটকুলিয়াপাড়া মৃত ছৈয়দ আহমদের ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী নুরুল হাকিম প্রকাশ পেঠান ওরফে রাসেলের বাড়িতে আত্মগোপন করে। পরে জনতা ওই বাড়িটি ঘেরাও করে রেখে কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশকে খবর দেয়। রাত ১০টার দিকে সদর মডেল থানার উপ-পরির্দশক (এসআই) কলে¬াল চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ওই বাড়ি হতে অস্ত্রসহ মুজিবুর রহমানকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। ধৃত মুজিব কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়ার গোদারপাড়া এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে কক্সবাজার থানার মামলা নং-৫৫, জিআর-৩৫৭ এর ১নং পলাতক আসামী । স্থানীয় লোকজন এটাকে ডাকাতি ও অস্ত্রসহ আটক বললেও পুলিশ বলেছে এটা ষড়যন্ত্র হতে পারে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, মঙ্গলবার রাত ১০টায় পিএমখালী ইউনিয়নের ঘাটকুলিয়াপাড়া বাড়ী থেকে মুজিবুর রহমানকে বাঁধা অবস্থায় আটক করে এসআই কলে¬াল চৌধুরী। তবে ওই ব্যক্তিকে এক স্থানে বেঁধে রাখা হয় আর অন্য স্থানে কাটা বন্দুক ফেলে রাখে। এসময় অস্ত্রসহ মুজিবকে থানায় নিয়ে আসা হয়।
তিনি আরো জানান, পুরো ঘটনাটিকে নিয়ে রহস্য থাকায় থানায় জিডি করে মুজিবকে বুধবার দুপুরে আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। অস্ত্রটি নিয়ে যেহেতু সন্দেহ আছে সেহেতু তদন্ত করেই বের করা হবে আসলে অস্ত্রটি কার । যার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধেই অস্ত্র আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, গত বুধবার বিকালে কক্সবাজার সদর মডেল থানা অপরেশন অফিসার কায়ুম উদ্দিন চৌধুরী বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, বুধবার দুপুরে দক্ষিণ রুমারিয়ারছড়া থেকে অস্ত্রসহ মুজিবুর রহমানকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান। তার উদৃতি দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবরও প্রকাশ হয়।
অভিযান পরিচালনাকারী এসআই কলে¬াল চৌধুরী বলেন, অস্ত্র নিয়ে সন্দেহ থাকায় ৫৪ ধারায় চালান দেয়া হয়েছে। ওই মুজিবের বিরুদ্ধে আরো অন্যান্য মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, সব মামলায় সে জামিনে আছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পিএমখালী ঘাটকুলিয়াপাড়ার ওই নুরুল হাকিম প্রকাশ পেঠান ওরফে রাসেল একজন প্রতিতিষ্টিত ইয়াবা ব্যবসায়ী। গত বছরের ১১ নভেম্বর ১৬,শ পিচ ইয়াবাাটকের ঘটনায় উক্ত নুর হাকিমকে প্রধান আসামী করে মডেল থানা অপরেশন অফিসার কায়ুম উদ্দিন চৌধুরী ৩ জনের বিরুদ্ধে (কক্সবাজার থানার মামলা নং-২৯, জিআর-৯৪৫ ) দায়ের করেন। এছাড়া স্থানীয় প্রতিবাদি অনেক ব্যক্তি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডিও করেছে। তার বাড়িতে ইয়াবা আসর বসানো ছাড়াও অপরাধিদের আস্তানা হিসেবে নিয়মিত ব্যবহার হয়ে আসছে।
স্থানীয় আরো জানান, অস্ত্র সহ পুলিশের হাতে আটক মুজিব বৃহস্পতিবার জামিনে বেরিয়ে এসেছে। আবারও যুক্ত হয়েছে ইয়াবা ব্যবসায়ি হাকিমের সিন্ডিকেটে। অস্ত্র থানায় রেখে দিয়ে ৫৪ ধারায় আদালতে চালান ও তার বিরুদ্ধে আরো বিভিন্ন মামলা থাকার পরও গোপন করার হেতু কি। এসব প্রশ্ন এখন জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্তের দাবী করেছেন এলাকাবাসি।