কক্সবাজারের উপকূলের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের নেতৃত্বদানকারী বনের রাজা জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন ফকিরাবাদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি পেকুয়া উপজেলা বারবাকিয়া ইউপির পাহাড়িয়াখালী এলাকার ডাকাত জাফর আলমের পুত্র।
এদিকে অস্ত্রসহ তার গ্রেফতারের খবরে আনন্দ প্রকাশ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিদাবী করেন ভুক্তভোগীরা জনসাধারণ।
র্যাব-৭ এক প্রেস নোটে জানান, কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানাধীন বারবাকিয়া এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী খুনসহ ০৮ মামলার আসামি জাহাঙ্গীর আলম প্রকাশ বনের রাজা জাহাঙ্গীর প্রকাশ ডাকাত জাহাঙ্গীর (৪০) কে চট্টগ্রামের বায়েজিদ থেকে অস্ত্রসহ আটক করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন ফকিরাবাদ এলাকায় কতিপয় ব্যক্তি মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে।
উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে অদ্য ২৭ মে ২০২১ ইং তারিখ ১৫.৩০ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করলে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টাকালে র্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে আসামি জাহাঙ্গীর আলম প্রকাশ বনের রাজা জাহাঙ্গীর (৪০), পিতা- জাফর আলম, থানা- পেকুয়া, জেলা-কক্সবাজারকে আটক করে। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেখানোমতে নিজ হেফাজতে থাকা ০১ টি এলজি, ০৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধারসহ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, সে দীর্ঘ দিন যাবৎ কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের নিকট অবৈধ অস্ত্র ক্রয়-বিক্রয়সহ নিজে ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে লিপ্ত।
উল্লেখ্য যে, আসামী জাহাঙ্গীর আলম প্রকাশ বনের রাজা জাহাঙ্গীর প্রকাশ ডাকাত জাহাঙ্গীর নারী ও শিশু নির্যাতন, চুরি, ডাকাতি, অবৈধভাবে বন দখল ও বনজ সম্পদ ধ্বংস, অস্ত্র ও হত্যাসহ ০৮ এর অধিক মামলার অন্যতম আসামী এবং গত ২৪ এপ্রিল ২০২১ খ্রিঃ তারিখে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানাধীন নেজাম উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ীকে নির্মমভাবে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামী।
গ্রেফতারকৃত আসামি এবং উদ্ধারকৃত আলামত সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়োজিদ বোস্তামী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
তথ্যসূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এক পর্যায়ে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়ে ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতির পদটি ভাগিয়ে নেন। এরপর আরো সক্রিয় হয়ে অপরাধ কর্ম শুরু করে।
ইতোমধ্যে নির্মমভাবে হত্যা করে নিরহ সালমা ও নেজাম উদ্দিনকে। এ দুই হত্যা মামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী এমন অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও ধর্ষণ, ধর্ষণ চেষ্টা, হত্যাচেষ্টা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলা ও বন মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৪০ এর অধিক মামলা রয়েছে। বিগত কয়েকমাস আগে তাকে গ্রেফতার করার জন্য চট্টগ্রাম ও পেকুয়ায় ব্যাপক বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে। তারপরও থানা প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে অপরাধ কর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে না র্যাব-৭ একটি টিম অবশেষে অস্ত্রসহ তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।