রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করতে মিয়ানমার এ পর্যন্ত যত প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশ ও বিশ্বকে দিয়েছে তার প্রমাণ দেয়ার জন্য দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রোহিঙ্গা ইস্যুর সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে ঢাকায় নিযুক্ত কূটনীতিকদের ব্রিফ করার পর তিনি এ আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশি বন্ধুদের আমরা বলেছি, মিয়ানমার বলছে, তারা প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে। যদি তারা সেটা করে তাদের লোক রোহিঙ্গারা তাদের বিশ্বাস করে না। মিয়ানমার নিজের লোকদের সেসব প্রতিশ্রুতি বিশ্বাস করাতে ব্যর্থ হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারকে বলছি, তোমরা নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যম কিংবা জাতিসংঘের সংস্থা কিংবা অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিদের রাখাইন ঘুরিয়ে নিয়ে আসো। তোমরা রোহিঙ্গাদের জন্য যে ব্যবস্থা নিয়েছ, তা তারা দেখুক।’
‘রোহিঙ্গা নেতাদেরও রাখাইন থেকে ঘুরিয়ে আনার প্রস্তাব আমরা দিয়েছি। কারণ, একসময় তারা নিপীড়িত হয়েছিল, তাদের লোকদের হত্যা করা হয়েছিল। এজন্য রোহিঙ্গারা নিরাপত্তা চায়। সেখানে মুক্তভাবে চলাফেরার স্বাধীনতা চায়। এসব বিষয়ে মিয়ানমার বারবার আমাদের আশ্বস্ত করেছে। তাই যদি হয় তাহলে একটা দলকে নিয়ে তারা দেখায় না কেন? আমরা বলেছি, তারা যা বলছে তা প্রমাণ করুক’, বলেন ড. এ কে আবদুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখনও প্রস্তুত আছি রোহিঙ্গাদের পাঠানোর জন্য। কিন্তু সেখানে যাওয়ার জন্য রোহিঙ্গাদের উৎসাহিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশি কূটনীতিকদের বলেছি, রোহিঙ্গাদের জন্য আমাদের যা যা করার করে যাব, করছি। কিন্তু বিশ্ব নেতাদেরও দায়িত্ব রয়েছে। বিশ্ব সম্প্রদায়কে আমরা অনুরোধ জানিয়েছি, এ সমস্যা মোকাবিলায় তারা যেন আরও উদ্যোগী হয়। কারণ, এই সমস্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, সবার। রোহিঙ্গাদের ফেরতে নিতে মিয়ানমার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা পালন করতে যেন দেশটিকে বাধ্য করা হয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর বিশ্বাস রাখছে বাংলাদেশ। কারণ, বিশ্ববাসী আমাদের সাহায্য করছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত তৈরি হয়েছে। পুরো বিশ্ব আমাদের সমর্থন করছে- এটা স্বীকার করতেই হবে। আমাদের অবস্থান অত্যন্ত তুঙ্গে। বিশ্ব জনমত আমাদের প্রতি আছে বলেই মিয়ানমার সমাধানের জন্য বারবার আমাদের কাছে আসছে।’
ড. মোমেন আরও বলেন, ‘আমরা আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করে যাব। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। সময় লাগছে তবে আমরা আশাবাদী। আগেও এ সমস্যার সমাধান হয়েছে। তখন স্বল্প সংখ্যা, আড়াই লাখ ছিল। এখন ১২ লাখ। তবে আমাদের বিশ্বাস, আমরা এ সমস্যার সমাধানে সফলকাম হবো।‘
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।