শততম টেস্টের প্রথম দিনেই উল্টো রুপে দেখা দিল মুশফিক বাহিনী। গল টেস্টের সেই বিপর্যস্ত বাংলাদেশকে আজ চেনা যাচ্ছিল না। বোলিং-ফিল্ডিংয়ে অসাধারণ নিয়ন্ত্রণ। শরীরী ভাষায় কী প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস! টাইগারদের বোলিং দাপটে গল টেস্টের সেই দোর্দন্ড প্রতাপশালী শ্রীলঙ্কাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না পি সারা ওভালে। বাংলাদেশের জন্য ‘আতঙ্কের’ মাঠ পি সারা ওভালের উইকেট ব্যাটিং সহায়ক- এটা ছিল খোদ লঙ্কান অধিনায়কের ভাষ্য। সেই উইকেটে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে এমন বিপর্যয়ে পড়তে হবে তা নিশ্চয়ই ভাবেননি রঙ্গনা হেরাথ। এক পর্যায়ে অলআউট হওয়ার শঙ্কা জাগলেও টেল এন্ডারদের দৃঢ়তায় ৭ উইকেটে ২৩৮ রান নিয়ে প্রথম দিন শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা। অবশ্য আলো কমে যাওয়ায় আগেই বন্ধ করতে হয়েছে খেলা।
শ্রীলঙ্কার দুর্গে প্রথম আঘাত হানেন কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। তার বলে করুণারত্নের ব্যাটের কানায় লেগে গালিতে উড়ে যায় বল। গালিতে দারুণ ক্যাচ নেন মিরাজ। আউট হওয়ার আগে তিনি ৩২ বলে ৭ রান করেন। এরপর পরপর দুই ওভারে জোড়া আঘাত হানেন তরুণ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। তার ঘূর্ণি-বলে বিভ্রান্ত হয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হলেন প্রথম টেস্টের ১৯৪ রান করা কুশল মেন্ডিস। পরের ওভারে এসে আবারও শিকার ধরলেন তিনি। এবার সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ওপেনার উপল থারাঙ্গা (১১)। ২৪ রানে দ্বিতীয় এবং ৩৫ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে শ্রীলঙ্কার। এর আগে অবশ্য একবার রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান থারাঙ্গা।
লঙ্কানদের চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটান পেসার শুভাশিস রায়। বলে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন অ্যাশলে গুণারত্নে (১৩)। ৭০ রানে ৪ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কা লাঞ্চের পর প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। দলে সুযোগ পাওয়া ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে ৬৬ রানের জুটি গড়েছিলেন দিনেশ চান্দিমাল। সেই জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন দলে সুযোগ পাওয়া তাইজুল ইসলাম। তাইজুলের ঘূর্ণিতে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান ধনঞ্জয় ডি সিলভা (৩৪)। শর্ট বল ভেবে লেংথ বলটি পুল করার চেষ্টা করেছিলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। কিন্তু ততটা শর্ট ছিল না বলটি। একটু স্কিড করে বল আঘাত করে স্ট্যাম্পে।
শততম টেস্টের প্রথম দুই সেশনেও উইকেটশূন্য ছিলেন সাকিব আল হাসান। অবশেষে উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকাভিলাকে বোল্ড করে স্বাগতিকদের ৬ষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটালেন তিনি। সাকিবের বলে বোল্ড হয়ে যাওয়ার আগে ৩৭ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৩৪ রান করেন তিনি। এরপর দলীয় ১৯৭ রানে ৭ম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমানের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন দিলরুয়ান পেরেরা (৯)। মুস্তাফিজের ফুল লেন্থের বলটি পেরেরা ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপে চলে যায়। সৌম্য সরকার ক্যাচটি তালুবন্দী করতে এতটুকুও ভুল করেননি। এরপর রঙ্গনা হেরাথ এবং দিনেশ চান্দিমাল মিলে অপরাজিত ৪৩ রানের জুটি গড়ে দিন শেষ করেন। হেরাথ ২১০ বলে ৮৬ রান করে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ ও মিরাজ। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন শুভাশিস, তাইজুল এবং সাকিব আল হাসান।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।