ফাঁসির খবর কাঁদালো কামারুজ্জামানকে
২০১৫, এপ্রিল ০৬ ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ণ
মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান আবার কাঁদলেন।সকালে রিভিউর রায় শোনার জন্য ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে থাকা টিভির সামনে বসেছিলেন কামারুজ্জামান। সোমবার সকালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে টেলিভিশনের রিভিউ খারিজের খবর শুনে কিছুটা হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তার চোখ দিয়ে নীরবে পানি পড়তে থাকে। প্রতিটি আইনি সুবিধা পাওয়ার পর শেষ পর্যন্ত সব আশা মাটি হয়ে যাওয়ায় তিনি বেশ কিছু সময় স্থির হয়ে বসে থাকেন। তবে পরে অবশ্য নিজেকে সামলে নেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করলেও বেশ কিছু সময় তিনি যেন স্বাভাবিক হতে পাছিলেন না।
এখন রাষ্ট্রপতির কাছে জীবন ভিক্ষার আবেদনই তার একমাত্র ভরসা। তাতেও কাজ হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম তা তিনি ভালোভাবেই জানেন।
কারাগারের একটি সূত্রে জানা গেছে, তিনি সোমবার খুব ভোরেই ঘুম থেকে ওঠেন। ফজরের নামাজ আদায় শেষে কোরআন শরীফসহ কয়েকটি ধর্মীয় বই পড়েন। সকাল সাড়ে ৮ টার সময় নাস্তা শেষ করে তিনি টেলিভিশন সেটের সামনে যান তার রিভিউ রায়ের আদেশ শোনার জন্য। একটি টেলিভিশনে তার রিভিউ খারিজের খবর শুনে কিছু সময়ের জন্য কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এ ব্যাপারে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
তবে রিভিউ খারিজের পর তার আইনজীবী এডভোকেট শিশির মনির জানিয়েছেন, কামারুজ্জামানের সঙ্গে কারাগারে দেখা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গতকাল রবিবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ শুনানি শুরু করেন।
জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের রিভিউ শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এডভোকেট শিশির মনিরসহ অন্যান্য আইনজীবীরা। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম।
কামারুজ্জামানের রিভিউ আবেদনটি ১ এপ্রিল শুনানির জন্য কার্যতালিকায় এসেছিল। রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ওইদিন কামারুজ্জামানের আইনজীবীরা খন্দকার মাহবুব হোসেনের অসুস্থতার কারণে সময় প্রার্থনা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ ৫ এপ্রিল দিন ধার্য করা হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ৯মে কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। পরে ওই বছরের ৬ জুন কামারুজ্জামান ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। ওই আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩ নভেম্বর তৎকালীন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ও বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ কামারুজ্জামানের ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রেখে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।