কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারায় অবস্থিত দেশের প্রথম বঙ্গবন্দু শেখ মুজিব সাফারী পার্কের অস্থিত্ব এখন বিলিন হওয়ার পথে। হুমকির মূখে পড়েছে জীব বৈচিত্র সহ বনজ সম্পদ।দিন দিন অরক্ষিত ও ক্ষুদ্র হতে চলেছে সাফারি পার্কের পরিধি।পার্ক এলাকার ভিতরের ছড়া খাল থেকে বালু উত্তোলন,নির্বিচারে বনজ বৃক্ষ নিধন, সহ পশু পাখী(বন্যপ্রাণী) চুরির ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। অপরদিকে পার্ক কতৃপক্ষের অনিয়ম,অবহেল ও অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছে এলাকাবাসী। ছড়া খাল থেকে বালু উত্তোলনের ফলে ছোট ছড়া বিশাল খালে পরিণত হয়েছে। পাহাড়ের মাটি ভেঙ্গে মূল্যবান গাছ পালা সহ ওই নদীতে পড়ে যাচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়ছে বন্যপ্রাণী(পশুপাখীর) আবাসস্থল। বৃক্ষ নিধনের ফলে পার্কের জীববৈচিত্রের ও পরিবেশের বিরোপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে।পরিবেশ বিজ্ঞানিরা দাবী করছেন পার্কের এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই সাফারি পার্কটি ধ্বংস হয়ে যাবে। পার্কের এ বেহাল অবস্থার জন্য এলাকাবাসী দায়ী করেছেন একটি চোরচালানী সিন্ডিকেটের সাথে আতাত করে টানা ১৪ বছর ধরে সাফারী পার্কে কর্মরত থেকে অনিয়ম দূর্নীতি ও অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়া ফরেষ্টার মাজহারুল ইসলাম কে। উপরোক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্দু সাফারি পার্ক এলাকার বাসিন্দা পরিবেশ কর্মী বাবুল দাশ গত ২৭ ডিসেম্বর দূদক চেয়ারম্যান, প্রধান বনসংরক্ষক সহ প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
বাবুল দাশের অভিযোগে জানাযায় কুমিল্লার বাসিন্দা ফরেষ্টার মাজহারুল ইসলাম ফরেষ্ট একাডেমিতে পড়া লেখা করা কালিন সময়ে ছাত্র দলের ক্যাডার ছিলেন। চাকুরীতে নিয়োগ পান বিএনপি সরকারের আমলে । এরপর যোগ দেন বঙ্গবন্দু সাফারী পার্কে। দীর্ঘ ১৪ বছর একটানা এ পার্কে কর্মরত থেকে অনিয়ম, দূর্ণীতি ও সরকারী সম্পদ লুট করে টাকার পাহাড় গড়েছেন।পার্কের একাধিক উন্নয়ন কাজে তিনি অঘোষিত ভাবে ঠিকাদারী কাজ ও করে যাচ্ছেন।ইতিমধ্যে পাগলির বিল মৌজার ১০ হেক্টর মূল্যবান বনজ বাগান কাঠচোরদের সাথে আতাত করে বিক্রি করে দিয়েছেন। স্থানীয় চোরাই বালি ব্যাবসায়ীদের সাথে মাসিক ৬০ হাজার টাকা চুক্তিতে পার্ক এলাকার আওতাধীন পাগলিরবিল মৌজার ছড়া খালে ১০-১২ টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে রাত দিন বালি উত্তোলন করে পাচারে সহযোগিতা করছে ফরেষ্টার মাজহারুল ইসলাম।এতে বনের গাছ বিলিন হচ্ছে, পাহাড় ভেঙ্গে যাচ্ছে ছড়া খালে গর্তের সৃষ্টি হয়ে বড় খালে পরিণত হচ্ছে।নুরু মিয়া ও ইনু নামে স্থানীয় দুই বালি চোরাকারবারী তার অর্থের যোগান দাতা । তাছাড়া জীববৈচিত্রের ভারসম্য রক্ষার্থে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে সৃজিত ১৫ হেক্টর বাগান ও বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি কাঠচোরদের হাতে। যা সরজমিনে তদন্ত করলে অসংখ্য গাছের মুথা পাওয়া যাবে।তিনি সাফারী পার্কের হরিণ, মরা বাঘের মাংস, চামড়া ও মাথার খুলি বিক্রি করে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা আদায় করেছেন পাচারকারীদের কাছ থেকে।পার্ক এলাকার সামনে দর্শনার্থীদের জন্য সরকারী ভাবে ক্যান্টিন ইজারা দেয়া হলে ও চটপটি, ডাব, ক্ষিরা সহ মৌসূমী ফলের ভাসমান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসিক ৪০ হাজার টাকা আদায় করেন। এ ছাড়া ও পার্কের সামনে পূর্ণবাসিত হওয়া লোকদের কাছ থেকে ও তিনি মাসিক হারে টাকা আদায় করেন বলে অভিযোগ। এমন কি সাফারি পার্ক সংলগ্ন এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্বসানের জায়গা দখল করে দিবে বলে তাদের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।বর্তমানে পার্কের কর্মচারীরা তার হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। কেউ প্রতিবাদ করার সাহষ ও পাচ্ছেনা। উপরোক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২২ অক্টোবর বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য অঞ্চলের অফিস আদেশ নং-৫৪, পি পি নং-২২.০১.০০০০.১০১.০৫.২০১৪.৩১১২ মূলে বন্যপ্রাণী অঞ্চল ঢাকায় বদলী করা হয়। কিন্তু তিনি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এখনো পর্যন্ত সাফারী পার্কে বহালতরবিয়তে চাকুরি করে যাচ্ছেন।
অভিযোগ উঠেছে বণ্যপ্রাণী ব্যাবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগ চট্রগ্রামের একাধিক ডিএফও বদলী হলে ও তিনি তাদের বদৌলতে এখনো রয়ে গেছেনে। বর্তমান ডিএফও গোলাম মওলা নাকি তার অনিয়ম, দূর্নীতি ও বিভিন্ন অপরাধ ধামাচাপা দিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে পার্কের রক্ষনাবেক্ষন ভেঙ্গে পড়া নিয়ে ও বঙ্গবন্দুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে সচেতন œ মহলের মাঝে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে ।
এ ব্যাপারে জানতে বণ্যপ্রাণী ব্যাবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম মওলার সাথে একাধিক বার ফোনে যোগাযোগ করে ও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।
এদিকে সাফারী পার্কের ফরেষ্টার মাজহারুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান অভিযোগ গুলো সথ্য নয়।আমি নিজ ইচ্ছায় বদলী হতে চাইলে ও কতৃপক্ষ আমাকে ছাড়ছেনা। ####
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।