নাইক্ষ্যংছড়িতে গত ২৫ ও ২৬ জুন টানা দুই দিনের ভারী বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্থ বন্যার্ত পাচঁ ইউনিয়নের মানুষের মাঝে ত্রাণের চাল, ঢেউটিন ও নগদ টাকা বিতরণ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও বান্দরবান আসনের সাংসদ বীর বাহাদুর উশৈসিং। শনিবার সকাল ১১টায় তিনি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদস্থ উম্মুক্ত মঞ্চে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন- সম্প্রতি নাইক্ষ্যংছড়িসহ জেলার প্রায় ৬টি উপজেলায় কমবেশি বন্যা হয়েছে। যার কারনে প্রতিটা মুহুর্ত জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি খোদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং ত্রাণ মন্ত্রী দূর্গত মানুষের খোজ নিচ্ছেন। যার কারনে কয়েক ধাপে বরাদ্দও দেওয়া হয়েছে দূর্গত এলাকায়। বাংলাদেশ এখন ভিক্ষুকের জাতি নয়, আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। দূর্যোগ হওয়ার কারনে প্রধানমন্ত্রী বন্যাদূর্গত এলাকার মানুষের মাঝে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন- নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় বর্তমানে সামান্য বৃষ্টি হলেই ছড়া, খাল, নদীর পানিতে বন্যা কবলিত হয়ে পড়ছে। তাই মানুষেরও কিছু হুশ থাকা প্রয়োজন। আমরা প্রতিনিয়ত গাছ-পাহাড় কাটছি ফলে এ দূর্যোগের সৃষ্টি হচ্ছে। একটু সচেতন হলে বর্ষা মৌসুমে প্রাণহানি হওয়ার কথা নয়। দূর্যোগ কালীন সময়ে তিনি উপরের মহলের নির্দেশনার দিকে তাকিয়ে না থেকে উপজেলা পরিষদ, প্রশাসন ও প্রত্যেক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাইকে পাহাড় ধ্বস বিষয়ে সচেতনতা বিষয়ক ঘোষনা দেওয়ার আহ্বান জানান। বীর বাহাদুর আরো বলেন- বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা নয় শুধু, বর্ষা শেষ হলেই নতুন নতুন রাস্তা, ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। জনগণকে হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন বীর বাহাদুর যতদিন বেচে থাকবে এ অঞ্চলের মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকবে বলে আশ্বাস দেন।
ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বান্দরবান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন- বর্তমানে দেশ অনেক দূর এগিয়েছে। যার কারনে বন্যা পরবর্তী সময়ে নাইক্ষ্যংছড়িতে ১৮২ মেট্টিকটন চাল ও ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরপর ত্রাণের আর প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। এবার ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাÑঘাটসহ কৃষি উন্নয়নে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপও যদি ত্রাণের প্রয়োজন দেখা দিলে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন। এসময় তিনি দূর্যোগ কাটিয়ে উঠে আগামীতে কর্মতৎপরতার মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন- গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে বান্দরবান একটা বিছিন্ন দ্বীপে পরিণত হয়। আর বন্যা পরবর্তী মাননীয় প্রতিমন্ত্রী দূর্গত এলাকার মানুষের সার্বক্ষনিক খোজ রেখেছেন। এমন একজন জনদরদী এমপি পাওয়া বান্দরবানবাসীর সত্যিই সৌভাগ্য।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফাইল আহামদ বলেন- মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এর মাধ্যমে সরকারের প্রদত্ত ত্রাণ সামগ্রী ইতিমধ্যে প্রত্যেক ইউনিয়নে বিতরণ করা হচ্ছে। সরকারী ছুটির দিনসহ হাজারো ব্যস্থতার মাঝে প্রতিমন্ত্রী সার্বক্ষনিক দূর্গত মানুষের পাশে থাকায় উপজেলাবাসীর পক্ষে তিনি সাধুবাদ জানান। এসময় তিনি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ অভ্যান্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য জেলা প্রশাসনসহ প্রতিমন্ত্রীর সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
অনুষ্ঠান শেষে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ৩১০জনের মাঝে ১০ কেজি করে চাউল, ৪৩জনকে ঢেউটিন ও নগদ ৩হাজার টাকা এবং প্রতিমন্ত্রীর বিশেষ ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্থ সাত পরিবারকে নগদ ৫হাজার টাকা করে বিতরণ করেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বেসরকারী প্রতিষ্ঠান মানবকল্যান সংস্থা থেকে ১৫০জনকে খাদ্য সামগ্রী এবং রিক্সা শ্রমিক লীগের পক্ষে ১৫০জনকে লুঙ্গি বিতরণ করা হয়।
ছাত্রলীগ সভাপতি চোচু মং মার্মার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক কাজী মুজিবুর রহমান, জেলা পরিষদ সদস্য লক্ষী পদ দাশ, ক্যাউচিং চাক, কাঞ্চন তংচঙ্গ্যা, জহির উদ্দিন, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু শাফায়াৎ মুহাম্মদ শাহে দুল ইসলাম, থানা অফিসার ইনচার্জ মো: আবুল খায়ের, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা বেবী ইসলাম, মোজাম্মেল হক বাহাদুর, আবদুর রহিম চৌধুরী, লামা আওয়ামীলীগ নেতা মো: ইসমাইল, নাইক্ষ্যংছড়ি আওয়ামীলীগ সভাপতি আবু তাহের কোম্পানী, এমপি প্রতিনিধি আলহাজ্ব খায়রুল বাশার, ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবু সৈয়দ, দোছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রশিদ আহামদ, সদর ইউনিয়ন আওয়ামলীগ সভাপতি তারেক রহমান, যুবলীগ সভাপতি মো: জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।