মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের একাংশের বাংলাদেশে অবস্থান করার বৈধ শরণার্থী স্বীকৃতি থাকলেও অনেকেরই সেই অধিকার নেই। সে কারণেই এই পালিয়ে আসা দুর্গত মানুষদের একাংশ জাতিসংঘ ঘোষিত শরণার্থী অধিকারের আওতায় পড়লেও অন্যরা তা পড়ছেন না। শিকার হচ্ছেন বৈষম্যের। এই বৈষম্য দূর করে সব রোহিঙ্গাকে সমান চোখে দেখার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির শরণার্থী বিষয়ক কমিশন ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদের মধ্যে সমানাধিকার প্রতিষ্ঠার এই আহ্বান জানান।
বিভিন্ন সময়ে বহু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। ইউএনএইচসিআর তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ওই রোহিঙ্গাদের তিনটি বিভাগে ভাগ করেছে। প্রথম বিভাগে রয়েছেন ১৯৯০-এর দশকে আসা রোহিঙ্গারা। ওই সময়ে আসা ৩৩ হাজার রোহিঙ্গাকে শরণার্থী মর্যাদা দেওয়া হয়। তাদের শরণার্থী শিবিরে থাকা, খাওয়াসহ শিক্ষা সহায়তাও দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় বিভাগে রয়েছেন ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে আসা প্রায় ৭০ হাজার নতুন রোহিঙ্গা শরণার্থী। তাদের নাম নথিভুক্ত করা হলেও শরণার্থী স্বীকৃতি মেলেনি। তাদের মাঝেমাঝে কিছু মানবিক সহযোগিতা দেওয়া হলেও, শরণার্থীদের পাপ্য সুযোগ তারা পাচ্ছেন না বলে দাবি ইউএনএইচসিআরের।
তৃতীয় বিভাগে রয়েছেন ১৯৯০-এর দশক ও ২০১৬ সালের মধ্যবর্তী সময়ে আসা রোহিঙ্গারা। তাদের সংখ্যাটা দুই লাখ থেকে পাঁচ লাখ। তাদের শরণার্থী শিবিরে থাকার অধিকার নেই। নেই কোনও মানবিক সহায়তা। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ওই রোহিঙ্গারা গ্রামের অদূরে বসবাস করছেন।
ইউএনএইচসিআরের বাংলাদেশ প্রতিনিধি শিনজি কুবো জানান, ‘এখানকার অবস্থা স্থিতিশীল নয়। ওই রোহিঙ্গাদের যারা যখনই এসে থাকুক না কেন, তাদের সবারই কিছু চাহিদা আছে। তাদের সবার জন্যই একই প্রত্রিয়ায় সুরক্ষা ও সহায়তার ব্যবস্থা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সহযোগীদের সঙ্গে যৌথ শনাক্তকরণের কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছি। আশা করি এই প্রক্রিয়া এগিয়ে গেলে আগে থেকে এখানে অবস্থান করা এবং নতুন আসা রোহিঙ্গারা সমান সহায়তা পাবেন।’
শিনজো কুবো আশা করছেন অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে অবস্থান করা সকল রোহিঙ্গা বৈধতা পাবেন। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য রোহিঙ্গাদের বৈধ কাগজপত্র ও পূর্ণ সম্মানের সঙ্গে তাদের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করাটা জরুরি। আশা করি, শিগগিরই তা করা সম্ভব হবে।’
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।