ইমাম খাইর, কক্সবাজারঃ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মানুষকে বাঁচাতে কক্সবাজারে জেলা লকডাইন ঘোষণা করা হয়েছে। সেনা বাহিনী, র্যাব, পুলিশসহ প্রশাসনিক কড়াকড়িতে মূল সড়ক ফাঁকা। প্রয়োজন না থাকলে মানুষ তেমন একটা ঘর থেকে বের হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, চিকিৎসক দল আর গণমাধ্যমের যানবাহনের বাইরে গাড়ির দেখা মেলা ভার। সড়ক প্রায় জনমানবশূন্য। তবে এর ভিন্ন দৃশ্য গ্রামীণ জনপদের। করোনা ভাইরাসের আতংক তারা পাত্তাই দিচ্ছে না। করোনা কি? জানে না অনেকে। সামাজিক দূরত্ব, হোম কোয়ারেন্টাইন শূনেও নি। চলছে সেই আগের মতো করে।
একই দৃশ্য কক্সবাজার শহরের অলি-গলির। দোনাপাটগুলোতে সকাল-সন্ধ্যা জমজমাট আড্ডা। খোলা রয়েছে চা-পানের দোকান, খাবারের হোটেল। বাইরে লকডাউন, ভেতরে দলবেধে ক্যারম খেলতে দেখা গেছে অনেক এলাকায়। চলছে ক্রিকেট, ফুটবলের আসর। সংক্রমণের ভয়কে ‘জয়’ করে তারা ঘুরে ফিরছেন এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত, বেশ জমিয়ে দিচ্ছেন আড্ডা। তাদের এমন কর্মকাণ্ড হুমকির মুখে সর্বস্তরের মানুষ।
গত কয়েকদিন কক্সবাজার শহরের ঘোনারপাড়া, বৈদ্যঘোনা, ইছুলুরঘোনা, পাহাড়তলি, ইসলাম নগর, টেকপাড়া চৌমুহনি, বাজারঘাটা, বড়বাজার, ঝাউতলা, গাড়িরমাঠ, টেকপাড়া এলাকা ঘুরে এসব দৃশ্য নজরে এসেছে।
খোঁজখবর নেয়া হয় চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী, সদরের ঈদগাঁও, উখিয়াসহ জেলার বিভিন্ন এলাকার। সেখানকার অধিকাংশ মানুষের তেমনটা অনুভূতি জাগ্রত হয় নি। কক্সবাজার জেলা ‘লকডাউন’ করার ঘোষণাতেও জাগ্রহ হয় নি সাধারণ মানুষ।
কক্সবাজার শহরের ৯নং ওয়ার্ড ঘোনারপাড়ার বাসিন্দা সংবাদকর্মী সিরাজুল ইসলাম জানিেেছন, প্রশাসনের জারি করা ‘লক ডাউন’ কি বুঝেনি এখানকার বাসিন্দারা। কোন ভাবেই হোম কোয়ারেন্টিন মানছে না। প্রতিদিন দোকানে কিংবা মোডে মোডে শত মানুষের সমাগম চোখে পড়ে।
তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে করোনা ভাইরাসে নানান সচেতনতামূলক প্রচারণা করছে জেলা প্রশাসন। চলছে দোকানে দোকানে বসে আড্ডা-খোশগল্প। ইজিলোড, বিকাশের দোকানগুলোতে প্রচুর ভীড়। অধিকাংশ মানুষের মুখে নেই মাস্ক বা ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
মানুষকে সচেতন করতে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট জরুরী মনে করেন সিরাজুল ইসলাম।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন, জনস্বার্থে বুধবার (৮ এপ্রিল) থেকে কক্সবাজারকে লকডাউন করা হলো। এখন থেকে কক্সবাজার জেলায় সকল আগমন ও বহির্গমন নিষিদ্ধ। তিনি বলেন, মানুষের সার্বিক বিষয়টি বিবেচনা করে প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সবাইকে চলাচল করতে হবে। আযথা আড্ডা বা ঘোরাঘুরি যাতে কেউ না করে। খুব বেশী প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া উচিৎ হবে না। জেলা প্রশাসনের এই আদেশ অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।