জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে এই তিনটি শর্ত নিয়ে সৃষ্টিকর্তা মানুষকে পৃথিবীতে পাঠান। প্রত্যেক মানুষকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতেই হবে। আর মৃত্যুর পর মানুষ যে জগতে প্রবেশ করে তার নাম কবর। তাই আগে ভাগেই নিজেই মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত ও নিজের কবর জীবিত থাকতে নিজেই তৈরী করে রাখলেন ৯৪ বছর বয়স্ক নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের হলদ্যাশিয়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত আজিমুদ্দিনের পুত্র আলহাজ্ব মিয়া হোসেন ভান্ডারী। তবে এলাকার লোকজনের কাছে তিনি মিয়াছন হাজি বলে বেশ পরিচিত। তিনি কক্সবাজার সদর উপজেলা ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ফুলছড়ি নামক গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। পিতা: আজিমুদ্দিন ও মাতা: ওমর খাতুন ফুলছড়িতেই মৃত্যু বরণ করেন। স্বাধীনতার পর তিনি স্বপরিবারে বাইশারী ইউনিয়নের হলদ্যাশিয়া গ্রামে জমি ক্রয় করে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন। দীর্ঘকাল যাবৎ তিনি লবন ও চিংড়ির ব্যবস্যা এবং পরবর্তীতে কৃষি কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন। ২৩ এপ্রিল প্রাপ্ত তথ্যে এই প্রতিবেদক সরজমিনে গিয়ে মিয়া হোসেন ভান্ডারীকে নিজ কবরের পার্শ্বে বসে থাকা অবস্থায় দেখতে পান এবং প্রতিবেদক তার সাথে আলাপকালে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং সংবাদকর্মী পরিচয় পেয়ে তার মনের অনেক অজানা কাহিনী তুলে ধরেন। শৈশবকাল থেকে মিয়া হোসেন ভান্ডারী বৃটিশ যুদ্ধ ও স্বাধীনতা যুদ্ধের বাস্তব চিত্রের কথা তার মনে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, তাঁর ছেলে সরকারী কাজী, স্কুল শিক্ষক, পশু ডাক্তার, হস্ত শিল্পী, আর্টম্যান এবং এক মেয়ে শিক্ষিকাসহ নাতি-নাতনী রয়েছে। তাঁর নিজস্ব সম্পদ থেকে জীবিত অবস্থায় এলাকায় একটি মসজিদ নির্মান ও সমাজ সেবা মুলক বিভিন্ন কাজে দান করেছেন। মিয়া হোসেন ভান্ডারীর বয়স যখন চল্লিশ পার হয়, তখন তিনি মহেশখালী উপজেলার ইছাপুরী ভান্ডারীর কাছ থেকে বায়াত গ্রহন করেন ও পরে তিনি ভান্ডারী হুজুরের খলিফা হিসেবে স্বীকৃতি পান এবং প্রতি বছর ভান্ডারী হুজুরের দরবার শরীফ জেয়ারত, দোয়া মাহফিল ও ওরশ মোবারকে অংশ গ্রহন করেন। ভান্ডারী হুজুরের নির্দেশেই জীবিত থাকা অবস্থায় নিজের কবর তৈরী করে রেখেছেন বলে জানান। তিনি কবরের চার পার্শ্বে টিনসেট ঘর নির্মান করে বর্তমানে সেখানেই জিকির করেন। জীবিত অবস্থায় নিজের কবর নিজেই তৈরী করার খবর এলাকায় জানাজনি হলে এলাকাবাসী এক নজর দেখার জন্য ভীড় জমান মিয়া হোসেনের তৈরী কবরে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।